নন্দন দত্ত, বীরভূম: তিন হাজার টাকার চালান পাঁচশো টাকায়! রাস্তার পাশের দোকানে হাত গলিয়ে ‘বালি’ বললেই হুবহু আসল চালানের মতন ছাপ দেওয়া কাগজ মিলছিল এতদিন। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই মঙ্গলবার গভীররাতে ময়ূরেশ্বর থানার কলেশ্বরে হানা দিয়ে একটি ছাপাখানা ও তার মালিককে গ্রেপ্তার করল পুলিশ।
ঘটনার সূত্রপাত বছর দেড়েক আগে। সরকারি বালির চালান নকল করে তা বিক্রি করা হচ্ছিল কম দামে। দিব্যি কারবার চালাচ্ছিলেন কুনুটিয়া গ্রামের আলতামাস কবির মল্লিক। অভিযোগ, গোটা পরিবারই এই কাজে যুক্ত। ময়ূরেশ্বর থানার কলেশ্বর গ্রামের মোড়ে রয়েছে সাইনবোর্ড। সেখানে লেখা বই বাঁধানো হয়। এর পাশাপাশিই চলত নকল চালানের কারবার। দিনে রাতে লাখ লাখ টাকার লেনদেন চলত। আর নকল চালানের কারণে জেলাজুড়ে রাজস্ব আদায় কমে যাচ্ছিল। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী জেলার বৈধ বালিঘাট মালিকদের অনলাইনে চালান কেটে তা ছাপিয়ে রাখতে হয়। বিক্রির সময়ে সেই চালান ট্রাক চালকদের হাতে দিয়ে দিলেই ছাড়পত্র মেলে। গড়ে প্রতিটি ট্রাক চালককে তিন হাজার টাকার রাজস্ব আদায়ের চালান নিতে হয়। কিন্তু তা না নিয়ে ট্রাকচালক ওই নকল চালান ব্যবহার করছিলেন বলেই খবর।
[আরও পড়ুন: সাতসকালে বায়রন বিশ্বাসের বাড়িতে আয়কর হানা, নজরে হাসপাতাল-কারখানা-গুদামও]
মঙ্গলবার গভীর রাতে অতিরিক্ত জেলাশাসক অসীম পাল, ডেপুটি ডিএল আর ও রবিউল ইসলাম, রামপুরহাট মহকুমা পুলিশ আধিকারিক ধীমান মিত্র, ময়ূরেশ্বরের ওসি-সহ যৌথ বাহিনী অভিযান চালায়। যদিও অন্ধকারে ছাপাখানায় যুক্ত আরও কয়েকজন গা ঢাকা দেয়। তবে আলতামাসের কাছে দামি মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, ছাপার যন্ত্র-সহ একধিক জিনিস বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। আজ তাকে রামপুরহাট আদালতে তোলা হবে। জেলাশাসক জানান, এর সঙ্গে আরও কেউ যুক্ত আছে কিনা তারও তদন্ত করবে পুলিশ।