কলহার মুখোপাধ্যায়, বিধাননগর: পুলিশের স্টিকার এবং নীল আলো লাগানো গাড়িতে করে যুবককে অপহরণ (Kidnap)। রাতভর নির্মম অত্যাচার হয় তাঁকে। এমনকী অকারণে গ্রেপ্তারির হুমকি দিয়ে তাঁর থেকে টাকা হাতানোর চেষ্টাও করা হয়। তবে সোমবার সাতসকালেই ঘটনার পর্দাফাঁস। সল্টলেকের (Saltlake) এই ঘটনায় আপাতত পুলিশের জালে তিন অভিযুক্ত। উদ্ধার অপহৃত যুবক।
সুকান্ত নগরের বাসিন্দা সোমনাথ সর্দারকে অপহরণ করা হয়েছিল। ঠিক কী ঘটেছিল, নিজেই সেকথা জানান সোমনাথ। তিনি বলেন, রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ সুকান্ত নগরের নবজ্যোতি ক্লাবের কাছে পাঁচ বন্ধু মিলে চায়ের দোকানের কাছে আসেন। সেই সময় পুলিশের স্টিকার সাঁটা একটি গাড়ি এসে দাঁড়ায়। ওই এসইউভি গাড়ি থেকে ২ যুবক নেমে আসে। তারা কার্যত সোমনাথ ও তাঁর বন্ধুবান্ধবদের দিকে ধেয়ে যান। কোনওক্রমে চার বন্ধু পালিয়ে যায়। তবে সোমনাথকে পাকড়াও করে ওই গাড়িতে তোলে দুই যুবক। তবে গাড়িতে উঠে সোমনাথ দেখেন আরও এক যুবক ভিতরে বসে রয়েছে। এরপর ব্রডওয়ে ধরে বিধাননগর দক্ষিণ থানার সামনে পৌঁছয় গাড়িটি। সেখানে গাড়ি দাঁড় করিয়ে একটি চড় মারা হয় যুবককে। নানারকম হুমকি দেওয়া হয়। তারপর গাড়িটি সেক্টর ফাইভের দিকে চলে যায়। গাড়িতে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধরও করা হয় সোমনাথকে। বিনা কারণে গ্রেপ্তারির হুমকি দিয়ে পাঁচ হাজার টাকা আদায়ের চেষ্টাও করা হয়।
[আরও পড়ুন: করোনা কালে সুরক্ষাবিধি মেনে ভাইফোঁটা উদযাপন বিশিষ্টদের, শুভেচ্ছাবার্তা মোদি-মমতার]
সারারাত অত্যাচারের পর ভোরের দিকে উইপ্রোর সামনে গিয়ে গাড়ি দাঁড় করানো হয়। সেই সময় চিংড়িঘাটার দিক থেকে একটি পুলিশের টহলদারি গাড়ি আসতে দেখেন সোমনাথ। চিৎকার করতে শুরু করেন তিনি। পুলিশ কাছে এগিয়ে আসার পর গাড়ি থেকে নেমে পড়েন সোমনাথ। তা দেখে হতচকিত হয়ে যায় গাড়িতে থাকা তিন যুবক। তড়িঘড়ি গাড়ির গায়ে লাগানো পুলিশ স্টিকার খুলতে শুরু করে তারা। তবে পুলিশ তিনজনকে হাতেনাতে পাকড়াও করে। ধৃতরা হল বছর সাতাশের সুমন চক্রবর্তী। সে নারকেলডাঙা মেন রোডের বাসিন্দা। বছর তিরিশের অরূপ আচার্য ও সুকান্ত সাহা সুকান্ত নগরের বাসিন্দা। ওই গাড়িটি থেকে মদের বোতল এবং লাঠি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ধৃতদের জেরা করছে পুলিশ। অপহৃত যুবকের শারীরিক পরীক্ষাও করা হয়েছে।