সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচতেই ওঁরা আশ্রয় নিয়েছিলেন হাসপাতালে। আশা ছিল, ‘ঈশ্বর’ চিকিৎসকদের হাতযশে মারণ ভাইরাস করোনাকে হারিয়ে জীবনযুদ্ধে জিতে যাবেন। কিন্তু সেই আশ্রয়স্থল হাসপাতালেই জীবন্ত দগ্ধ হলেন ২৩ করোনা (Corona Virus) রোগী। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন কমপক্ষে ৫০ জন। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে বাগদাদ প্রশাসন। স্থানীয় সময় রবিবার গভীর রাতে কোভিড হাসপাতালের অক্সিজেন সরবরাহকারী ইউনিটে বিস্ফোরণ হয়। যার জেরে দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে হাসপাতালে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট বা আইসিএউ।
ইরাকে ইতিমধ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১০ লক্ষ ছাড়িয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে যু্দ্ধবিধ্বস্ত এই দেশে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো একেবারে ভেঙে পড়েছে। এই খাতে বিনিয়োগ একেবারে তলানিতে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই অতিমারীকে সামাল দিতে কার্যত ব্যর্থ হয়েছে এই দেশ। দিনের পর দিন কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে সেথানে। স্থানীয় সূত্রে খবর, রাজধানী বাগদাদের ইবন-অল-খাতিব হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন অন্তত ১২০ জন কোভিড আক্রান্ত। ছিলেন তাঁদের পরিবারের সদস্যরাও। রবিবার মাঝরাতে বিস্ফোরণে কেঁপে ওযে হাসপাতাল চত্বর। মুহূর্তে আগুন ধরে যায় আইসিইউ-তে। কালো ধোঁয়া ঢেকে যায় গোটা চত্বর।
[আরও পড়ুন : আগে মার্কিনীদের টিকা, তারপরই ভ্যাকসিনের কাঁচামাল ভারতে রপ্তানি, সিদ্ধান্ত বাইডেনের]
দমকলবাহিনী পৌঁছনোর আগেই বিষাক্ত ধোঁয়ার সঙ্গে লড়াই করতে করতে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন কমপক্ষে ২৩ জন। ৫০ জনকে ওই ওয়ার্ড থেকে বের করে আনা সম্ভব হয়। যদিও তাঁদের অবস্থাও সংকটজনক। রোগীর পরিবারের সদস্যরা ওই বিল্ডিং থেক লাফ দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। অনেকেই জখম হয়েছেন। দীর্ঘক্ষণের চেষ্টা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন দমকলবাহিনীর সদস্যরা।
এদিকে এই বিস্ফোরণে ঘটনার পিছনে কর্মীদের গাফিলতিকেই দায়ি করছে সরকার। ঘটনার খবর পেয়ে ইরাকের স্বাস্থ্যমন্ত্রক বাগদাদের গর্ভনর মহম্মদ জাবেরকে ডেকে পাঠায়। ঘটনার কারণ খুঁজতে তদন্ত কমিশন গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দোষীদের কড়া শাস্তির বিধানও দিয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক। সূ্ত্রের খবর, এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের জেরে ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মুস্তাফা-আল-কাদেমি স্বাস্থ্যমন্ত্রী হাসান-আল-তামিমিকে বরখাস্ত করেছেন।