সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের রক্তাক্ত নাইজেরিয়া (Nigeria)। লাগাতার দুষ্কৃতী হামলায় উত্তর-পশ্চিম নাইজেরিয়ায় মৃত্যু হল অন্তত ২০০ জনের। এখনও নিখোঁজ বহু। সপ্তাহের শুরুতেই দুষ্কৃতীদের ঘাঁটির দখল নিয়েছিল সেনা-পুলিশ। তারই প্রত্যাঘাত হিসেবে নিরীহ গ্রামবাসীদের হত্যা করল দুষ্কৃতীরা। যদিও হত্যালীলার নৃশংসতার কথা স্বীকার করেনি প্রশাসন।
বহুদিন ধরেই উত্তর-পশ্চিম এবং মধ্য নাইজেরিয়া দস্যুদের ঘাঁটি। লুটপাট, ধর্ষণ, অপহরণ, খুন-জখম রোজকার ঘটনা। তবে ২০২০ থেকে এধরনের ঘটনার সংখ্যা আরও বেড়েছে। অভিযোগ, নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুহাম্মান্দু বুহারি ( Muhammadu Buhari) দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যর্থ। আর সেই সুযোগই নিয়েছে দস্যুরা।
[আরও পড়ুন: মেলেনি প্রথম মেসেজের রিপ্লাই, ১১ বছর পর সেই ‘স্বপ্নসুন্দরীকে’ই বিয়ে করলেন চিকিৎসক]
সরকারি সূত্রের খবর, জানুয়ারির শুরু থেকে দস্যুদের ঘাঁটি দখলের লড়াই চলছিল। আকাশপথে সে সমস্ত এলাকায় হামলা চালিয়েছিল সেনাবাহিনী। সেই হামলায় একাধিক দুষ্কৃতীকে নিকেশও করা হয়। তারই বদলা নিতে উত্তর পশ্চিম নাইজেরিয়ার জামফারা প্রদেশের একের পর এক গ্রামে হানা দেয় দস্যুদল। একাধিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, শনিবার বাইকে চেপে প্রায় ৩০০ জন জামফারা প্রদেশের পর পর ৮টি গ্রামে হানা দেয়।নির্বিচারে গুলি চালাতে শুরু করে তারা। নৃশংস হত্যালীলা থেকে পার পায়নি কেউই। যুবক-যুবতী থেকে শিশু-বৃদ্ধ, সকলকে হত্যা করে তারা। অন্য আরেকটি ঘটনায় আনকা প্রদেশে ৩০ জনকে খুন করেছে দস্যুরা।
যদিও ২০০ জনের মৃত্যুর কথা মানতে নারাজ সে দেশের সরকার। তাদের দাবি, প্রত্যাঘাতে ৫৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। যদিও স্থানীয়দের দাবি, সংখ্যা এর অন্তত ৪ গুণ। এদিকে শনিবার ওই গ্রামগুলির দখল নিয়েছে সেনা। জানা গিয়েছে, গণকবর তাদের সমাধিস্থ করা হয়। এদিকে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, দমন অভিযান চলছে। সেনাবাহিনী দস্যুদের একাধিক হাতিয়ার, সম্পত্তি দখল করেছে। আমজনতাকে রক্ষা করতে সেনা ভবিষ্যতেও অভিযান চালাবে।
[আরও পড়ুন: WhatsApp-এ টিকার বুকিং থেকে ডক্টর অন হুইলস, অভিষেকের বৈঠকের পরই ডায়মন্ড হারবারে চালু হতে চলেছে পরিষেবা]
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরেই নাইজেরিয়ার উত্তরভাগে অশান্ত। এই এলাকায় একাধিক গ্যাংয়ের উপস্থিতি এবং বোকো হারাম জঙ্গি গোষ্ঠীর কারণে এই ধরনের ঘটনা প্রায়শই ঘটে। এই বোকো হারাম জঙ্গি গোষ্ঠী নাক আইএস জঙ্গিদের সঙ্গেও হাত মিলিয়েছে। ফলে চিন্তা আরও বেড়েছে নাইজেরিয়ার সরকারের। রাষ্ট্রসংঘ (UN) -এর প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ সাল থেকে উত্তর-পূর্ব নাইজেরিয়া (Nigeria)-সহ প্রতিবেশী দেশ নাইজার, চাদ ও ক্যামেরুনে একাধিক জঙ্গি হামলা চালিয়েছে ইসলামিক জঙ্গি সংগঠন বোকো হারাম। এর মধ্যে শুধু নাইজেরিয়াতেই ৩০ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করেছে। তাদের তাণ্ডবে ঘর ছাড়া হয়েছেন আরও ৩০ লক্ষ মানুষ।