সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের ইউক্রেনের বন্দরনগরী ওডেসায় আছড়ে পড়ল রাশিয়ার মিসাইল। এই হামলায় এখনও পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৪ জন। আহত অন্তত ৩২। গত দুবছর ধরে মস্কোর বিরুদ্ধে লড়াই করছে কিয়েভ। পালটা মার দিয়ে যুদ্ধের ময়দানে রুশ ফৌজকে বেকায়দায় ফেলেছিল ইউক্রেনীয় সেনা। কিন্তু এই দীর্ঘ সময় ধরে লড়াই করার পর এবার অস্ত্র ফুরিয়ে আসছে ইউক্রেনের। ফলে ঠেকানো যাচ্ছে না পুতিন-বাহিনীর হামলা। তাই বারবার অস্ত্রের জন্য দরবার করছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
গত কয়েকমাস ধরে ইউক্রেনে হামলার ধার বাড়িয়েছে রাশিয়া। জনবসতিপূর্ণ এলাকায় আছড়ে পড়ছে মিসাইল। বাদ যাচ্ছে না শিক্ষাক্ষেত্রগুলোও। রয়টার্স সূত্রে খবর, সোমবার ওডেসার বিখ্যাত সিফ্রন্ট পার্কের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আঘাত হানে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র। জানা গিয়েছে, এদিন আক্রমণ শানাতে ইস্কান্দার-এম নামে একটি ব্যালিস্টিক মিসাইল ব্যবহার করেছিল মস্কো। যার হামলা ঠেকানো কার্যত অসম্ভব বলে মত সমর বিশেষজ্ঞদের।
[আরও পড়ুন: রুশ হামলার মুখে ৩ গ্রাম থেকে সেনা সরাল ইউক্রেন! হাতিয়ার চেয়ে হাহাকার জেলেনস্কির]
রাশিয়ার এই আক্রমণ প্রসঙ্গে, ওডেসার স্থানীয় গভর্নর ওলেহ কিপার টেলিগ্রামে ক্ষোভ উগরে জানিয়েছেন, মস্কোর ছোড়া মিসাইলে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৪ জন। আহত কমপক্ষে ৩২। যাঁদের মধ্যে এক শিশু-সহ ৭ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এই ঘটনা নিয়ে ইউক্রেনের নৌবাহিনীর মুখপাত্র দিমিত্রো প্লেটেনচুক জানিয়েছেন, একটি ক্লাস্টার ওয়ারহেড-সহ একটি ইস্কান্দার-এম ব্যালিস্টিক মিসাইল দিয়ে হামলা চালানো হয়েছিল। এই ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত আটকানো কঠিন।
বলে রাখা ভালো, এর আগে বহুবার ওডেসায় হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। চলতি বছরের মার্চ মাসেই এই বন্দরনগরীতে ভয়ংকর আঘাত হেনেছিল রুশ বাহিনী। একের পর এক মিসাইল হামলায় তছনছ হয়ে গিয়েছিল সেখানকার একাধিক ঘরবাড়ি। বাদ যায়নি অ্যাম্বুলেন্সও। আক্রমণ করা হয় একাধিক পাইপলাইনেও। সেই ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন অন্তত ২০ জন। আহত বহু।
[আরও পড়ুন: মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবল ইহুদিবিদ্বেষ! ক্যাম্পাসে ইহুদি পড়ুয়াদের ঢুকতে বাধা বিক্ষোভকারীদের]
গত মাস দুয়েক মাস ধরে রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতে রণক্ষেত্রে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে কিয়েভকে। এপি সূত্রে জানা গিয়েছে, হাতিয়ারের অভাবে এমন কয়েকটি জায়গা রয়েছে যেখানে রুশবাহিনীর হামলার মোকাবিলা করা দুষ্কর হয়ে উঠছে। তাই পিছু হটতে বাধ্য হচ্ছে জেলেনস্কির ফৌজ। এনিয়ে ইউক্রেন সেনার কর্নেল জেনারেল আলেকজান্ডার সিরস্কি জানিয়েছেন, “ইস্টার্ন ফ্রন্টে রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করা সহজ হচ্ছে না। পরিস্থিতি এখন খুবই খারাপ। তাই সেখানকার তিনটি গ্রাম থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। মস্কোর বিরুদ্ধে নতুন করে আক্রমণ শানাতে অন্য জায়গায় ঘাঁটি তৈরি করা হয়েছে।” এখন মস্কোর হামলায় যে প্রাণহানি ঘটছে তার জন্য নিজেদের দুর্বল বায়ু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকেই দুষছেন জেলেনস্কি। বারবার তিনি আমেরিকা-সহ পশ্চিমা বিশ্বের কাছে হাতিয়ারের জন্য দরবার করছেন।