ধীমান রায়, কাটোয়া: গণতান্ত্রে ভোটযুদ্ধ বড়ই বৈচিত্র্যে ভরা। আর ভারতের মতো সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশে এই লড়াই তো আকর্ষণীয় হবে, এ আর নতুন কথা কী? চব্বিশের লোকসভায় বাংলার (2024 Lok Sabha Election) নির্বাচনী লড়াই অন্তত তেমনই রঙিন হতে চলেছে নিঃসন্দেহে। তৃণমূলের সদ্যপ্রকাশিত প্রার্থীতালিকায় অন্তত তেমনই ইঙ্গিত। বর্ধমান পূর্ব থেকে তৃণমূল (TMC) প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন ডাঃ শর্মিলা সরকার। সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক প্রেক্ষাপট থেকে আসা এই মনোবিদকে নিয়ে ইতিমধ্যেই জেলায় চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে।
পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার (Katwa) অগ্রদ্বীপের বাসিন্দা শর্মিলার খ্যাতি মনোবিদ (Psychologist) হিসেবে। এই মুহূর্তে তিনি দমদমের বাসিন্দা। কলকাতার এনআরএস হাসপাতাল, আর জি কর হাসপাতালে সুনামের সঙ্গে চিকিৎসক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন শর্মিলা সরকার। বছর চুয়াল্লিশের শর্মিলাদেবীর বিয়ে হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার চিকিৎসক (Doctor) সুদীপ ঘোষের সঙ্গে। তিনি চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ। রয়েছে এক মেয়ে। এমনই আপাতদৃষ্টিতে সাদামাটা অথচ সেবামূলক কাজে জড়িত ব্যক্তিত্বকে ভোটের ময়দানে নামিয়েছে বাংলার শাসকদল।
[আরও পড়ুন: মুখ পোড়ার ভয়? ব্রিগেডে পালটা সভা চায় না বিজেপি]
কীভাবে তাঁর সঙ্গে এই ঘাসফুল শিবিরের যোগ? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে কিছুটা অবাক হতে হয়। অগ্রদ্বীপে থাকাকালীন অথবা কলকাতার কর্মজীবনে কখনওই রাজনীতির সঙ্গে কোনও সম্পর্ক ছিল না শর্মিলার। যদিও দিদি জয়া সরকার সক্রিয় রাজনৈতিক কর্মী। তিনি ছিলেন পঞ্চায়েতের প্রধান (Panchayat Chief)। কিন্তু বোনকে কখনও রাজনীতির ময়দানে তিনি টানেননি। এদিকে, তৃণমূলের তরফেও সর্বজনগৃহীত জনপ্রিয় স্বচ্ছ ভাবমূর্তির প্রার্থী খোঁজা হচ্ছিল। অনেক খোঁজখবর, রিসার্চের পর ডাঃ শর্মিলা সরকারকে প্রার্থী হিসেবে পছন্দ হয় নেতৃত্বে। তাতে সিলমোহর দিয়েছে শীর্ষ নেতৃত্ব। এছাড়া সেই হিসেবে পূর্ব বর্ধমানের সঙ্গে তাঁর নাড়ির যোগ। ফলে এলাকায় চেনা মুখ। সব দিক বিবেচনা করেই শর্মিলাকে নিজের মাটিতে ভোটযুদ্ধে নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যের শাসকদল।
[আরও পড়ুন: সন্দেশখালিতে CBI-ই বহাল, ‘শাহজাহানকে গ্রেপ্তারে এত দেরি কেন’, রাজ্যকে ‘সুপ্রিম’ প্রশ্ন]
এতদিন মানুষের মনের নানা জটিলতা বুঝে তার সমাধানের রাস্তা দেখিয়েছেন ডাঃ শর্মিলা সরকার। এবার কি আমজনতার মন জয় করতে পারবেন? এই প্রশ্ন তো উঠছেই। যদিও রবিবারের ব্রিগেডে তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা হওয়ার পর নতুন লড়াইয়ে ঝাঁপাতে তিনি যে প্রস্তুত, তা শরীরী ভাষাতেই স্পষ্ট। এখনও বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রে প্রার্থী ঘোষণা করেনি বিজেপি। তা জানার পরই বোঝা যাবে শর্মিলার লড়াই কতটা কঠিন হবে। মানুষজন কার দিকে রায় দেন, সেটাই দেখার।