shono
Advertisement

বিরল অসুখে ধীরে ধীরে পাথরে পরিণত হচ্ছে এই শিশুকন্যা

প্রতি ২০ লক্ষ জনে একজনের এই রোগ হয়।
Posted: 04:54 PM Jul 04, 2021Updated: 04:54 PM Jul 04, 2021

সংবাদ প্রতিদিন‌ ডিজিটাল ডেস্ক: মাত্র পাঁচ মাস বয়স তার। একরত্তি শিশুকন্যাকে দেখে বোঝার উপায় নেই কী ভয়ংকর এক বিরল অসুখে (Rare disease) আক্রান্ত সে। এ এমন এক রোগ, যেখানে ধীরে ধীরে কার্যত পাথর হয়ে যায় শরীর! ব্রিটেনের (UK) লেক্সি রবিনস নামে এক শিশুর শরীরে ধীরে ধীরে ফুটে উঠছে সেই অসুখেরই চিহ্ন।

Advertisement

এই অসুখের নাম ফাইব্রোডিসপ্লেসিয়া অসিফিকানস প্রগ্রেসিভা তথা FOP। প্রতি ২০ লক্ষ জনে একজনের এই রোগ হয়। এই অসুখে কঙ্কালের স্বাভাবিক কাঠামোর উপরও অতিরিক্ত হাড় গজায়। গত ৩১ জানুয়ারি জন্ম হয়েছিল লেক্সির। সব কিছু ঠিকঠাকই ছিল। তবে তার অভিভাবকরা লক্ষ করেছিলেন সে হাতের বুড়ো আঙুলগুলি নাড়াতে পারছে না। তাছাড়া তার পায়ের পাতাও আকারে অনেকটাই বড়। দেরি না করে মেয়েকে দ্রুত ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান তাঁরা। ক্রমে সব কিছু পরিষ্কার হয়ে যায়।

[আরও পড়ুন: ফের যুদ্ধের ডঙ্কা! ইজরায়েলী গোলায় প্রাণ গেল প্যালেস্তাইনের যুবকের]

গত এপ্রিলে করা এক্স রে থেকে দেখা গিয়েছে শিশুটির পায়ের পাতার উপরেও আরও হাড় গজিয়েছে। সেই সঙ্গে বুড়ো আঙুলে দু’টি করে সন্ধিস্থল। সেই কারণেই ওই আঙুল নাড়াতে পারে না একরত্তি। আসলে এই অসুখে পেশি ও টেন্ডন কিংবা লিগামেন্টের মতো সংযোগকারী টিস্যুর পরিবর্তেও হাড় তৈরি হতে থাকে। ফলে ধীরে ধীরে অসার হয়ে যায় শরীর। নড়াচড়া করা আর সম্ভব হয় না। এই অসুখে ২০ বছর বয়সের পর থেকে পুরোপুরি বিছানাতেই কাটে রোগীর জীবন। নড়াচড়ার ক্ষমতা সম্পূর্ণ ভাবে লোপ পায়। আয়ুও ৪০ বছরের বেশি হয় না।

লেক্সির মা অ্যালেক্স এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন ন‌া তাঁদের মেয়ে এমন এক অসুখে আক্রান্ত হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘এক্স রে হয়ে যাওয়ার পরে আমাদের বলা হয়েছিল, মেয়ের এমন কোনও অসুখ হয়েছিল‌ যাতে সে হাঁটতে পারবে না। একথা শুনে আমরা অবাক হয়ে যাই। কেননা তার শরীরে তেমন কোনও লক্ষণই যে নেই। দিব্যি পা ছুঁড়ে খেলা করছে। ও একেবারেই সুস্থ। রাতে ঘুমোয়। সারাক্ষণ হাসিমুখ। তবে কান্না কম। ও যেন এরকমই থাকে, সেটাই আমরা চাই।’’

কিন্তু মায়ের মন যতই সন্তানের শারীরিক অবনতির বিরুদ্ধে প্রার্থনা করুক, ডাক্তাররা জানাচ্ছেন, লেক্সির যা অবস্থা তাতে সামান্য চোট পেলেই তা মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে। তাকে কোনও ইঞ্জেকশন, ভ্যাকসিন দেওয়া যাবে না। দাঁতের পরিচর্যা করাও সম্ভব নয়। এমনকী, বড় হলে সে কোনও সন্তানকেও গর্ভে ধারণ করতে পারবে না।

[আরও পড়ুন: মাঝ সমুদ্রে আগুন! মেক্সিকো উপসাগরে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডের ভিডিও ভাইরাল]

তবে এহেন পরিস্থিতিতেও হাল ছাড়তে রাজি নন একরত্তির বাবা ও মা। তাঁরা ইতিমধ্যেই একাধিক বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলেছেন। মেয়ের চিকিৎসা চালিয়ে যেতে তহবিল তৈরি করে টাকাও সংগ্রহ করা শুরু করেছেন। সেই টাকায় চিকিৎসার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় গবেষণাও চালানো হবে, এমনই পরিকল্পনা। সেই সঙ্গে অন্যদের সচেতন করতে প্রচার শুরু করেছেন ইন্টারনেটে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement