সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মহাকাশচারীদের (Astronauts) জীবনটা বড় অদ্ভুত। পৃথিবীর নিশ্চিন্ত ঘেরাটোপ ছেড়ে মহাকাশের অনন্ত শূন্যতার মধ্যে দিনের পর দিন কাটাতে হয় তাঁদের। আপাত ভাবে ব্যাপারটা রোমাঞ্চকর মনে হলেও, বাস্তব পরিস্থিতিটা মোটেই তা নয়। বরং দীর্ঘ সময় ধরে মহাকাশের (Space) জগতে থাকাটা রীতিমতো চ্যালেঞ্জিং। কেননা সেখানে প্রতিনিয়ত লড়াই চালাতে হয় অভিকর্ষহীনতার সঙ্গে। সেই সঙ্গে ওই শূন্যতার চাপ আলাদা করে বিষণ্ণতার বীজও কি বুনতে থাকে না? তেমনই এক প্রশ্ন এবার উঠে এল সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social Media)? মহাকাশচারীরা সারাক্ষণ কেন কাঁদেন না ভয়ে? এই প্রশ্নের নানা জনে নানা উত্তর দিলেও সেরা উত্তরটা দিয়েছেন এক অভিজ্ঞ মহাকাশচারীই।
কানাডার সেই মহাকাশচারীর নাম ক্রিস হ্যাডফিল্ড। তিনি জানিয়েছেন, ”ভয়ের সবচেয়ে বড় প্রতিষেধক হল দক্ষতা।” আসলে মহাকাশে পাঠানোর আগে মহাকাশচারীদের রীতিমতো কঠোর প্রশিক্ষণের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। সেই সময় শারীরিক ও মানসিক দু’ভাবেই তাঁদের প্রস্তুত করা হয় অন্তরীক্ষে দিনযাপনের জন্য।
ড্যানিয়েল ওয়েসবার্গ নামের এক তরুণী টুইট করে ওই প্রশ্নটি করার সঙ্গে সঙ্গে জানিয়েছেন, তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন মহাকাশের বুক থেকে ছিটকে পড়ছেন পৃথিবীতে। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায়, তাঁকে কথা বলতে হয় মনস্তত্ত্ববিদের সঙ্গেও।
[আরও পড়ুন: ইঞ্জেকশন নয়, এবার ট্যাবলেটই করোনার টিকা! নতুন সাফল্যের দাবি ভারতীয় সংস্থার]
পরে তিনি টুইটারে ওই পোস্ট করেন। যা ভাইরাল হতে সময় লাগেনি। অনেকেই তাঁকে উত্তর দিয়েছেন। একজন লিখেছেন, পৃথিবীতে মৃত্যু হওয়ার থেকে মহাকাশের অসীমকে ছুঁয়ে মৃত্যুবরণ অনেক বেশি আকর্ষণীয়। তিনি ব্যঙ্গ করে লেখেন, কোনও স্পেস অ্যাকসিডেন্টে মারা যাওয়া অনেক বেশি সুন্দর হাই কোলস্টেরলের কারণে মারা যাওয়ার থেকে।
আরেকজন লেখেন, মহাকাশচারীদের স্পেস স্টেশনে থাকার সময় অনেক কাজ করতে হয়। স্পেসওয়াক হোক কিংবা নানা বৈঠক, ব্যস্ততার মধ্যেই তাঁদের সময় কাটে। কান্নার কোনও সময় নেই মহাকাশচারীদের। এমনই নানা উত্তরের মধ্যে ক্রিস হ্যাডফিল্ডেরটাই সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ।
[আরও পড়ুন: আন্দামানে মিলল মারণ ছত্রাকের সন্ধান! হতে পারে পরের অতিমারীর কারণ, শঙ্কায় বিজ্ঞানীরা]
প্রসঙ্গত, কানাডার প্রথম নাগরিক হিসেবে মহাকাশে হাঁটাহাঁটি করার নজির গড়েছিলেন একদা পেশায় ইঞ্জিনিয়ার এই অবসরপ্রাপ্ত সিএসএ মহাকাশচারী। আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনের কমান্ডারের দায়িত্বে থাকা প্রবীণ এই মানুষটি নিজের অভিজ্ঞতায় জানেন, মহাকাশে দিনযাপনের কৌশল। এবার সেটাই তিনি ভাগ করে নিলেন সকলের সঙ্গে। ভয়কে অতিক্রম করলেই জয় পর্যন্ত পৌঁছনো যায়। জনপ্রিয় বিজ্ঞাপনের ক্যাচলাইনকে যেন নিজের উত্তরে মনে করিয়ে দিলেন তিনি। বুঝিয়ে দিলেন, মহাকাশ হোক বা পৃথিবী নিজের কাজের উপর দক্ষতা মানুষকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে।