সুকুমার সরকার, ঢাকা: সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে ছাত্র আন্দোলনে উত্তাল হয়েছে বাংলাদেশ। রক্তাক্ত হয়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত। হিংসাত্মক আন্দোলনের পরে কোটা সংস্কার করেছে সুপ্রিম কোর্ট। তার পর থেকে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে বাংলাদেশ। টানা ১০ দিন বন্ধ থাকার পর অবশেষে সচল হয়েছে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা। কিন্তু এর মাঝেও আন্দোলনে অনড় রয়েছে একদল পড়ুয়া। নতুন করে তাদেরকে কী ইন্ধন জোগাচ্ছে বিএনপি- জামাত-সহ সমমনস্কা দলগুলো?
কোটা সংস্কার আন্দোলনে এখনও পর্যন্ত মোট ১৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলেই জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বড় ধরনের অশান্তির ছক কষেই বাংলাদেশে কোটা আন্দোলনে ছদ্মবেশে অনুপ্রবেশ করে জামাত শিবিরের ক্যাডাররা। বাংলাদেশে নিযুক্ত স্পেনের রাষ্ট্রদূত গ্যাব্রিয়েল মারিয়া সিসতিয়াগা ওচহোয়া ডি চিনচিক্রুর সঙ্গে সাক্ষাতে এমনটাই জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জামাত-বিএনপি নাকি এখনও ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা জানিয়েছে, জামাত-বিএনপির ইন্ধনে কোনও কারণ ছাড়াই প্রতিবাদ চলবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনের এক কো-অর্ডিনেটর আব্দুল কাদের। তিনি দাবি করেছেন, পুলিশ বন্দুকের মুখে অন্য কো-অর্ডিনেটরদের বন্দি করে আন্দোলন প্রত্যাহার করার ঘোষণা আদায় করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘কোটা আন্দোলনের নামে ছদ্মবেশে অনুপ্রবেশ জামাতের’, বিস্ফোরক হাসিনা]
এর প্রতিবাদে আজ সোমবার ওই পড়ুয়াদের সারাদেশে বিক্ষোভ ও সমাবেশের কর্মসূচি থাকলেও সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে না পেয়ে তা বানচাল হয়ে যায়। এর আগে ডিবি জানিয়েছে, হেফাজতে থেকেই সব ধরনের কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৬ কো-অর্ডিনেটর মহম্মদ নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহ, মহম্মদ আবু বাকের, আসিফ মাহমুদ ও নুসরাত তাবাসসুম। নিরাপত্তা দেওয়ার কথা বলে তাদের তুলে নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ।
ডিবি জানিয়েছে, মেট্রোরেল-সহ সরকারি স্থাপনায় হামলার পেছনে বিএনপি-জামাত জড়িত। মেট্রো স্টেশনে হামলার মাস্টারমাইন্ড ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু হান্নান তালুকদার। অন্য পড়ুয়াদের উসকে দিয়ে বিভিন্ন স্টেশনে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়েছে। দেশের গুরুত্বপূর্ণ কার্যালয়ে হামলার নেতৃত্ব দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদুল্লাহ হল শাখার ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইমাম আল নাসের (মিশুক)। এই কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর শাখার ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক বজলুল রহমান (বিজয়) ও ছাত্রদলের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতি মহম্মদ ফেরদৌসকে (রুবেল)।
এদিকে, সরকারী চাকরিতে কোটাবিরোধী আন্দোলনের হোতা হিসাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তথা খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক রহমানের নাম উল্লেখ করেছেন আওয়ামি লিগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বিদেশমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ। তিনি বলেন, বিদেশ থেকেই ছাত্রদের প্রতিবাদে হিংসা ছড়ানোর জন্য দলের নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন তারেক। এমনকী এনিয়ে খালেদাপুত্রের ভয়েস বার্তাও হাতে এসেছে হাসিনা সরকারের হাতে।