সুকুমার সরকার, ঢাকা: খুনের (Murder) পর নিজেদের অপকর্ম গোপন করতে আজব শপথ আততায়ীদের! এক অভিযুক্তের সন্তানের মাথায় হাত রেখে বাকিরা শপথ করলেন, ”ধরা পড়লেও খুনের কথা কবুল করব না।” আর এই শপথের কারণেই খুনের ঘটনার পর অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করলেও কিনারা করতে তদন্তকারীদের এক সপ্তাহেরও বেশি সময় লেগে গেল। ঘটনাস্থল বাংলাদেশের (Bangladesh) রাজশাহীর কাঁকনহাট এলাকা। সেখানে এক ভ্যানচালককে খুন করে ভ্যানের ব্যাটারি লুট করে তিন দুষ্কৃতী। খবর পেয়ে তদন্তে নামার পর দুজন ধরা পড়লেও আরেকজনের খোঁজ পাচ্ছিল না পুলিশ। অপরাধীদের আজব শপথই এর কারণ। যদিও শেষমেশ পুলিশের চাপে সব কবুল করে তারা। তৃতীয় ব্যক্তিও ধরা পড়ে। রাজশাহীর (Rajshahi) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারের বক্তব্য, এমন অদ্ভুত মনোস্তত্বের অপরাধী তিনি আগে দেখেননি।
ঘটনা গত ২৮ অক্টোবরের। রাজশাহীর কাঁকনহাট পৌর এলাকায় রিয়াজুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি খুন হন। তিনি পেশায় ভ্যানচালক। খবর পেয়ে তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, রিয়াজুলের ভ্যান থেকে ব্যাটারি (Battery) উধাও। তখনই প্রাথমিকভাবে পুলিশ অনুমান করে, ব্যাটারি চুরির জন্যই তাঁকে খুন করা হতে পারে। নিহত রিয়াজুলের বাড়িতে তদন্তে গেলে পরিবারের সদস্যরা এ বিষয়ে কোনও ইঙ্গিত দিতে পারেননি।
[আরও পড়ুন: লোকসভায় ভালো ফলের আশা নেই! ঘুরে দাঁড়ানোর পথ খুঁজতে ‘দিশাহীন’ আলিমুদ্দিন]
এর পর রাজশাহীর অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ACP) সনাতন চক্রবর্তী জানান, রিয়াজুলের বন্ধুস্থানীয় আরিফের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহের জন্য তাকে আটক করা হয়। কিন্তু তাকে জেরা করে কিছুই জানা যাচ্ছিল না। অনেক চাপের পর সজীব নামে এক ব্যক্তির নাম মেলে। পুলিশ সজীবকেও আটক করে। কিন্তু তার পরও কিছুতেই ঘটনার কিনারা করা যাচ্ছিল না। দুজনের দু রকম বয়ান নিয়ে বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন তদন্তকারীরা। আরিফ জানায়, তারা দুজন মিলেই খুন করেছিল। আবার সজীব বারবার বলছিল, তিনজন জড়িত খুনের ঘটনায়।
[আরও পড়ুন: জমি বিবাদের জের নাকি অন্য কিছু? মুর্শিদাবাদে গুলিবিদ্ধ মৎস্যজীবী]
শেষমেশ পুলিশই তদন্ত করে সাকিল নামের আরেকজনের খোঁজ পায়। তাকে গ্রেপ্তারের পর জানা যায় অদ্ভুত শপথের কথা। রাজশাহীর অতিরিক্ত এসপি সনাতন চক্রবর্তী জানান, অপরাধীদের এমন অদ্ভুত মনোস্তত্ব তিনি আগে কখনও দেখেননি। আর এদের শপথের কারণেই ভ্যানচালকের খুনের কিনারা করতে এতটা দেরি হল।