সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নাহ, ভোটে জিতে হিমাচলের মাণ্ডির সাংসদ হলেও, মন্ত্রীত্ব কপালে জোটেনি কঙ্গনার। অনেকে অবশ্য ভেবেছিল এত বিতর্কের পর, রেকর্ড সংখ্যক ভোট পেয়ে কঙ্গনা হয়তো কোনও একটা মন্ত্রীত্ব পাবে। তবে আপাতত সে গুড়ে বালি। তা বলে কি আর নিদান দেওয়ার ভাবনা চিন্তা থেকে দূরে থাকবেন বলিউডে ঠোঁটকাটা নায়িকা? থাকলেনও না। ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করে দেশের কর্ম সংস্কৃতি পরিবর্তনের কথা বললেন কঙ্গনা। কঙ্গনার কথায়, উইকএন্ড আনন্দ করে, সোমবার অফিসে যেতে নিমরাজি ভাবনা, আমাদের দেশে বিলাসিতা। যা কিনা একটা উন্নয়নশীল দেশের পক্ষে একেবারেই সমর্থনযোগ্য নয়।
কঙ্গনার তাঁর ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে আরও লিখলেন, ''উইকএন্ডের অপেক্ষা। আনন্দে মত্ত হওয়া। তার পর মানডে ব্লু অর্থাৎ সোমবার কাজে মনযোগ না থাকা। এগুলো একেবারেই পাশ্চত্যের চিন্তা ভাবনা। উন্নত দেশগুলি এমনটা ভাবতে পারে। আমরা নই। তাই অধিকমাত্রায় কাজ করা আমাদের কর্ম সংস্কৃতির অঙ্গ হওয়া উচিত।''
[আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক সমীক্ষায় দূষণমুক্তিতে দ্বিতীয় কলকাতা, নিন্দুকদের তোপ ফিরহাদের]
বলিউডে লড়েছিলেন নেপোটিজমের বিরুদ্ধে। রাজনীতিতে এসেও সেই নেপোটিজমের সঙ্গেই লড়তে হয়েছিল তাঁকে। তবে দেখা গেল, যে কোনও নেপোটিজমের বিরুদ্ধেই তিনি লড়াইয়ে দড়। অতএব মাণ্ডিতেও শেষ হাসি হাসলেন বলিউডের ‘ক্যুইন’ কঙ্গনা রানাওয়াত।
জয়ের পর সাংবাদিক বৈঠকে কঙ্গনা বলেন, ''এই দিনটা আমার জন্য বিশেষ দিন। প্রার্থী হিসেবে এটা আমার প্রথম নির্বাচন ছিল। যেহেতু রাজনীতিতে প্রথম, সেহেতু নানা অনিশ্চয়তা ছিল। এটা আমার প্রথম জয়ও। আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই আমার দলীয়কর্মীদের। নেতা জয়রাম ঠাকুরজিকে। যিনি প্রথম থেকে আমার পাশে ছিলেন। আমাদের সব বিধায়কদেরও ধন্যবাদ। তবে মাথানত করে ধন্যবাদ জানাই মাণ্ডির সমস্ত মানুষকে। মাণ্ডিকন্যা, মাণ্ডির বোন কঙ্গনাকে এত ভালোবাসা দিয়েছে। মাণ্ডির সেনা হিসেবে মাণ্ডিকে রক্ষা করব। বিকাশ করব। ”
‘খাঁটি দেশপ্রেমিক’ হিসাবে তিনি নিজেকে আগেই চিনিয়ে দিয়েছেন। এমনকী তাঁর জন্য বলিউডের হুজ-হু’র সঙ্গে লড়াই করতেও দ্বিধা করেননি। তাঁর খেসারত দিতে হয়েছে তাঁকে। তবে ঠোঁটকাটা কঙ্গনা অকুতোভয়। কোনও রকম লড়াই লড়তেই তিনি পিছপা নন কখনও। রাজনীতিতে এসেও তাঁর ব্যতিক্রম হল না। মান্ডির ভোটের অঙ্কটা এবার মোটেও সরল ছিল না। লড়াইটা হয়ে দাঁড়িয়েছিল আত্মপ্রতিষ্ঠা বনাম আত্মরক্ষার। রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা বনাম রাজনৈতিক অস্তিত্বরক্ষার। সেই লড়াইয়ের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছিল খোদ কঙ্গনা। তাঁর প্রবল প্রতিপক্ষ ছিলেন মান্ডির ‘রাজাসাহেব’ বিক্রমাদিত্য সিং। মান্ডির প্রয়াত রাজা বীরভদ্র সিংয়ের পুত্র। বীরভদ্র সিং হিমাচলের রাজনীতিতে কিংবদন্তি। বহুবার মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। হিমাচলে ‘বীরভদ্র মডেল’ বেশ জনপ্রিয়ও। যার সুফল সবচেয়ে বেশি পেয়েছে মান্ডিই। বিক্রমাদিত্যর বয়স মোটে ৩৩। ধারেভারে রাজনীতিতে তিনি অনেকটাই এগিয়ে। কঙ্গনার জন্য মান্ডির লড়াই ছিল রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠা পাওয়ার। কিন্তু বিক্রমাদিত্যর জন্য লড়াইটা নিজেদের রাজনৈতিক অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার। এই আবহে অভিষেকেই ব্লকবাস্টার পারফরমেন্সের নমুনা রাখা সহজ নয়। কঙ্গনা পারলেন।