অতুলচন্দ্র নাগ, ডোমকল: কুমির নিয়ে আতঙ্কে মরা পদ্মাপাড়ের মানুষ। কৃষকেরা ভয়ে ওই পথই ছেড়ে দিয়েছেন। ঘুরপথে জমিতে যেতে দেরি হওয়ায় কাজের অসুবিধা হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন। অথচ প্রশাসনের লোকেরা কুমির ধরার কোনও উদ্যোগ নিচ্ছে না বলেই অভিযোগ। বিপাকে পড়েছেন মুর্শিদাবাদের রানিনগর-সাগরপাড়া থানার সীমান্তবর্তী বামনাবাদের মরা পদ্মাপাড়ের বাসিন্দারা। দিনপাঁচেক হল ওই এলাকায় বড় একটি কুমির দেখা যাচ্ছে। কখনও জলে সাঁতার কাটছে, তো কখনও নদীর পাড়ে ঘাপটি মেরে রোদ পোহাচ্ছে। তা দেখেই সীমান্তপাড়ের মানুষেরা আতঙ্কিত।
বিএসএফের ১১৭ ব্যাটেলিয়ন সূত্রে জানা গিয়েছে দিনচারেক আগে সীমান্তের ২ ও ৩ নম্বর আউট পোষ্টের মাঝামাঝি জায়গায় দেখা গিয়েছিল ওই কুমিরটিকে। শুক্রবার দেখা মিলেছে ৮ ও ৯ নম্বর আউট পোষ্টে। যা নিয়ে কৃষকদের মতো বিএসএফ জওয়ানরাও আতঙ্কিত। কারণ, ওই এলাকা দিয়ে হামেশাই তাদের যাতায়াত করতে হয়। চোখে দেখা ‘যমদূত’কে দেখে তাঁরাও চিন্তিত। আর তাই বিএসএফ জওয়ানরা চাইছেন বনদপ্তর অথবা স্থানীয় প্রশাসন উদ্যোগ নিয়ে কুমিরটিকে পাকড়াও করে বড় পদ্মানদী অথবা সংরক্ষিত এলাকায় নিয়ে যাক।
[আরও পড়ুন: ‘প্রয়োজনে শিক্ষামন্ত্রীকে তলব করব’, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় হুঁশিয়ারি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের]
রানিনগর ২ ব্লকের বিডিও পার্থ চক্রবর্তী জানান, “বিষয়টা বনদপ্তরের আধিকারিকদের বলা হয়েছে। কিন্তু অবাক কাণ্ড বনদপ্তর থেকে পরবর্তীতে আর যোগাযোগ করেনি কেউ। তাই আবারও বনদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। জানানো হয়েছে জেলাশাসকেও।” এদিকে, সীমান্তের কৃষক খোসমহম্মদ শেখ জানান, “জায়গাটা লোকালয় থেকে দূরে আর বিএসএফের আউটপোস্টের কাছে হওয়ায় সাধারণ মানুষ ভিড় করছেন না। কিন্তু কৃষক ও রাখালদের তো ওই নদী পেরিয়ে সীমান্তের জমিতে যাতায়াত করতে হয়। কখন, কোথায় লুকিয়ে থাকবে কুমির বোঝা যাচ্ছে না। যদি কাউকে আক্রমন করে বা কোনও গবাদি পশু খেয়ে নেয় তখন কী হবে? ক্ষতির জের পোহাতে হবে কৃষকদেরই।”
স্থানীয়দের দাবি, কয়েকদিন আগে বহতা গঙ্গার কুমির ধরে তাকে সংরক্ষিত এলাকায় নিয়ে যাওয়া হল। অথচ মরা পদ্মার জমা জলের কুমিরের ব্যাপারে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। বনদপ্তর শহর আর গ্রামকে পৃথক নজরে দেখছেন কেন? যদিও বনদপ্তরের বহরমপুর বিভাগ সূত্র জানাচ্ছে, “সেরকম কিছু নয়। সীমান্তের ওই কুমিরের ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে। আগামী দু-একদিনের মধ্যেই বনদপ্তরের কর্মকর্তারা কুমিরের গতিবিধি দেখতে বামনাবাদ সীমান্তে যাবেন। আর তারপরেই সিদ্ধান্ত নেবেন কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”