সুকুমার সরকার, ঢাকা: ডিজিটাল পদ্ধতিতে জালিয়াতি৷ এটিএমে সিস্টেম হ্যাক করে টাকা নিয়ে চম্পট দেওয়ার আগেই ঢাকায় পাকড়াও ইউক্রেনের ৬ নাগরিক৷ তাদের লক্ষ্য ছিল, টাকা তুলে ভারতে পালিয়ে আসার৷ তবে সেসবের আগে পুলিশের জালে ধরা পড়ে আপাতত ৩ দিনের পুলিশ হেফাজতে ওই ৬জন ইউক্রেনীয়৷
[আরও পড়ুন: পাখির সঙ্গে ধাক্কা, ঢাকা বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ বিমানের]
ঘটনা রবিবারের৷ সিস্টেম হ্যাক করে ঢাকার খিলগাঁওয়ে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে তিন লক্ষ টাকা হাতিয়ে চম্পট দিতে যাচ্ছিল একজন৷ তাকে হাতেনাতে ধরা হয়৷ গ্রেপ্তারির পর তাকে জেরা করে পাশের একটি আবাসিক হোটেল থেকে আরও পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ এদের নাম ভ্যালেনটাইন, ওলেগ, ড্যানিশ, নাজেরি, সারগি, ভোলোবিহাইন৷ সোমবার দুপুরে মামলার তদন্তকারী আধিকারির তথ খিলগাঁও জোনাল টিমের পুলিশ পরিদর্শক মহম্মদ আরিফুর রহমান ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রিমান্ডের আবেদন জানান ঢাকা মহানগর আদালতের বিচারক ধীমানচন্দ্র মণ্ডলের কাছে৷ তিনি ৩ দিনের রিমান্ডের নির্দেশ দেন৷ এদিন ধৃতদের হয়ে সওয়াল করার জন্য কোনও আইনজীবী আদালতে হাজির ছিলেন না৷
পুলিশ সূত্রে খবর, এই ছ’জন ইউক্রেনীয় নাগরিক আন্তর্জাতিক জালিয়াত চক্রের সদস্য৷ ডিজিটাল জালিয়াতির মাধ্যমে টাকা তোলার জন্য বাংলাদেশে গিয়েছে৷ গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ ব্যাংকের এটিএম থেকে দুই বিদেশি বিভিন্ন কার্ডের মাধ্যমে একাধিকবার টাকা তোলে৷ সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, টাকা উত্তোলনের পর মাস্ক দিয়ে মুখ ঢাকার চেষ্টা করছে তারা৷ মাথায় টুপি, চোখে ছিল সানগ্লাস৷ এমন অভিনব পদ্ধতিতে এটিএম থেকে টাকা হাতানোর পদ্ধতি চিন্তায় দেশের ব্যাংকিং সেক্টর৷ এর আগে এটিএম জালিয়াতি হত কার্ড ক্লোনিংয়ের মাধ্যমে৷ যেখানে জড়িত থাকত ব্যবহারকারীদের একাংশ৷ তদন্তে জানা গিয়েছে, ইউক্রেনীয় সদস্যরা যে কার্ড এটিএমের বুথে প্রবেশ করানোর সঙ্গে সঙ্গে কেন্দ্রীয় সার্ভারের সঙ্গে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়৷ এরপর নিজেদের ইচ্ছেমতো টাকা তুলে নেওয়া যায়৷
[আরও পড়ুন: মাদক অভিযানে তৎপর পুলিশ, বাজেয়াপ্ত তিন ইয়াবা কারবারির বাংলো]
তদন্তে উঠে আসা তথ্যে চিন্তা আরও বাড়ছে৷ সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা হ্যাক করে এটিএম থেকে টাকা তোলার সব কৌশল অপরাধীদের করায়ত্ত৷ গত এক মাসে বিশ্বের অন্তত ১৩০টি দেশের এধরনের ব্যাংক জালিয়াতির ঘটনা উল্লেখ করে বাংলাদেশকে সতর্ক করেছেন মার্কিন সংস্থা এফবিআই৷ ১৫ দিন আগে পাওয়া এমন তথ্যের বিষয়টি কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিল পুলিশ। আগামী ৬ জুন পর্যন্ত বাংলাদেশে চলত ইউক্রেনীয়দের জালিয়াতি মিশন। ওই দিনই তাদের ভারতে যাওয়ার কথা ছিল বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে। অন্যদিকে ভাষাগত সমস্যার কারণে দোভাষীর মাধ্যমে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। তবে শুরু থেকেই গ্রেপ্তার হওয়া ইউক্রেনীয়রা অসহযোগিতা করছে বলে অভিযোগ। পুলিশের নাগাল থেকে পালিয়ে যাতে অন্যত্র চলে যেতে না পারে, তার জন্য বিমানবন্দরগুলিকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে৷
The post হাইটেক পদ্ধতিতে এটিএম জালিয়াতি, বাংলাদেশে গ্রেপ্তার ইউক্রেনের ৬ নাগরিক appeared first on Sangbad Pratidin.