সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা আবহেও পাকিস্তানে (Pakistan) থামছে না হিন্দু নির্যাতন। এবারও শিরোনামে সেই সিন্ধ প্রদেশ। অভিযোগ, আরতি চাওলা নামের এক হিন্দু তরুণীকে অপহরণ করে ধর্মান্তরিত করা হয়েছে। এবং সব জেনেও নিরব দর্শকের ভূমিকায় রয়েছে পুলিশ ও প্রশাসন।
[আরও পড়ুন: যুবরাজ ফিলিপের শেষকৃত্যে আসছেন না মেগান, তবে থাকবেন হ্যারি]
জানা গিয়েছে, কয়েকদিন আগে আরতি নামের ২২ বছরের ওই তরুণীকে অপহরণ করে মহম্মদ ফাওয়াদ নামের এক ব্যক্তি। তারপর ওই তরুণীকে সিন্ধ প্রদেশের লারকানা শহরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই জোর করে ধর্মান্তরিত করে আরতির নাম দেওয়া হয় আয়েষা। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, নিজের পরিবারের সদস্যদেরও চিনতে পারছেন না ওই তরুণী বলে অভিযোগ। আর এই গোটা ঘটনায় পুলিশ ও প্রশাসন কোনও হস্তক্ষেপ করছে না। পাকিস্তানের সংখ্যালঘু সংগঠন ‘All Pakistan Hindu Panchyat’-এর ফেসবুক পোস্টে দাবি করা হয়েছে, গত দু’মাসে আয়েষা-সহ অন্তত ৮ জন হিন্দু তরুণীকে অপহরণ করে ধর্মান্তরিত করা হয়েছে। বারবার অপহরণ, ধর্ষণ ও হত্যার মতো ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্কিত সে দেশের হিন্দুরা। ইসলামিক দেশটির প্রধান বিরোধী দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ (নওয়াজ)-এর সাংসদ খেল দাস কোহিস্তানি ক্ষোভপ্রকাশ করে বলেন, “পাকিস্তানে মেয়েদের অপহরণ ও ধর্মান্তরণের ঘটনায় সংখ্যালঘু হিন্দুরা আতঙ্কিত ও বিরক্ত। সবচেয়ে খারাপ বিষয়টি হল যে এসব ঘটনায় পুলিশ নিরব দর্শক হয়ে থাকে।”
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই পাক হিন্দুদের নিপীড়নের বিরুদ্ধে সরব হয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে একটি চিঠি দেয় ‘হিন্দু ফোরাম অফ ব্রিটেন’। এই ফোরামের ছত্রছায়ায় রয়েছে বেশ কয়েকটি ব্রিটিশ হিন্দু সংগঠন। চিঠিতে বলা হয়েছে, “পাকিস্তানের সংখ্যালঘু হিন্দু নাগরিকরা খুব সমস্যার মধ্যে রয়েছেন। নানা অত্যাচার ও অবিচারের শিকার হচ্ছেন তাঁরা। ক্রমে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। এই অবস্থা থেকে হিন্দুদের রক্ষা করতে দ্রুত ও কার্যকরী ব্যবস্থার দাবি জানাচ্ছি।” জনসনের কাছে হিন্দু সংগঠনগুলির আবেদন, অবিলম্বে একটি উচ্চপর্যায়ের সরকারি কমিটি তৈরি করা হোক। সেই কমিটি পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার নিয়ে তদন্ত করবে। রাষ্ট্রসংঘের নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক দেশগুলিকে নিয়ে একইভাবে তদন্তের দাবি তুলেছেন সংগঠনগুলির কর্তারা। তাঁদের বক্তব্য, যেভাবেই হোক গণহত্যা, অত্যাচার-অবিচার থেকে সংখ্যালঘুদের রক্ষা করতে হবে। সংগঠনের সদস্যরা অভিযোগের আঙুল তুলেছেন পাকিস্তানের কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে। নির্দিষ্ট করে কোনও নাম উল্লেখ না করলেও বরিস জনসনকে লেখা চিঠিতে তাঁরা জানিয়েছেন, জনমানসে হিন্দু বিদ্বেষ তৈরি করতে পাকিস্তানের কিছু প্রভাবশালী মানুষ সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছে।