নন্দন দত্ত, সিউড়ি: বিয়ের ভুয়ো কার্ড দেখিয়ে করে রূপশ্রী প্রকল্পে টাকা তোলার অভিযোগ ঘিরে চাঞ্চল্য বীরভূমের (Birbhum) নলহাটি ২ নম্বর ব্লকে। ঘটনার তদন্তে গিয়ে চক্ষু চড়কগাছ ব্লক অফিসের আধিকারিকদের। কারও চার বছর আগে বিয়ে হয়েছে, তো কেউ ছেলেমেয়ে নিয়ে সংসার করছে! এরপরই নলহাটি ২ নম্বর ব্লকের বিডিও রূপশ্রী প্রকল্পের আট ভুয়ো প্রাপকের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ব্লক প্রশাসনের দাবি, পঞ্চায়েত প্রধানের সার্টিফিকেটের ভিত্তিতেই সরকারি প্রকল্পের টাকা তাদের দেওয়া হয়েছে। এদিকে তৃণমূলের অভিযোগ, আধিকারিকরা তদন্ত করে টাকা ছাড়ে। তাঁদেরই এতে যোগসাজশ আছে। এদিকে ঘটনার পর থেকেই ভুয়ো প্রাপকরা এলাকাছাড়া। তাঁদের নিয়ে পরিবারের কেউ মুখ খুলতে চাইছে না। এই বিষয়ে নলহাটি ২ নম্বর ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সেলিমা খাতুন বলেন, “আধিকারিকদের তদন্তের পরেই ওই টাকা ছাড়া হয়। যদি গাফিলতি থাকে তাহলে সেটা তাঁদের। ওই প্রকল্পে টাকার জন্য সভাপতি-সই করে না। তবে পঞ্চায়েত প্রধান যদি সই করে থাকেন তিনিও দায় এড়াতে পারেন না।”
[আরও পড়ুন:Corona Virus: Mask ছাড়া ঘোরাফেরা! কোভিডবিধি লঙ্ঘন করায় দার্জিলিংয়ে আটক ৪ পর্যটক]
ফেব্রুয়ারি মাসে ভোটের (West Bengal Assembly Elections) ঠিক আগেই নলহাটি দুই ব্লকের নোওয়াপাড়া এলাকার আট প্রাপক রূপশ্রী প্রকল্পের ২৫ হাজার টাকা সরকারি অনুদান দাবি করেছিল। সদস্য ও প্রধানের সার্টিফিকেট, বিয়ের কার্ড ও এলাকার তদন্তের ভিত্তিতে তাঁদের সে টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু গত সপ্তাহে জেলাশাসকের দপ্তরে ওই প্রাপকরা ভুয়ো বিয়ের কার্ড দেখিয়ে টাকা তুলেছে বলে অভিযোগ আসে। এরপরেই জেলা থেকে বিডিওকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। তদন্তের জন্য ব্লকের ছয় সদস্যের একটি দল গঠন করা হয়। তদন্তকারী দল নোওয়াপাড়া গিয়ে জানতে পারেন, সবাই ভুয়ো পরিচয় দিয়ে নকল কার্ড বিডিও দপ্তরে দাখিল করেছিল। ব্লকের তরফে বিষয়টি নিয়ে শুনানির জন্য গত সপ্তাহে ব্লকে আসার জন্য নোটিস দেওয়া হয়। কিন্তু প্রাপকদের কেউ হাজির হয়নি। তাই নলহাটি থানার বিডিও নোওয়াপাড়ার মোমেনা খাতুন, রুবিনা খাতুন, সমাপ্তি দাস, হাসনেয়ারা খাতুন, লুসিনা খাতুন, মুর্শেদা খাতুন, গৌরি মাল, আশা মালের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। বিডিও হুমায়ুন চৌধুরী জানান, “আধিকারিকরা গত সপ্তাহে গ্রামে গিয়ে যে রিপোর্ট দিয়েছে, তার ভিত্তিতেই তাদের শুনানিতে ডাকা হয়। তাঁরা না আসায় আমরা বাধ্য হয়ে থানায় অভিযোগ জানিয়েছি।” পাশাপাশি তিনি জানান, এলাকার প্রতিটি পঞ্চায়েত প্রধানকে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে, এখন থেকে শুধু সদস্য নয় তাদের আলাদা করে রূপশ্রী প্রকল্পের জন্য অবিবাহিতের সার্টিফিকেট দিতে হবে।