দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: গৃহবধূকে বেধড়ক মারধরের পর গলায় ফাঁস দিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের বিরুদ্ধে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলির ১ নম্বর মেরীগঞ্জ পঞ্চায়েতের কচিয়ামারা এলাকার কয়ালের চক গ্রামের ঘটনা। মৃতার বাপেরবাড়ির অভিযোগের ভিত্তিতে আটক গৃহবধূর স্বামী ও শাশুড়ি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
বারুইপুরের বেলেগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘোলা দোলতলা গ্রামের বাসিন্দা রবীন বৈদ্য। তাঁর চার মেয়ে ও এক ছেলে। সাত বছর আগে দেখাশোনা করে তিনি তাঁর মেজো মেয়ে অর্চনাকে বিয়ে দিয়েছিলেন কুলতলির ১ নম্বর মেরীগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের কচিয়ামারা এলাকার কয়ালের চক গ্রামের পলাশ হালদারের সঙ্গে। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই অর্চনার শ্বশুরবাড়ির লোকজন অতিরিক্ত টাকাপয়সা দাবি করত। টাকা না দিতে পারায় ওই গৃহবধূর উপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার লেগেই থাকত। মেয়েকে অত্যাচার থেকে রক্ষা করতে মাঝেমধ্যে সাধ্যমতো টাকাপয়সাও দিতেন অর্চনার বাপের বাড়ির লোকজন। গত কয়েকদিন আগেও শ্বশুরবাড়ির লোকজন ওই গৃহবধূকে বেধড়ক মারধর করে বলেও অভিযোগ।
[আরও পড়ুন: ঘনঘন বান্ধবী বদল, অনিয়ন্ত্রিত যৌন লালসায় সর্বনাশ পল্লবীর প্রেমিক সাগ্নিকের, মত মনোবিদদের]
বৃহস্পতিবার ভোর তিনটের সময় অর্চনার বাপের বাড়িতে ফোন যায়। অর্চনা অসুস্থ বলেই জানায় তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন। খবর পেয়ে ওই গৃহবধুর বাপের বাড়ির লোকজন তড়িঘড়ি ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে যান। তবে হাসপাতালে গিয়ে তাঁরা জানতে পারেন, অর্চনা আর বেঁচে নেই। সেখানে গৃহবধূর শাশুড়ি লক্ষ্মী হালদার ও স্বামী পলাশ হালদারকে দেখতে পান বাপের বাড়ির লোকজন। বেঁধে বেধড়ক মারধর করা হয় তাদের। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে হাসপাতাল চত্বরে। ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত হাসপাতালে চলে আসে ক্যানিং থানার পুলিশ। ওই গৃহবধূর স্বামী ও শাশুড়িকে আটক করে পুলিশ। গৃহবধূর দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়।
কুলতলি থানায় মৃতার স্বামী পলাশ হালদার, শ্বশুর সঞ্জয় হালদার, শাশুড়ি লক্ষ্মী হালদার, দেওর পরিতোষ হালদার ও জা সুজাতা হালদারের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছে। অর্চনার বাপের বাড়ির অভিযোগ, খুন করে ঝুলিয়ে দেহ হয়েছিল অর্চনাকে। গৃহবধূর বাবা রবীন বৈদ্য ও মা বিজলী বৈদ্য অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। কুলতলি থানার পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।