সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: রবিবার রাত থেকে সোমবার দুপুর পর্যন্ত সাগরদ্বীপ-সহ সুন্দরবন ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ অংশে তাণ্ডব চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড় 'রেমাল' (Remal)। দক্ষিণ ২৪ পরগণায় মৃত্যুও হয়েছে দুই মহিলার। বহু মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন ত্রাণ শিবিরে। এই অবস্থায় সোমবার নিজের কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারে পূর্বনির্ধারিত রাজনৈতিক কর্মসূচি বাতিল করে দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ান এই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী তথা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। অটোয় চেপে পৌঁছে যান ত্রাণ শিবিরে।
এদিন ছিল ডায়মন্ড হারবার লোকসভার অধীন ফলতা বিধানসভার জোড়া বটতলা থেকে নতুন রাস্তার মোড় পর্যন্ত ছিল তাঁর রোড শো। দুর্যোগের কারণে সেই কর্মসূচি বাতিল করেন অভিষেক। ঝড়ে এলাকার ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করেন।
[আরও পড়ুন: হাড়-মাংস আলাদা, আধখানা কাটা মাথা, বাংলাদেশের সাংসদ খুন যেন থ্রিলার!]
মথুরাপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত নামখানা ব্লকের মৌসুনি দ্বীপে রেমালের তাণ্ডবে ঘরের চালে গাছ পড়ে মারা যান আশি বছরের বৃদ্ধা রেণুকা মন্ডল। খবর শোনা মাত্রই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ফোনে কথা বলেন মথুরাপুর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী বাপি হালদারের সঙ্গে। বাপি হালদার তখন মথুরাপুর ১ নম্বর ব্লকের নালুয়ায় রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ছিলেন। মথুরাপুরের তৃণমূল প্রার্থীকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দেন সমস্ত কর্মসূচি বন্ধ রেখে মৌসুনি দ্বীপে মৃত বৃদ্ধার পরিবারের পাশে দাঁড়াতে। নির্দেশ পাওয়া মাত্রই বাপি হালদার কর্মসূচি বাতিল করে প্রায় ৯০ কিলোমিটার দূরে মৃতার বাড়িতে যান। বাপি হালদার মৃতার পরিবারকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের সমবেদনার বার্তা দিয়ে জানান, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং এবং তিনি ও তৃণমূল কর্মীরা সবসময় তাঁদের পরিবারের পাশে থাকবেন। তাঁদের উদ্বিগ্ন না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। মহেশতলার নুঙ্গিতে বিদ্যুতের ওভারহেড তার ছিঁড়ে বাড়ির সামনেই জমা জলে পড়ে থাকায় সেখানে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়, ৫৩ বছরের তাপসী দাসের। মহেশতলা পুরসভার ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অলকা মাইতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে মৃত মহিলার বাড়িতে যান ও শোকার্ত পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন।
[আরও পড়ুন: আরও বাড়ল গরমের ছুটি, কবে খুলবে স্কুল?]
এদিন সন্ধ্যেয় বিষ্ণুপুর ২ নম্বর ব্লকের চক এনায়েত নগর ও চন্ডী গ্রাম পঞ্চায়েতের দুটি রিলিফ ক্যাম্প পরিদর্শন করেন অভিষেক। সেখানে আশ্রয় নেওয়া মানুষজনের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এদিন প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী দুর্গত এলাকাগুলি সম্পর্কে খোঁজখবর নেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। চণ্ডী পঞ্চায়েতের রিলিফ ক্যাম্পে ৫০ জন এবং চক এনায়েত নগর রিলিফ ক্যাম্পে ৪৮ জন মানুষ রয়েছেন। তাদের শুকনো খাবার এবং রান্না করা খাবার দেওয়া হচ্ছে। রিলিফ ক্যাম্পে থাকা মানুষজনের সঙ্গে কথা বলে অভিষেক তাঁদের ক্ষয়ক্ষতির কথা জানতে চান। উদ্বেগের কোনও কারণ নেই, তৃণমূল সবসময় সাধারণ মানুষের পাশে রয়েছে সেই বার্তাও দেন তিনি।