সোমনাথ রায় ও গোবিন্দ রায়: বিচারাধীন বিষয়ে সাক্ষাৎকার দেওয়ার জের। নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলা সরে গেল বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Justice Abhijit Ganguly) হাত থেকে। শুক্রবার চাঞ্চল্যকর রায় দিল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি পি নরসিংহের ডিভিশন বেঞ্চ। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বদলে এই মামলায় অন্য বিচারপতি নিয়োগের নির্দেশ দেওয়া হল কলকাতা হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে।
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে বেসরকারি সংবাদমাধ্যমে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। অভিযোগ, ওই সাক্ষাৎকারে একাধিক বিচারাধীন বিষয় নিয়ে মন্তব্য করেছেন তিনি। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের করা এক মামলায় এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন আইনজীবীরা। বিষয়টি নজরে আসতেই হাই কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে এ বিষয়ে রিপোর্ট তলব করেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় (DY Chandrachud)।
[আরও পড়ুন: ‘হুজুর, ওটা ফলস কেস! এবার CBI মামলায় আমায় জামিন দিয়ে দিন’, কাতর আরজি অনুব্রতর]
শুক্রবার হাই কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সেই সাক্ষাৎকারের তর্জমা জমা দেন সুপ্রিম কোর্টে। শীর্ষ আদালত সেই সাক্ষাৎকার খতিয়ে দেখার পর জানিয়ে দিয়েছে, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় আর নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলা শুনতে পারবেন না। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি পি নরসিংহের ডিভিশন বেঞ্চ কলকাতা হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে এই মামলার জন্য নতুন বেঞ্চ গঠনের নির্দেশ দিয়েছে। তবে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের অধীনে থাকা সব মামলা সরানো হল, নাকি শুধু অভিষেকের মামলা সরানো হল, সেটা অর্ডার কপি হাতে না আসা পর্যন্ত স্পষ্ট হবে না।
[আরও পড়ুন: ইডির আবেদনে সাড়া, ১৯ জুন পর্যন্ত হেফাজতে শিক্ষা দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার কুন্তল ঘোষ]
শুরু থেকেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় রাজ্যের নিয়োগ দুর্নীতির মামলাগুলি শুনছিলেন। গত এক দেড় বছরে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলাগুলিতে তাঁর দেওয়া রায়েই প্রকাশ্যে এসেছে একের পর এক দুর্নীতি। গ্রেপ্তার হতে হয়েছে রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে (Partha Chatterjee)। জেল খাটছেন শাসকদলের একাধিক বিধায়ক। আরও একাধিক তৃণমূল নেতা কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের র্যাডারে। বস্তুত অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দেওয়া একাধিক রায়কে রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসাবেও ব্যবহার করছে বিরোধীরা। এবার সেই বিচারপতিকেই সরে যেতে হল নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলা থেকে।