সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১৪ জুন ২০২০ থেকে ১৪ জুন ২০২১। একবছর হয়ে গেল সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর। সোমবার সকাল থেকেই প্রয়াত অভিনেতার নাম ট্রেন্ডিং টুইটারে। সুশান্তের সঙ্গে একান্ত মুহূর্তের ছবির কোলাজ ভিডিও শেয়ার করেছেন প্রাক্তন প্রেমিকা অঙ্কিতা লোখন্ডে (Ankita Lokhande)। সুশান্ত ছাড়া তাঁর জীবন অচল, ইনস্টাগ্রামে ছবি পোস্ট করে সেকথা জানিয়েছেন রিয়া চক্রবর্তী (Rhea Chakraborty)। আবেগের জোয়ারে ভেসেছেন অনুরাগীরাও। কিন্তু যে মানুষটাকে ঘিরে এত আবেগ, এত ভালবাসা, তাঁর মৃত্যুর ৩৬৫ দিন পরও কিছু প্রশ্নের জবাব মিলল না যে…
১) সুশান্ত সিং রাজপুত (Sushant Singh Rajput) আত্মহত্যা করেছেন না তাঁকে খুন করা হয়েছে, তা এখনও প্রমাণ সাপেক্ষ। এ বিষয়ে অনেকে অনেক তথ্যই দিয়েছেন। বিচারের দাবিতেও অনেকে সরব হয়েছেন। তবে সুশান্তের মানসিক পরিস্থিতির বিষয়টি খুব একটা পরিষ্কার হয়নি। পরিবারের পক্ষ থেকে নাকি জানানো হয়েছিল, ২০১৩ সাল থেকে সুশান্ত মানসিক অশান্তিতে ছিলেন। আবার মুম্বই পুলিশের কমিশনার পরমবীর সিং বলেছিলেন, সুশান্ত গুগলে ‘বাইপোলার ডিজঅর্ডার’, ‘স্কিৎজোফ্রেনিয়া’, ‘যন্ত্রণাহীন মৃত্যু’র বিষয়ে খোঁজ করেছিলেন। তাহলে সুশান্তের মানসিক অবস্থা কতটা খারাপ ছিল?
২) সুশান্তের মৃত্যুর পরই নেপোটিজম নিয়ে সরব হয়েছিলেন কঙ্গনা রানাউত (Kangana Ranaut)। ‘মুভি মাফিয়া’ বলে করণ জোহর, আলিয়া ভাটদের আক্রমণ করেছিলেন। অনেকেই কঙ্গনার সুরে সুর মিলিয়ে ছিলেন। কোনও নির্দিষ্ট প্রমাণ না থাকা সত্ত্বেও কেন নেপোটিজম নিয়ে বারবার আলোচনা হয়েছিল? আসল তদন্তের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য? নাকি অনেকে ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধি করছিলেন?
৩) রিয়ার বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের অভিযোগ এনেছিলেন সুশান্তের বাবা কে কে সিং। ১৫ কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ করেছিলেন তিনি। তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট। সেই তদন্তের কী হল?
[আরও পড়ুন: ফ্লোরে ৫০ জন সদস্য নিয়ে করা যাবে শুটিং, প্রত্যেকের টিকাকরণ বাধ্যতামূলক]
৪) সুশান্তের মৃত্যুতে মাদক যোগের তদন্তে সক্রিয় হয়ে উঠেছিল নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো। মাদক মামলাতেই রিয়া ও তাঁর ভাই সৌভিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। দীপিকা পাড়ুকোন, শ্রদ্ধা কাপুর, সারা আলি খানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কিন্তু মাদক মামলার সঙ্গে সুশান্তের মৃত্যুর কোনও স্পষ্ট যোগ এখনও পর্যন্ত NCB করতে পারল কই?
৫) সুশান্তের মৃত্যুতে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের ছেলে আদিত্যর নাম জড়ানো হয়েছিল। খবর রটেছিল, সুশান্তের মৃত্যুর আগের রাতের এক পার্টিতে তাঁর সঙ্গে ছিলেন আদিত্য ঠাকরে। কিন্তু পরবর্তীকালে বিবৃতি দিয়ে এই গুঞ্জন নস্যাৎ করে দেন আদিত্য। পুলিশের পক্ষ থেকেও এই তথ্য অস্বীকার করা হয়েছিল। তাহলে কোন ভিত্তিতে এই খবর প্রকাশ্যে আনা হয়েছিল?
৬) সুশান্তের মৃত্যুর পর সবার আগে তদন্ত শুরু করেছিল মুম্বই পুলিশ। পরে আবার সুশান্তের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে পাটনা পুলিশ তদন্ত করে। তদন্তের জন্য পাটনা পুলিশ মুম্বই পৌঁছতেই করোনার জন্য তদন্তকারী অফিসারকে আইসোলেশনে থাকার নির্দেশ দিয়েছিল বৃহণ্মুম্বই পুরনিগম। তা নিয়ে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়েছিল। সেই দ্বন্দ্বের কী হল?
৭) সুশান্ত মৃত্যুর কুলকিনারা করার ভার সিবিআইকে দিয়েছিল সরকার। তারপর AIIM-এর ফরেনসিক রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসে। যাতে সুশান্তের মৃত্যুতে কোনও অস্বাভাবিকত্ব ছিল না বলেই জানানো হয়েছিল। এরপর থেকে সিবিআই তদন্তের গতিপ্রকৃতি কী?
৮) সুশান্তের মৃত্যুর পর থেকেই টুইটারে ট্রেন্ডিং হতে থাকে ‘জাস্টিস ফর এসএসআর’ (JusticeForSSR)। ২০২০ সালের নভেম্বরে মুম্বই পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল প্রায় ১.৫ লক্ষ অ্যাকাউন্ট অ্যাক্টিভ করা হয়েছিল এই হ্যাশট্যাগটি জেনারেট করার জন্য। কে রয়েছে এর নেপথ্যে? এই প্রশ্নের উত্তর আজও অজানা।