মনিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: বিজেপি নেতার মৃত্যু ঘিরে রণক্ষেত্র হাওড়ার বাগনান (Bagnan)। মৃত্যুর প্রতিবাদে এলাকায় একাধিক বাড়িতে ভাঙচুর করা হয়। আগুনও লাগিয়ে দেওয়া হয়। দফায় দফায় জাতীয় সড়ক অবরোধও করা হয়। বিজেপি নেতা মৃত্যুর প্রতিবাদে আগামিকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার ১২ ঘণ্টা বাগনান বন্ধের ডাক গেরুয়া শিবিরের।
গত শনিবার মহাষ্টমীর রাতে কিংকর বাড়ির সামনে গুলিবিদ্ধ হন। ওইদিন পেশায় ফুল ব্যবসায়ী কিংকর ব্যবসার কাজ সেরে বাড়ি ফিরছিলেন। অভিযোগ, সেই সময় প্রতিবেশী পরিতোষ মাঝি-সহ বেশ কয়েকজন তাঁকে ঘিরে ধরে। তাদের সঙ্গে বচসা হয় এবং তখনই পরিতোষ কিংকরকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। গুলি লাগে কিংকরের পেটের বাম পাশে। কিংকরকে প্রথমে পটলডাঙ্গা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে উলুবেড়িয়া মহাকুমা হাসপাতাল ঘুরে কিংকরকে নিয়ে আসা হয় কলকাতার নীলরতন সরকার হাসপাতাল। সেখানেই তিনি ভরতি ছিলেন। তার পেটে অস্ত্রোপচার হয়েছিল। পরে তাঁর করোনা ধরা পড়ে বলে পুলিশ জানিয়েছে। বুধবার দুপুরে কিংকরের মৃত্যু হয়। এদিকে স্থানীয়রা এক দুষ্কৃতীকে ধরে ফেলে পালিয়ে যাওয়ার সময়। স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ হয়ে শনিবারই পরিতোষের বাড়িতে ভাঙচুর করে। তার মোটরবাইকও ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ।
[আরও পড়ুন: ডানকুনিতে বজরঙ্গবলির মূর্তি ভাঙাকে ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য, অভিযুক্তর গ্রেপ্তারির দাবিতে বিক্ষোভ]
হাওড়া গ্রামীণ এলাকার পুলিশ সুপার সৌম্য রায় বলেন, “বাগনানের চন্দনা পাড়া এলাকার গুলিবিদ্ধ বিজেপি নেতা কিংকর মাজির মৃত্যু হয়েছে করোনাতে। তবে গুলির ঘটনায় পরিবারের তরফে তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। পুলিশ ইতিমধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। বিক্ষোভেের ঘটনায় দুুুু’জনকে আটক করেছে পুলিশ।” তৃণমূলের বিরুদ্ধে দলীয় কর্মীকে খুনের অভিযোগ তুলে বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা চন্দনাপাড়া এলাকায় রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখায়। বাগনান স্টেশন চত্বরে মিছিল করে। বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা ফুলেশ্বরের মনসাতলায় মুম্বই রোড অবরোধ করে। পরে তারা বাগনান থানায় বিক্ষোভ দেখায়।
বিজেপি নেতা অনুপম মল্লিকের দাবি, “রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতেই তৃণমূল কর্মী পরিতোষ বিজেপি কর্মী কিংকরকে খুন করতেই গুলি চালায়। আর গুলিবিদ্ধ হওয়ার ফলে পরে হাসপাতালে কিংকরের মৃত্যু হয়েছে। তৃণমূল খুনের রাজনীতি করছে। জনগণের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়ে তৃণমূল রক্তের হোলি খেলায় মেতেছে। জনগণ ঠিক সময়ে উত্তর দেবে।” বাগনানের তৃণমূল বিধায়ক অরুণাভ সেন বলেন, “প্রাথমিকভাবে যতটুকু জানা গিয়েছে জমি সংক্রান্ত কারণে বিবাদের জেরে এই গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেছিল। রাজনীতির সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। বিজেপি লাশ নিয়ে রাজনীতি করছে। তবে আমরাও পুলিশকে বলেছি যথাযথ তদন্ত করে প্রকৃত দোষীকে দ্রুত ধরার। তাছাড়া কিংকর করোনা আক্রান্ত ছিলেন। বাগনান সচল রাখতে প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।”