শংকর কুমার রায়, রায়গঞ্জ: করোনা (Coronavirus) আবহে বাতিল এ বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষা। বিকল্প মূল্যায়ন পদ্ধতি চূড়ান্ত করে এখন মার্কশিট তৈরির কাজ চলছে । ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে ফলাফলও প্রকাশ হওয়ার কথা। কিন্তু এই সময়ে মাধ্যমিকের ফর্ম ফিল আপ হয়নি – এই অভিযোগে শুক্রবার উত্তর দিনাজপুরের (Uttar Dinajpur) মাদারগাছি হাইস্কুলে হইচই বাঁধিয়ে দিল জনা কয়েক ছাত্র। বিষয়টি নিয়ে জেলা শিক্ষামহলে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে। কেউ কেউ এতে স্কুল কর্তৃপক্ষের গাফিলতিকে দায়ী করছেন। স্কুল পরিদর্শক সাফ জানিয়েছেন, তিনি অভিযোগ পেয়েছেন। প্রধান শিক্ষকের গাফিলতিই দায়ী এর জন্য। ওই ছাত্ররা যাতে পরীক্ষা দিতে পারে, তার ব্যবস্থা করা হবে।
করণদিঘি ব্লকের মাদারগাছি হাই স্কুলের মোট মাধ্যমিক (Madhyamik) পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৭৮ জন। গত নভেম্বরে ফর্ম ফিল আপের সময় ১৪৯ জন ছাত্র ফর্ম ফিল আপ করেছে। ২৯ জন করেনি। পরে আরও দু’দফায় ফর্ম ফিল আপের দিনক্ষণ ঠিক হলেও এই ২৯ জন নিজেদের নাম নথিভুক্ত করায়নি। এখন এদের দাবি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য ফর্ম ফিল আপ করতে চায়। শুক্রবার এই দাবিতে মাদারগাছি হাই স্কুলে বিক্ষোভ দেখায়। বিষয়টি নিয়ে বেশ জলঘোলা হয়েছে। শিক্ষামহলের একাংশের দাবি, ছাত্রদের ফর্ম ফিল আপ করানোটা স্কুলেরই দায়িত্ব। কেউ যদি পরীক্ষা এড়ানোর জন্য তা না করে থাকে, তাহলেও স্কুলের তরফে অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে সেই কাজ সম্পূর্ণ করতে হয়। স্কুলের প্রধান শিক্ষক অজয় কুমার ঘোষকে একাধিকবার ফোন করা হলেও, তিনি ফোন ধরেননি।
[আরও পডুন: ‘Yaas’-এর ক্ষত শুকোতে না শুকোতেই ফের দুর্যোগ আসন্ন! আতঙ্ক গ্রাস করছে সুন্দরবনকে]
বিষয়টি নিয়ে এবিটিএ (ABTA) জেলা সম্পাদক বিপুল মৈত্র বলেন, ”আসলে এরা বেশিরভাগই পরিযায়ী শ্রমিকদের ছেলে। নবম শ্রেণির পর থেকেই এরা ভিনরাজ্যে কাজ করতে চলে যায়। এক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। এরা ভেবেছিল, পরীক্ষা দিলে পাশ করবে না। তাই ফর্ম ফিল আপ করেনি। কিন্তু এখন যে মূল্যায়ন পদ্ধতিতে ফলপ্রকাশ হবে, তাতে ফর্ম ফিল আপ করলে অর্থাৎ যে কেউ মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য আবেদন জানালেই পাশ করতে পারবে। তাই এই মুহূর্তে এসে তাদের মনে হচ্ছে, মাধ্যমিক পাশ করতে পারত সহজে। তাই ফর্ম ফিল আপের জন্য দাবি করছে।” জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) নিতাই দাস বলেন, ”এই ঘটনায় মাদারগাছি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষকেরই গাফিলতিতে ঘটেছে। তাঁকে শোকজ করা হবে। ওই ২৯ জন ছাত্রের ফর্ম ফিল আপের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।” কিন্তু এই মুহূর্তে কি সেটা সম্ভব? তা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।