সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বধূ কি ভার্জিন? প্রথম মিলনের রাতেই নেওয়া হয় সে সামাজিক পরীক্ষা। বিফল হলে কন্যার কপালে জোটে অশেষ লাঞ্ছনা। এই কুপ্রথা রদ করতেই উদ্যোগী হয়েছিলেন কয়েকজন। সোশ্যাল মিডিয়ার মতো প্ল্যাটফর্মকে কাজে লাগিয়ে এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছিলেন তাঁরা। তার জেরেই বেধড়ক মার খেতে হল তিন যুবককে।
[ বধূ কি ‘ভার্জিন’? সামাজিক অগ্নিপরীক্ষা বন্ধের দাবিতে প্রতিবাদে যুবকরা ]
বধূটি কি ভার্জিন? প্রথম মিলনে কি ছিন্ন হয়েছে যোনিপর্দা? বেরিয়েছে রক্ত? বিছানা কি রঞ্জিত লাল রঙে? প্রশ্নগুলো আজও সমাজের কোনও কোনও অংশে বহাল তবিয়তে বিদ্যমান। কোনও কোনও সম্প্রদায়ের মধ্যে তো রীতিমতো অগ্নিপরীক্ষার ব্যবস্থা আছে। যেমন কঞ্জরভাট সম্প্রদায়। সেখানে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই তবে বধূর স্বীকৃতি মেলে। নইলে কপালে অশেষ দুঃখ। এই প্রথা রদ করতে গিয়েই বেধড়ক মার খেলেন তিন যুবক। জানা যাচ্ছে, পুরো উদ্যোগের পুরোধা ছিলেন বিবেক তামাইচেকর নামে এক যুবক। মুম্বইয়ের টাটা ইনস্টিটিউট অফ সোশ্যাল সায়েন্সের ছাত্র তিনি। গ্রুপ তৈরি করার সঙ্গে সঙ্গেই অভূতপূর্ব প্রতিক্রিয়াও পেয়েওছিলেন। এমনকী কঞ্জরভাট সম্প্রদায়ের মধ্যে থেকেই সমমনস্ক বহু যুবক এগিয়ে এসে এর প্রতিবাদ করেছিলেন। তবে উলটো ছবিটাও আছে। এই প্রথা বন্ধ করতে উদ্যোগী প্রশান্ত তামচিকর, সৌরভ মাচালে ও প্রশান্ত ইন্দ্রিকরের বিরুদ্ধে চড়াও হয় কিছু দুষ্কৃতী। চেয়ার দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। মাটিতে ফেলে চলে কিল-চড়-ঘুষি। পুলিশের কাছে এ ব্যাপারে অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে। সম্প্রদায়েরই কিছু মানুষ এই অত্যাচার চালিয়েছে বলে অভিযোগ। পুলিশ জানিয়েছে, দাঙ্গা-হাঙ্গামার একটি অভিযোগ নথিভুক্ত করা হয়েছে। ঘটনায় সন্দেহভাজন দুজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।
[ নানা রকমের কয়েন কি আদৌ নেবেন? কী জানাল আরবিআই? ]
যা নিয়ে এত হইচই কী সেই পরীক্ষা? সম্প্রদায়ের প্রথা অনুযায়ী, বিয়ের পর মিলনের প্রথম রাতে গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্দেশমতো পেতে দেওয়া হয় সাদা ধবধবে বিছানার চাদর। তার উপরই স্ত্রীর সঙ্গে সঙ্গমে রত হয় পুরুষ। পরেরদিন সকালে খুঁটিয়ে দেখা হয়। যদি বিছানার চাদরে লাল রক্তের ছোপ থাকে, তবেই নারীর যোনিপর্দা বা হাইমেন ছিন্ন হওয়া নিয়ে নিশ্চিত হয় পুরুষ সমাজ। বিয়ের আগে বধূটি যে কুমারী ছিল, তা নিয়ে আর কোনও সংশয় থাকে না। তৃপ্ত হয় পুরুষতন্ত্রের অহং। অন্যথায় নারীর কপালে জোটে অশেষ লাঞ্ছনা। ধরেই নেওয়া হয়, বিয়ের আগে অন্য পুরুষের সঙ্গে যৌন সম্পর্কে রত ছিল নারীটি। যদিও বিজ্ঞান বলছে, সাইকেল চালানো থেকে নাচার অভ্যাস-এরকম নানা কারণে অল্পবয়সে হাইমেন ছিন্ন হতে পারে। তার সঙ্গে সঙ্গমের কোনও সম্পর্ক নেই। কিন্তু প্রাচীন সংস্কারের কাছে কোথায় বিজ্ঞান। অন্ধবিশ্বাসের ঝুল পড়ে আছে পুরুষতন্ত্রের ফিউডাল দেওয়ালে। তা যে কতটা জাঁদরেল, যুবকদের মারধরের ঘটনাতেই তা ফের প্রমাণিত হল।
[ রাজনৈতিক দলকে নগদে ২০০০ টাকার বেশি চাঁদা নয়, কড়া নির্দেশ আয়কর দপ্তরের ]
The post বধূ কি ‘ভার্জিন’? পরীক্ষা বন্ধের উদ্যোগ নেওয়ায় ৩ যুবককে বেধড়ক মার appeared first on Sangbad Pratidin.