সৌরভ মাজি, বর্ধমান: এবার চিনা আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানালেন কালনার এক প্রতিমা শিল্পী। দুর্গামূর্তি তৈরিতে চিনা পণ্য বয়কট করলেন তিনি। বদলে বেছে নিয়েছেন দেশীয় উপাদান। খেজুরের বীজ থেকে লাউ-কুমড়োর বীজ, কাঠের গুঁড়ো, তাল আঁটির ছাল, বটগাছের ঝুরির মত উপকরণ দিয়েই মূর্তি তৈরি করছেন বছর সাতাশের অরিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। মেমারির এক মণ্ডপের শোভা বাড়াবে ওই প্রতিমা।
খুব ছোট থেকেই ফেলে দেওয়া জিনিস বা বর্জ্য উপকরণ ব্যবহার করে শিল্পকর্মের নেশা অরিজিতের। প্রতিভা দেখে অনেক পুজো (Durga Puja 2020) উদ্যোক্তা তাঁর কাছে ভিন্ন ধারার প্রতিমা গড়ার আরতি জানান। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে কালনার বিখ্যাত সরস্বতী প্রতিমা গড়া দিয়ে শুরু। তারপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। কালনা ছাড়িয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে এখন সরস্বতী ছাড়াও কালী, দুর্গা-সহ বিভিন্ন প্রতিমা গড়ারও ডাক পান তিনি। বিগত বছরগুলিতে কখনও ব্লেড দিয়ে কখনও বিস্কুট দিয়ে প্রতিমা গড়ে তাঁক লাগিয়েছেন। আবার কখনও কয়েন, ইট দিয়েও বানিয়েছেন প্রতিমা। ধূমপানের বিরুদ্ধে সচেতনতার থিমে বিড়ি-সিগারেট ব্যবহার করেও প্রতিমা গড়েছেন অতীতে।
[আরও পড়ুন: ‘উৎসবের আবেগ নিয়ে খেলছে সরকার’, অনুদান ইস্যুতে মমতাকে বিঁধলেন সুজন-দিলীপ]
এবার দেশপ্রেমের বার্তা দিতে চিনা পণ্য বর্জন করে বানিয়েছেন মা দুর্গা। চামচ, কাঠি, পাট, পাটের সুতো,
পাট কাঠি, লাউ ও কুমড়োর বীজ, তালের আঁটির ছাল ছোবরা, কাঠের গুঁড়ো, খেজুরের বীজ, বটগাছের ঝুরি,
শামুক, ঝিনুক-সহ ২৫ রকম প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে প্রতিমা গড়েছেন এবার। প্রায় ১ মাস ধরে নিরলস
পরিশ্রমে পূর্ণতা পেয়েছে শিল্পকর্ম। ১০ ফুট উচ্চতার প্রতিমা এবার দর্শনার্থীদের অপেক্ষায়। এই কাজে অরিজিৎবাবুকে বরাবর সহায়তা করেন তাঁর স্ত্রী সুমনা গঙ্গোপাধ্যায়। মেমারির হাটপুকুর সর্বজনীনে
শোভা পাবে এই প্রতিমা। অরিজিৎবাবু বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে চিনা পণ্য সকলের বয়কট করা উচিত। আমি চুমকি-সহ বিভিন্ন চিনা উপকরণ বর্জন করে সম্পূর্ণ দেশী ও প্রাকৃতিক উপাদানে প্রতিমা গড়েছি এবার। বিসর্জনের পরেও ওই উপকরণ থেকে দূষণেরও সম্ভাবনা নেই।” বিশেষ এই প্রতিমা দেখার অপেক্ষায় কালনাবাসী।
ছবি: মোহন সাহা।