সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে বিশ্বের কাছে সবথেকে বড় চিন্তার বিষয় হল পরিবেশ দূষণ। যার মধ্যে অন্যতম হল বায়ুদূষণ। এর তীব্রতা এতটাই প্রতিনিয়ত মারা যাচ্ছেন বহু মানুষ। বায়ুদূষণের থাবা থেকে মুক্তি পায়নি ভারতও। এহেন পরিস্থিতিতে উদ্বেগ বাড়িয়ে এক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, বিশ্বের তিরিশটি সবথেকে দূষিত শহরের মধ্যে ২২টি ভারতেরই।
[আরও পড়ুন: পদত্যাগ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রধান উপদেষ্টা! কারণ ঘিরে জল্পনা]
মঙ্গলবার বিশ্বে বায়ুদূষণ নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে ‘IQAir’ নামের সুইজারল্যান্ডের একটি সংস্থা। ‘ওয়ার্ল্ড এয়ার কোয়ালিটি রিপোর্ট ২০২০’ শীর্ষক রিপোর্টে ভারতে বায়ুদূষণের অত্যন্ত ভয়াবহ ছবি ফুটে উঠেছে। ১০৬টি দেশের উপর সমীক্ষা চালিয়ে রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিশ্বের তিরিশটি সবথেকে দূষিত শহরের মধ্যে দিল্লি-সহ ২২টি ভারতেরই। শহরগুলি হল–গাজিয়াবাদ, বুলন্দশহর, বিসরাখ জালালপুর, নয়ডা, গ্রেটার নয়ডা, কানপুর, লখনউ, মিরাঠ, আগ্রা, মুজফ্ফরনগর, ভিওয়ারি, ফরিদাবাদ, জিন্দ, হিসার, ফতেহাবাদ, বান্ধওয়ারি, গুরুগ্রাম, যমুনানগর, রোহতক, দারুহেরা ও মুজফ্ফরপুর। শুধু তাই নয়, বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত রাজধানীর তালিকায় শীর্ষে রয়েছে দিল্লি। যদিও বিগত বছরের তুলনায় ওই শহরে বাযুদূষণের পরিমাণ প্রায় ১৫ শতাংশ কমেছে। ভারতে বাযুদূষণের সবথেকে বড় কারণ হিসেবে যানবহন থেকে নির্গত ধোঁয়াকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এছাড়া, বিদ্যুত তৈরি, কলকারখানায় কাজ, চাষবাস ইত্যাদীও দূষণের অন্যতম কারণ। এদিকে, ‘IQAir’-এর রিপোর্টে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরগুলির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে চিনের শিনজিয়াং।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে ‘ল্যান্সেট’ প্রকাশিত এক রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতে বায়ুদূষণে প্রতি মিনিটে দু’জন করে মানুষ মারা যাচ্ছেন। অর্থাৎ ফি-বছর সংখ্যাটা কয়েক লক্ষ ছাড়িয়ে যাচ্ছে। বায়ুদূষণের কারণেই জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটছে। তাই সবার আগে এগুলির মোকাবিলা করতে হবে। ওই রিপোর্টে আরও বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পৃথিবীর পরিবেশের যেমন ক্ষতি হচ্ছে, তেমনি প্রভাব পড়ছে মানুষের শরীরেও। অন্যান্য দূষণগুলির তুলনায় বায়ুদূষণই সবচেয়ে ক্ষতিকারক। আর এর ফলেই অকালে মারা যাচ্ছেন বহু মানুষ। মূলত কয়লাচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির কারণেই বায়ুদূষণ দিন দিন বেড়ে চলেছে। এছাড়া রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, পৃথিবীতে প্রতি দিন গড়ে ১৮ হাজার করে মানুষ এই বায়ুদূষণের কারণেই মারা যাচ্ছে। ফলে এক বছরে আয়ের দিক থেকে ২২৫ বিলিয়ন ডলার ক্ষতিও হচ্ছে।