নন্দন দত্ত, সিউড়ি: জমি বিক্রির প্রচুর টাকা নিজের কাছে রেখেছেন নলহাটির চিকিৎসক মদনলাল চৌধুরী। মূলত এমনই ধারনা থেকে বাড়িতে ঢুকে চিকিৎসককে খুন করে দুষ্কৃতীরা। অভিযুক্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তারের পর এমনই তথ্য পেয়েছে পুলিশ। তবে তারা যে সত্যি কথা বলছে, তা নিয়ে নিশ্চিত নয় পুলিশ। আগামিকাল সোমবার ধৃতদের রামপুরহাট আদালতে তোলা হবে। জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় জানান, খুনের পরে এদের কেউ কেউ পাশের রাজ্য ঝাড়খণ্ডে পালিয়েছিল। খুনের তদন্তে চারটি সিট গঠন করা হয়েছিল অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার পরাগ ঘোষের নেতৃত্বে। সেই সূত্র ধরেই রবিবার দুপুরে প্রত্যকের বাড়ি থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত গত সোমবার। বাড়ির দোতলায় মেলে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ মদনলাল চৌধুরীর দেহ। তার হাত-পা বাঁধা ছিল। মৃত চিকিৎসক বিজেপির লোকসভার প্রার্থী ছিলেন। স্বভাবতই এই খুনের পিছনে রহস্য দানা বেঁধেছিল। বিজেপি দাবি করেছিল, তাঁকে খুন করা হয়েছে। খুনের প্রকৃত তদন্ত হোক। তৃণমূলেরও দাবি ছিল একই। গত বৃহস্পতিবার গঠন করা হয় সিট। খুনের ঘটনার তদন্তে নেমে ৬ দিনের মাথায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। ধৃতদের চারজন নলহাটির বাসিন্দা, বাকি একজন সাঁইথিয়ার। তাঁদের মধ্যে দুজন চিকিৎসকের বাড়ির নিচে সোনার দোকানদার হিসাবে ভাড়া থাকতেন। পুলিশ জানিয়েছে, সকলেই সোনা পালিশ ও ছোটখাটো সোনার গয়না বিক্রির কাজ করত।
[আরও পড়ুন: ‘২৪০ আসন পাবে তৃণমূল’, ছাব্বিশের বিধানসভা ভোটের টার্গেট বেঁধে দিলেন অভিষেক]
পুলিশের অনুমান, গত রবিবার ২৩ এপ্রিল সন্ধের কিছু পরে চিকিৎসককে তাঁর নিজের বাড়িতেই খুন করা হয়। মৃতদেহ উদ্ধার হয় প্রায় ১২ ঘণ্টা পরে। তখনও চিকিৎসকের দেহের চারপাশ রক্তে ভেসে যাচ্ছিল। সম্ভবত শ্বাসরোধ করে খুন। মৃত্যুর পরে সেলোটেপ দিয়ে হাত, পা, মুখ বেঁধে দেওয়া হয়। এমনকী পরনের লুঙ্গি ছিঁড়ে বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। আর এই নৃশংসতার কারণ হিসেবে উঠে এসেছে টাকা। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আগের অপরাধের অভিযোগ রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে তদন্তকারী দল। পুলিশ সুপারের দাবি, তথ্যগত প্রমান যা পাওয়া গিয়েছে, যা বাজেয়াপ্ত হয়েছে তাতে অভিযুক্তরা যে খুনের সঙ্গে যুক্ত তা নিশ্চিত। এর পিছনে আরও কেউ যুক্ত কিনা তার তদন্ত শুরু হয়েছে।