চঞ্চল প্রধান, হলদিয়া: ভোটের ঠিক আগে বিজেপি কর্মীর খুনের ঘটনায় উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতির অন্যতম হাইভোল্টেজ কেন্দ্র নন্দীগ্রাম। এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকায় প্রশ্ন তুলে নন্দীগ্রামের আইসি-কে সাসপেন্ড করার দাবি তুললেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বৃহস্পতিবার নন্দীগ্রাম থানায় ঢুকে রীতিমতো দাপট দেখালেন শুভেন্দু। তাঁর অভিযোগ, আইসি (IC) 'খুনি'দের সঙ্গে মিটিং করেছেন, তাঁকে 'মজা দেখাবেন' বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে দাবি তোলেন, অবিলম্বে সাসপেন্ড করা উচিত আইসিকে। এই মর্মে তিনি নন্দীগ্রাম থানায় আবেদনপত্রও লিখে আসেন। এদিকে, বিজেপি কর্মীর খুনের পরিপ্রেক্ষিতে নন্দীগ্রামের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির অভিযোগ তুলে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি পাঠাল বিজেপি। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মূল অভিযুক্ত হিসেবে দেবকুমার রায় নামে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতিকে আটক করা হয়েছে।
নন্দীগ্রাম নিয়ে নির্বাচন কমিশনে চিঠি বিজেপির।
বুধবার রাতে এলাকায় গন্ডগোলের মাঝে পড়ে মৃত্যু হয়েছে নন্দীগ্রামের (Nandigram) বিজেপি কর্মী রথীবালা আড়ির। গুরুতর আহত তাঁর ছেলে সঞ্জয়ও। তা নিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই তপ্ত নন্দীগ্রাম। আগামী ২৫ মে, শনিবার নন্দীগ্রাম তথা তমলুক লোকসভা কেন্দ্রে লোকসভা ভোট (2024 Lok Sabha Election)। তার ঠিক আগে বিজেপি (BJP) কর্মীর খুন স্বাভাবিকভাবেই ভোট পরিস্থিতির পারদ চড়িয়েছে। সকাল থেকেই রাস্তা অবরোধ করে, টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদে নামেন বিজেপি কর্মীরা।
[আরও পড়ুন: বর-কনের প্রকাশ্য চুম্বনে আপত্তি, রণক্ষেত্র যোগীরাজ্যের বিয়েবাড়ি, হাসপাতালে দুপক্ষের ৬ জন]
বিকেলের দিকে পরিস্থিতি আরও অশান্ত হয়ে ওঠে। নন্দীগ্রাম থানায় ঢুকে রীতিমতো তাণ্ডব দেখান শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) ও তাঁর অনুগামীরা। থানায় ঢোকার আগে সেখানে দাঁড়ানো কেন্দ্রীয় বাহিনীর কয়েকজন জওয়ানের সঙ্গে বচসায় জড়ান শুভেন্দু। এর পর থানায় ঢুকে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীকে তিনি বলেন, ‘‘খুনিরা থানায় এসেছিল। যারা খুন করেছে, মাকে খুন করেছে। রথীবালা আড়ি শুধু সঞ্জয় আড়ির মা নন, তিনি আমার মা। খুনিদের সঙ্গে এখনই মিটিং করেছেন। আমি জানতে চাই, খুনির সঙ্গে এখনই মিটিং করেছেন কেন? মজা দেখাব আইসিকে!’’ এধরনের কথা বলে রীতিমতো হম্বিতম্বি করতে থাকেন। থানায় বসে অভিযোগপত্র লিখে জমা দেন। বেরিয়ে আবার হাসপাতালে যান আহতদের দেখতে।
[আরও পড়ুন: বুকে পদ্মের ব্যাজ, নির্বাচনে হস্তক্ষেপ! এবার রাজ্যপালের বিরুদ্ধে কমিশনে তৃণমূল]
নন্দীগ্রামে ভোটের ঠিক আগে এই রাজনৈতিক হত্যার ঘটনায় কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছে বিজেপি। তাদের দাবি, নন্দীগ্রামে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়েছে। এবিষয়ে হস্তক্ষেপ করুক কমিশন। অন্যদিকে, তৃণমূল (TMC) নেতা কুণাল ঘোষ, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়দের পালটা তোপ, ভোটের আগে নন্দীগ্রামকে অশান্ত করার ছক কষেছে বিজেপির। তাদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে এই হত্যাকাণ্ড।
দেখুন ভিডিও: