সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: নয়া ওয়াকফ আইনে স্থগিতাদেশ দিল না সুপ্রিম কোর্ট। তবে সংশোধনীর দু'টি বিতর্কিত ক্ষেত্র-ওয়াকফ বাই ইউজার সম্পত্তির চরিত্র বদল এবং ওয়াকফ বোর্ডে অমুসলিম সদস্য নিয়োগ নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত নিল শীর্ষ আদালত। আগামী শুনানি পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে। সাতদিনের মধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে নিজেদের জবাব জানাবে কেন্দ্র।
প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, যেসব সম্পত্তি ব্যবহারে ওয়াকফ বা ওয়াকফ ব্যবহারকারী (ওয়াক্ফ-বাই-ইউজার) হিসেবে নিবন্ধিত বা নোটিফিকেশনের মাধ্যমে ঘোষিত হয়েছে — তাদের চরিত্র বদল করা যাবে না। রাজ্যের ওয়াকফ বোর্ড বা ওয়াকফ কাউন্সিলে অমুসলিম সদস্যপদে কোনও নিয়োগ হবে না। ৫ মে পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত এই নির্দেশিকা কার্যকর থাকবে। এদিকে আগামী সাতদিনের মধ্যে কেন্দ্রকে হলফনামা দাখিল করে জবাব দিতে হবে।
বুধবারের শুনানিতে কেন্দ্রীয় সরকারকে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। ১৯৪০ সাল থেকে 'ভোগদখলকরী ওয়াকফ' রয়েছে। নয়া সংশোধনী কার্যকর হলে সেই সমস্ত সম্পত্তির কি চরিত্র বদল করা হবে? ওয়াকফ বোর্ডে অমুসলিম সদস্য থাকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে শীর্ষ আদালত। তাদের মন্তব্য, হিন্দু মন্দির বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠান দেখাশোনার বোর্ডে অন্য সম্প্রদায়ের কেউ থাকে না। সওয়াল চলাকালীনই বিচারপতিদের বেঞ্চের তরফে বলা হয়, হিন্দু ধর্মের সম্পত্তি দেখভাল করার বোর্ডে তো অন্য ধর্মাবলম্বীরা থাকেন না। উদাহরণ হিসাবে তিরুপতি বোর্ডের উল্লেখ করেন বিচারপতি কুমার। কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাকে প্রধান বিচারপতি জিজ্ঞাসা করেন, তাহলে কি হিন্দু ধর্মের ট্রাস্টগুলিতে মুসলিমদের সদস্যপদ দেবে কেন্দ্র? এই সমস্ত প্রশ্নের জবাব দেওয়ার জন্য সাতদিন সময় চেয়েছে কেন্দ্র। তবে এই সময়কালের মধ্যে ওয়াকফ বাই ইউজার সম্পত্তির চরিত্র বদলাবে না। ওয়াকফ কাউন্সিল বা বোর্ডে নিয়োগ করা যাবে না।
ওয়াকফ সংশোধনী আইন মুসলিম স্বার্থবিরোধী বলে অভিযোগ তুলে বড়সড় আন্দোলনের পথে হেঁটেছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একটা বড় অংশ। দেশজুড়েই বিক্ষোভের আঁচ ছড়িয়ে পড়েছে। নয়া ওয়াকফ আইনের বিরোধিতার জল গড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্টেও। ইসলামিক সংগঠন তো বটেই, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তরফেও একগুচ্ছ মামলা দায়ের হয়েছে।