সুকুমার সরকার, ঢাকা: অবৈধভাবে ইউরোপ যেতে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার অভিযোগে অন্তত ৫৪২ জন বাংলাদেশিকে আটক করেছে লিবিয়ার পুলিশ। তুরস্কের সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়াল্ড সূত্রে খবর, ধৃতদের দেশটির রাজধানী ত্রিপোলির তারিক মাতার ডিটেনশন সেন্টারে রাখা হয়েছে। খবরেরে সত্যতা স্বীকার করেছে লিবিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাসও। গত শনিবার উত্তর আফ্রিকার দেশটির পূর্ব উপকূলীয় জেলা মিসরাতা থেকে ওই বাংলাদেশিদের আটক করা হয়।
[আরও পড়ুন: ভারত সফরে শেখ হাসিনা, ‘প্রতিবেশী প্রথম’ নীতিতে জোর দিয়ে বাংলাদেশের পথে জয়শংকর]
ঢাকায় পাঠানো দূতাবাসের প্রতিবেদনে বলা হয়, লিবিয়ার জাওয়ারিখ উপকূল থেকে একটি ট্রলারে করে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপ যাত্রাকালে দেশটির কোস্টগার্ড ৫০০ বাংলাদেশি নাগরিক-সহ ৬০০ অভিবাসীকে আটক করে। দূতাবাস থেকে তাৎক্ষণিকভাবে লিবিয়ার অভিবাসন অধিদপ্তর এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা-সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। ধৃতরা সবাই সুস্থ আছে। ৪০০ জনের পরিচয় নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। বাকিদের পরিচয় নিশ্চিত করার কাজ চলছে। এর মধ্যে ২৪৪ বাংলাদেশি দেশে ফিরতে রাজি হয়েছেন। তাদের দেশে ফেরাতে বাংলাদেশ দূতাবাস লিবিয়ার অভিবাসন অধিদপ্তর এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা-সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। পুরো প্রক্রিয়া শেষ করে মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহে আটকরা দেশে ফিরতে পারেন বলে জানিয়েছেন লিবিয়ার বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল এসএম শামিম উজ জামান।
জানা গিয়েছে, ত্রিপোলির বন্দি শিবিরে রাখা বাংলাদেশি (Bangladesh) নাগরিকদের সঙ্গে দূতাবাসের আধিকারিকরা কথা বলে ৪০০ জনের পরিচয় নিশ্চিত হয়েছেন। এর মধ্যে ২৪৪ জন দেশে ফিরতে রাজি হওয়ায় তাদের রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়েছে। এখন আইওএমের মাধ্যমে (স্পন্সর টিকিটে) তাদের যত দ্রুত সম্ভব দেশে ফেরাতে কাজ চলছে। কয়েকদিন পর ইদ। ফলে শুক্রবারের পর থেকে লিবিয়ায় লম্বা ছুটি শুরু হচ্ছে। তাই মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত সে দেশে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের দেশে ফেরানোর কাজ চলবে।
এদিকে লিবিয়ায় আটকদের বিষয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন বিদেশমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। আটক বাংলাদেশিদের অবশ্যই দেশে ফিরিয়ে আনা হবে বলে জানান মন্ত্রী। ড. মোমেন বলেন, “যাদের ফিরিয়ে আনা হয়, তাদের অনেকে আবারও অবৈধভাবে সেখানে যান। এটা কোনওভাবে বন্ধ করা যাচ্ছে না। একটু কমেছে অবশ্য।” একই বিষয়ে কথা বলেন বিদেশ সচিব মাসুদ বিন মোমেন। তিনি বলেন, মানবপাচার রোধে সরকার শক্ত অবস্থানে যাওয়ার কথা ভাবছে। ভূমধ্যসাগর উপকূল হয়ে ইউরোপ যাত্রার সংখ্যাটি কমছে না।