shono
Advertisement

বজ্র আঁটুনিতেও করোনার থাবা কলকাতার যৌনপল্লিতে, থার্মাল স্ক্রিনিং ছাড়া খদ্দেরদের ‘নো এন্ট্রি’

পেটের টানে খদ্দেরের ডাকে বাইরে গিয়েই বিপত্তি যৌনকর্মীদের। The post বজ্র আঁটুনিতেও করোনার থাবা কলকাতার যৌনপল্লিতে, থার্মাল স্ক্রিনিং ছাড়া খদ্দেরদের ‘নো এন্ট্রি’ appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 01:25 PM Jun 17, 2020Updated: 01:25 PM Jun 17, 2020

কৃষ্ণকুমার দাস: প্রায় নিঃশব্দে নানা সুরক্ষার পাঁচিল সত্ত্বেও করোনা প্রথম থাবা বসাল কলকাতার যৌনপল্লিতেও। স্বাস্থ্যদপ্তরের গাইডলাইন মেনে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত যৌনব্যবসা পুরোপুরি বন্ধের ঘোষণা দিয়েও কোভিডকে কিছুতেই আটকানো গেল না মহানগরের নিষিদ্ধ পল্লিতে। দক্ষিণ কলকাতার চেতলার রাখাল দাস আড্য রোডের যৌনপল্লিতে একসঙ্গে চার যৌনকর্মীর শরীরে মারণ করোনা ধরা পড়ায় প্রবল আতঙ্ক ছড়িয়েছে কালীঘাট, সোনাগাছিতেও। উদ্বিগ্ন পুরসভা ও পুলিশের শীর্ষকর্তারা যৌনকর্মীদের মাধ্যমে শহরে গোষ্ঠী সংক্রমণ রুখতে যৌনপল্লির ঘরে ঘরে প্রচার চালিয়ে মেয়েদের ‘বাইরে যাওয়া বন্ধ’ করতে স্বাস্থ্যকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়োগ করেছেন। যৌনপল্লিতে করোনা সংক্রমণ রুখতে না পারলে খদ্দের মারফত রাজ্যের অনত্র ছড়িয়ে পড়ারও সম্ভাবনা রয়েছে বলে মঙ্গলবার স্বীকার করেন নারী ও শিশুকল্যাণমন্ত্রী ডাঃ শশী পাঁজা। চেতলার ঘটনার জেরে এদিন সোনাগাছিতে সিদ্ধান্ত হয়েছে, ১ জুলাই থেকে সমস্ত খদ্দেরকেই থার্মাল স্ক্রিনিং করে তবেই মেয়েদের কাছে যেতে দেওয়া হবে।

Advertisement

স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরামর্শে যৌনপল্লিতে ব্যবসা বন্ধ থাকলেও আনলকের পর কিছু যৌনকর্মী পেটের টানে খদ্দেরের ডাকে বাইরে যাচ্ছে। চেতলার এক তরুণী এভাবেই দু’তিনদিন একাধিক পুরুষের ফোন পেয়ে বাইরে গিয়েছিল। তার থেকেই অন্য তিনজনের শরীরে গিয়েছে কোভিড ভাইরাস। স্বাস্থ্যদপ্তর ওই তরুণীর সঙ্গী পুরুষদের তথ্য জোগাড় করার চেষ্টা করছে। আক্রান্ত চারজনই এখন সরকারি কোভিড হাসপাতালে ভর্তি। আক্রান্ত তরুণীদের সঙ্গে যৌনপল্লির অন্য যে সমস্ত মেয়েরা মেলামেশা করেছেন তাঁদেরও বিশেষ নজরদারিতে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম জানান, “রাখাল দাস আঢ্য রোডে স্যানিটাইজেশন ও আক্রান্ত যৌনকর্মীদের পাশে বসবাস করা সমস্ত মেয়েদেরই হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন খাওয়ানো শুরু হয়েছে।”

[আরও পড়ুন: করোনামুক্ত লেখা নেই হাসপাতালের ডিসচার্জ সার্টিফিকেটে, মহা বিপাকে প্রৌঢ়া]

পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য, শুধুমাত্র খদ্দেরের ডাকে বাইরে নয়, কিছু মাসাজ পার্লার যৌনকর্মীদের নিয়ে গিয়ে পয়সার লোভ দেখিয়ে ব্যবসা করছে। উত্তর কলকাতার বড়তলা থানার তথ্য, প্রচণ্ড আর্থিক কষ্টে থাকা সোনাগাছির কিছু মেয়ে শহরের নানা মাসাজ পার্লারে পৌঁছে যাচ্ছে রোজগারের লক্ষ্যে। উপসর্গহীন ব্যক্তিরা পার্লারে এলে তাঁদের সংস্পর্শ থেকে ওই যৌনকর্মীদের সংক্রমিত হওয়ার সম্ভবনা থাকছেই। পুরসভার শীর্ষ স্বাস্থকর্তা জানান, চেতলার তরুনী যৌনকর্মী সম্ভবত উপসর্গহীন ব্যক্তির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ মেলামেশা করায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।

বেলগাছিয়া, নারকেলডাঙ্গার মতো ঘিঞ্জি বসতির সংক্রমণ রুখে দেওয়ার পর পুরসভার কাছে মস্ত বড় চ্যালেঞ্জ যৌনপল্লিতে করোনার থাবা। বস্তুত এই কারণেই পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীদের পাশাপাশি নানা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকেও যৌনকর্মীদের সতর্ক করার কাজে ব্যবহার করছে। বড়তলা থানার পুলিশ ও দুর্বারের যৌথ উদ্যোগে সংক্রমণ রুখতে সোনাগাছির নানা গলিতে মাইক প্রচার হয়েছে। সোনাগাছির মূল চার প্রবেশ পথে ১ জুলাই থেকে থার্মাল স্ক্যানার ও স্যানিটাইজার থাকছে। বিকেল চারটে থেকে রাত দশটা পর্যন্ত ওই স্ক্রিনিং চলবে। দুর্বারের প্রধান উপদেষ্টা ডা. স্মরজিৎ জানা এদিন জানিয়েছেন, “মুখে মাস্ক পরে তো এই পেশা হবে না। তাই মেয়েদের পরামর্শ দিচ্ছি, খদ্দের চলে যাওয়ার পর শ্যাম্পু ও সাবানে স্নান করতে।” 

[আরও পড়ুন: ২০ টাকার স্টেরয়েডই করোনার ব্রহ্মাস্ত্র! এক তৃতীয়াংশ মৃত্যুর হার কমিয়েছে সস্তার ডেক্সামেথাজোন]

The post বজ্র আঁটুনিতেও করোনার থাবা কলকাতার যৌনপল্লিতে, থার্মাল স্ক্রিনিং ছাড়া খদ্দেরদের ‘নো এন্ট্রি’ appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement