অর্ণব দাস, বারাকপুর: পারিবারিক অশান্তির জের। তার জেরেই প্রকাশ্য রাস্তায় গৃহকর্তাকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে ও এক আত্মীয়ের বিরুদ্ধে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রবল শোরগোল উত্তর ২৪ পরগনার নৈহাটিতে। পারিবারিক অশান্তির জেরেই এই ঘটনা? নাকি নেপথ্যে অন্যরহস্য? খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নৈহাটি পুরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের ৪ নম্বর বিজয়নগর এলাকার বাসিন্দা পেশায় মিল শ্রমিক বাপি শর্মা কাজের অবসরে টোটো চালাতেন। পরিবারে স্ত্রী, একছেলে ও একমেয়ে থাকলেও কারও সঙ্গেই তাঁর বনিবনা ছিল না। স্ত্রীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের সন্দেহে দীর্ঘ ঝামেলার কারণে বেশ কয়েক বছর ধরে স্ত্রী সন্ধ্যা আলাদা থাকে। ছেলে ও মেয়ে বাবার সঙ্গে থাকলেও নানান কারণে তাদের সঙ্গেও প্রায়ই বাপির ঝামেলা হত বলে অভিযোগ। রবিবারও একই ঘটনা ঘটেছিল। স্থানীয় বাসিন্দা তুষার ঘোষের কথায়, "স্বামী স্ত্রীর দীর্ঘদিনের অশান্তি। ও (বাপি) বরাবরই বলত স্ত্রী অন্য কারও সঙ্গে মেলামেশা করে। গতকাল দুপুরে বাপি যখন বাড়িতে আসে তখন মেয়ে কয়েকজন ছেলের সঙ্গে ঘরে আড্ডা দিচ্ছিল। এই কারণে প্রথমে বাবা মেয়ের মধ্যে গণ্ডগোল হয়। রাতে বাপি বাড়িতে ঢোকেনি শুনেছি। তার পর সকালে শুনি এই ঘটনা।"
অভিযোগ, গণ্ডগোলের রেশেই এদিন সকালে প্রকাশ্য রাস্তায় বাপিকে পিটিয়ে খুনি করে পরিবারের সদস্যরা। প্রত্যক্ষদর্শী রাজু সাহা জানিয়েছেন, "বাপি আমাদের সঙ্গেই সাহেব কলোনি মোড়ের স্ট্যাণ্ডে টোটো চালাত, মিলেও কাজ করত। এদিন ভোর পৌনে পাঁচটা নাগাদ বাপি টোটো নিয়েই দাঁড়িয়ে ছিল। তখন স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে ও আরেকজন মহিলা মিলে হঠাৎ ওকে মারতে শুরু করে। রড, বাঁশ দিয়ে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেয়। তখন আমি একা ছিলাম, ঠেকাতে গিয়ে আমিও মার খাই। রক্তাক্ত অবস্থায় স্ট্যান্ডের টোটো চালকেরা ও স্থানীয়রা বাপিকে উদ্ধার করে প্রথমে নৈহাটি স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।"