shono
Advertisement

সত্তরের বৃদ্ধকে বিয়ে করতে চেয়ে ৭০ জন পাত্রীর ফোন, আগ্রহী ২৪-২৫ বছরের যুবতীরাও

হোয়াটসঅ্যাপে পাত্রীদের ছবি-সহ বায়োডেটার ঢল।
Posted: 11:52 AM Nov 09, 2021Updated: 12:45 PM Nov 09, 2021

নব্যেন্দু হাজরা: বিয়ে করতে চেয়ে বিজ্ঞাপন সত্তর বছরের ‘যুবকের’। আর সেই বিজ্ঞাপন দেখে এক সপ্তাহে সাড়া অন্তত সত্তর জন পাত্রীর। প্রার্থী তালিকায় রয়েছেন ২৪-২৫ বছরের যুবতীও। ৭০ / ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি, অবসরপ্রাপ্ত RBI-ম্যানেজার, কলিতে নিজস্ব দোতলা বাড়ি, পেনশন হোল্ডার। ৫০-এর মধ্যে পাত্রী চাই।

Advertisement

গত ৩১ অক্টোবর একটি বাংলা দৈনিকের ‘পাত্রী চাই’ কলামে এই বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন বাগুইআটির বাসিন্দা মিস্টার গঙ্গোপাধ্যায় (পরিচয় গোপন রাখতেই নাম দেওয়া হল না)। নিচে দেওয়া ছিল তাঁর দু’টি মোবাইল নম্বর। বিজ্ঞাপন দেওয়ার পর থেকেই ফোন দু’টি কার্যত আর বিশ্রাম পাচ্ছে না। ২৪-২৫ থেকে ৬০-৬৫, নানা বয়সের মহিলা সম্ভাব্য কনে হিসাবে যোগাযোগ করেছেন ও করছেন, সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে নিরন্তর ছবি-সহ বায়োডেটার ঢল। এমনকী, গত রবিবার তো একজন পরিবার সমেত দেখাও করে গিয়েছেন।

সব মিলিয়ে সত্তরের পাত্র যারপরনাই খোশমেজাজে। এখনও কাউকে মনে ধরেনি বটে, তবে একাকী জীবনে এমন মধুর পরশইবা কম কীসের? সোমবার সকালে মিস্টার গঙ্গোপাধ্যায়কে ফোনে ধরা গেল। বললেন, “বছর সাতেক আগে স্ত্রী মারা গিয়েছেন। এক মেয়ে আছে। সে নিজের সংসার নিয়ে থাকে। নাতি-নাতনিরা স্কুলে পড়ে। আমার এই বিয়ের যে বিজ্ঞাপন দেওয়া বা ইচ্ছে প্রকাশ করা, তাতে তাদের কোনও সমস্যা নেই। বরং গত রবিবার যে পাত্রীর বাড়ির লোকজন আমার বাড়িতে এসেছিল তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে আমার মেয়ে-জামাইও এসেছিল।”

[আরও পড়ুন: রাজস্থানের এই গ্রামে সব পুরুষেরই দু’টি করে বিয়ে, কারণ জানলে চমকে যাবেন]

কিন্তু এই বয়সে বিয়ে? বৃদ্ধাশ্রমেও তো যেতে পারতেন? ‘সত্তরের যুবকের’ প্রত্যয়ী জবাব, “বৃদ্ধাশ্রমের অনেক নিয়ম-কানুন। চিরকাল নিজের মতো করে বেঁচেছি। শেষ বয়সটা অন্যের অধীনে কাটাই কী করে? আর বিয়ে করা মানে তো আমার কাছে অন্য কিছু না। একজন সঙ্গিনীকে কাছে পাওয়া। সে আমায় যাতে দেখভাল করে একটু। বাড়িতে কাজের জন্য রাখলে তো মানুষ আরও কূট মন্তব্য করবে। তার থেকে বিয়ে করে সামাজিক স্বীকৃতি দেওয়াটাই তো ভাল।”

কিন্তু এত কমবয়সের মেয়েরা যে ফোন করছেন, তাঁদের তো লক্ষ্য থাকবে আপনার সম্পত্তির দিকে। ওই বৃদ্ধের সাফ জবাব, “সে আমি যাচাই করেই নেব। এত গুরুত্বপূর্ণ পদ সামলেছি। আর এটুকু পারব না! আসলে একাকীত্ব কাটাতেই বিয়ের এই সিদ্ধান্ত। তাতে আমার পরিবারের কোনও আপত্তি নেই। আমি তাদেরকেও সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করব না।” কিন্তু তিনি পঞ্চাশ বছরের কম বয়সের মেয়েই কেন চাইছেন? বৃদ্ধের কথায়, “আসলে শেষ বয়সে দেখাশোনা করতে গেলে তো একটু শক্তসামর্থ্য মহিলার দরকার, তাই চেয়েছি। অন্য কোনও উদ্দেশ্য নেই তাতে।”

বৃদ্ধের এই সিদ্ধান্তকে কুর্নিশ জানিয়েছেন মনোবিদ থেকে সমাজকর্মী প্রত্যেকেই। সমাজকর্মীদের কথায়, ওই বৃদ্ধের সৎ সাহস রয়েছে। আমাদের সমাজে সত্তর বছর বয়সের লোক খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়ে বিয়ের কথা জানাতে ভয় পান। কিন্তু ওই ব্যক্তির সৎ সাহস রয়েছে দেখে ভাল লাগছে। পাভলভের মানসিক হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শর্মিলা সরকার বলেন, “এটা একটা সাহসী পদক্ষেপ। যে কোনও বয়সেই যে নতুন করে জীবন শুরু করা যায়, এটাই তার প্রমাণ। আরও ভাল লাগছে তিনি তাঁর মেয়েকে এ বিষয়ে পাশে পেয়েছেন।” ইনস্টিটিউট অফ সাইকিয়াট্রিস্টের অধিকর্তা প্রদীপ সাহা বলেন, “একাকীত্বে ভোগা প্রবীণদের কাছে এই ভদ্রলোক নতুন করে বাঁচার দৃষ্টান্ত হয়ে উঠবেন।”

[আরও পড়ুন: মাথায় টুপি, পরনে স্যান্ডো গেঞ্জি, করিনার ‘বোলে চুড়িয়া’ গানে নেচে ভাইরাল টিকটক স্টার!]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup ছাঁদনাতলা toolbarvideo শোনো toolbarshorts রোববার