shono
Advertisement

বধূকে খুনের দায়ে যাবজ্জীবন ৯০ বছরের শাশুড়ির, আদালত চত্বরেই কেঁদে ফেললেন বৃদ্ধা

একই শাস্তির মুখে মৃতার শ্বশুরবাড়ির আরও চার সদস্য।
Posted: 08:37 PM May 31, 2022Updated: 08:37 PM May 31, 2022

শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: গৃহবধুকে শ্বাসরোধ করে খুনের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড নবতীপর শাশুড়ির। রায় শুনেই আদালত চত্বরে কেঁদে ফেলেন বৃদ্ধা প্রভাবতী রায়। একই শাস্তির মুখে স্বামী, দেওর, জা ও ননদ। সঙ্গে প্রত্যেকের ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্দেশে আরও বলা হয়েছে, মৃতার নাবালিকা কন্যার জন্য দু’লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে আসামীপক্ষকে। মঙ্গলবার ঘাটাল মহকুমা আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ সঞ্জয় কুমার শর্মা এই নির্দেশ দিয়েছেন।

Advertisement

সরকার পক্ষের আইনজীবী শীর্ষেন্দু মাইতি বলেন, “২০০০ সালে দাসপুরের বাসিন্দা নির্মল রায়ের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল ডেবরার রুমা রায়ের। বিয়ের প্রথম থেকেই পণের দাবিতে রুমার উপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চালাত স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। এমনকি তাঁকে অনেকবার প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টাও করা হয়েছে। গত ২০১৩ সালের ৩০ আগস্ট রুমাকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করে অভিযুক্তরা। দাসপুর থানার পুলিশ অভিযোগ পেয়ে ৪৯৮ ও ৩০২ ধারায় মামলা রুজু করে অভিযুক্ত পাঁচজনের বিরুদ্ধে। পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেপ্তারও করে। পরে তাঁরা জামিনও পায়। দীর্ঘ ৯ বছর মামলা চলার পর ৩০ মে সোমবার ঘাটাল মহকুমা আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ সঞ্জয়কুমার শর্মা ৩০২ ধারায় পাঁচজনকেই দোষী সাব্যস্ত করেন ও তাদের হেফাজতের নির্দেশ দেন। মঙ্গলবার তাদের যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা করেন তিনি।”

[আরও পড়ুন: পাথরপ্রতিমায় ৩ বছরের শিশুকন্যাকে যৌন নির্যাতন! কাঠগড়ায় ৮৮ বছরের বৃদ্ধ]

মৃতা রুমা রায়ের ভাই শোভন রায় আদালতে দাঁড়িয়ে বলেন, “আজ আমার দিদির আত্মা শান্তি পেল। আদা্লতের এই রায়ে আমরা খুশি।” তিনি বলেন, “দিদির উপর যেভাবে অমানুষিক অত্যাচার করা হত, তা ভাষায় প্রকাশ করা যেত না। তবুও দিদি মুখ বুজে সহ্য করত তাঁর একমাত্র মেয়ের দিকে তাকিয়ে। একদিন দিদিকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে বাড়িতে খুন করে হাসপাতালে নিয়ে যায় আসামীরা। হাসপাতালে গিয়ে বলে, দিদি গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। দিদির গায়ে প্রচুর আঘাতের চিহ্ন ছিল। তা দেখেই আমাদের সন্দেহ হয় দিদিকে খুন করা হয়েছে। পুলিশি তদন্তে খুন প্রমাণিত হয়েছে। পাঁচজনেরই উপযুক্ত সাজা দিয়েছেন জজসাহেব। আমরা খুশি।” রায় ঘোষণার সময় আদালতেই ছিল রুমার একমাত্র মেয়ে সায়নী রায়। মায়ের মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স ছিল ১০ বছর। সে এখন কলেজ ছাত্রী। মায়ের খুনের রায় শুনে সেও ডুকরে কেঁদে উঠে। কিন্তু কোনও মন্তব্য করতে চায়নি সায়নী। আদালতের নির্দেশ, ক্ষতিপূরণ হিসাবে আসামিদের পক্ষ থেকে সায়নীকে দিতে হবে দু’লক্ষ টাকা ক্ষতিপুরণ।

সাজাপ্রাপ্তরা হলেন গৃহবধুর স্বামী নির্মল রায়, শাশুড়ি প্রভাবতী রায়, দেওর প্রদ্যোৎ রায়, ননদ মলিনা সিংহ ও জা তপতি রায়। শাশুড়ি প্রভাবতী রায় ৯০ বছরের বৃদ্ধা। রায় শুনেই আদালত চত্বরে কেঁদে ফেলেন প্রভাবতীদেবী। যদিও আসামি পক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, তাঁরা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবেন।

[আরও পড়ুন: পুলিশের মুখে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব! ভিডিও ভাইরাল হতেই ক্লোজ মানিকচক থানার SI]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement