সুকুমার সরকার, ঢাকা: ফের বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শিবিরে গুলিযুদ্ধ। নিহত অন্তত ৩। মূলত আধিপত্য বিস্তারের জন্যই দুই সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর মধ্যে এই সংঘাত বলে মনে করা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে নিরাপত্তারক্ষী বাহিনী। জঙ্গিদের পাকড়াও করতে চলছে অভিযান।
জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত ২টো নাগাদ উখিয়া ১৭ নম্বর মধুরছড়া এবং জামতলি ১৫ নম্বর ক্যাম্পে এই গুলিযুদ্ধ ঘটে। যেখানে প্রাণ হারান তিনজন। জখম হয়েছেন আরও পাঁচজন। অভিযোগ, প্রায়দিনই এই এলাকায় সংঘাতের ঘটনা ঘটে। এই দুষ্কৃতীরা শরণার্থী শিবিরের তরুণীদের দেহব্যবসার পাশাপাশি বিদেশে পাচার করে। আছে মাদক কারবারও।
আধিপত্য বিস্তার, মাদক চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ ও পূর্বশত্রুতার জেরে দুই পক্ষের মধ্যে পৃথক গুলিযুদ্ধ ঘটেছে বলে জানিয়েছেন আশ্রয় শিবিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক ও অতিরিক্ত ডিআইজি মহম্মদ আমির জাফর। শিবিরের রোহিঙ্গা নেতা সইফউদ্দিন বলেন, “গতকাল রাতে ১২ জন আরসার সদস্য ১৭ নম্বর আশ্রয়শিবিরের সি-৭৭ ব্লক এলাকা থেকে আবুল কাশেমকে অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে যান। কিছুটা দূরে নেওয়ার পর তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় আশ্রয়শিবিরের সাধারণ রোহিঙ্গাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
[আরও পড়ুন: সমস্ত ওসি বদলের নির্দেশ, ভোটমুখী বাংলাদেশে বড় পদক্ষেপ নির্বাচন কমিশনের]
এর আগেও এই ধরনের হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল। এবার তিনদিনের ব্যবধানে তিনটি হত্যাকাণ্ড ঘটল। উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারীক জানান, ক্যাম্পে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এই হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হতে পারে। এর আগে গত সোমবার দুপুরে উখিয়া ৪নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি ব্লকে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি এবং রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের সংঘর্ষে মহাম্মদ ইউনুস নামের এক রোহিঙ্গা যুবক নিহত হয়।
উল্লেখ্য, মায়ানমারে সেনা অভিযানের মুখে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে (Bangladesh) পালিয়ে এসেছে ১১ লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থী। এই সুযোগে বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছে কিছু রোহিঙ্গা সন্ত্রাসবাদীও। কক্সবাজার জেলায় আশ্রিত এই রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা প্রতিনিয়ত খুন-খারাপি চালিয়ে যাচ্ছে। কক্সবাজারের উখিয়ার শরণার্থী শিবিরে ‘আধিপত্য বিস্তারকে’ কেন্দ্র করে মায়ানমারের সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধেছে।