সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ওয়াকফ আইনের পর এবার কি শরিয়ত প্রভাবমুক্ত হবে মুসলিমদের উত্তরাধিকার আইনও? সেই সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে খোদ সুপ্রিম কোর্ট। এই ধরনের কোনও আইন হলে তাতে আপত্তি নেই কেন্দ্রেরও। সে ইঙ্গিত মিলল কেন্দ্রের তরফেও।
আপাতত ভারতীয় মুসলিমদের উত্তরাধিকারী নির্ধারিত হয়, মুসলিম পার্সোনাল ল' অর্থাৎ শরিয়ত আইন অনুযায়ী। শরিয়তে যে ভাবে বাবা-মায়ের সম্পত্তির বিন্যাসের নিয়ম রয়েছে সেটা ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ আইনের থেকে অনেকটাই আলাদা। শরিয়ত অনুযায়ী, মুসলিম কন্যা সন্তানরা পুত্র সন্তানদের অর্ধেক সম্পত্তি পান। আবার কারও একটি মাত্র কন্যা সন্তান থাকলে সেই কন্যা সন্তান পিতার সব সম্পত্তি উত্তরাধিকার সূত্রে পান না। এবার মুসলিম সম্প্রদায়েরই একটা অংশ থেকে এই 'অসাম্যে'র আইনের বেড়াজাল টপকে বেরিয়ে আসতে চাইছেন।
সম্প্রতি কেরলের ত্রিশূরের বাসিন্দা নৌশাদ কে কে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছেন, তাঁর উত্তরাধিকারী ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ আইন অনুযায়ী নির্ধারণ করা হোক। ওই ব্যক্তির দাবি, ইসলাম ধর্মের বিশ্বাস অক্ষুণ্ণ রেখেও উত্তরাধিকার আইনে বদল আনা সম্ভব। অন্তত তাঁর ক্ষেত্রে সেটাই করা হোক। গত বছর এপ্রিল মাসেও একই ধরনের একটি মামলা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। সাফিয়া পি এম নামের কেরলেরই এক বাসিন্দা দাবি করেছিলেন, তিনি ধর্মভীরু মুসলিম নন। ইসলামের রীতিনীতি মেনে চলেন না। তাই তাঁর উত্তরাধিকারী নির্ধারিত হওয়া উচিত ধর্মনিরপেক্ষ ভারতের আইন অনুযায়ী।
এই আবেদনগুলির ভিত্তিতেই সুপ্রিম কোর্ট খতিয়ে দেখতে চাইছে, আদৌ মুসলিমদের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত না করে কোনওভাবে শরিয়ার বাইরে গিয়ে ধর্মনিরপেক্ষ আইনে মুসলিমদের উত্তরাধিকারী নির্ধারণ করা যায় কিনা? এই মামলাগুলি নিয়ে কেন্দ্র ও কেরল সরকারের অবস্থান জানতে চেয়েছে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ। কেন্দ্রের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতা বলে দিয়েছেন, বিষয়টি বেশ আগ্রহবর্ধক। বিচারব্যবস্থার উচিত বিষয়টি খতিয়ে দেখা।
