গোবিন্দ রায়: নির্বাচন কমিশনের পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণা নিয়ে বিরোধীরা যে আদালতে যেতে পারে, সে জল্পনা ছিলই। হলও তাই। রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং অনলাইনে মনোনয়নের দাবি নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী (Adhir Ranjan Chowdhury)। মামলা দায়ের করার হুমকি দিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
আগামী ৮ জুলাই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট (Panchayat Election)। ফলপ্রকাশ ১১ জুলাই। শুক্রবার থেকেই শুরু হয়ে যাচ্ছে মনোনয়ন পেশ। বৃহস্পতিবারই সরকারিভাবে ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করেছেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা। ভোটে নিরাপত্তার দায়িত্বে যে রাজ্য পুলিশেই আস্থা রাখতে চলেছে কমিশন, মিলেছে সে ইঙ্গিতও। সেটাতেই মূল আপত্তি বিরোধীদের। দীর্ঘদিন ধরেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর তত্ত্বাবধানে ভোট করার দাবি জানিয়ে আসছে বিরোধীরা। সেই দাবিতেই এবার আদালতে গেলেন অধীর।
[আরও পড়ুন: ৮ জুলাই একদফায় রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট, দিনক্ষণ জানালেন নির্বাচন কমিশনার]
তাঁর দাবি, পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হবে। মনোনয়নপত্র যাতে অনলাইনে পেশ করা যায়, সেই বন্দোবস্ত করতে হবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে। পাশাপাশি BDO বা মহকুমাশাসকের কাছে মনোনয়নপত্র পেশ করতে সমস্যা হলে সেটা যেন রাজ্য নির্বাচন কমিশন বা জেলা বিচারকের কাছে পেশ করার সুযোগ মেলে, সেই আরজিও জানানো হয়েছে মামলায়। প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করে শুক্রবারই মামলা দায়েরের আবেদন করেছেন কংগ্রেস নেতা তথা আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী। অধীর একা নন, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও (Suvendu Adhikari) মামলা দায়ের করতে চলেছেন বলে সূত্রের খবর। শোনা যাচ্ছে, শুভেন্দু কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের পাশাপাশি মনোনয়ন জমার সময়সীমা বাড়ানোর আরজিও জানাতে চলেছেন। আদালত মামলা দায়েরর অনুমতিও দিয়েছে।
[আরও পড়ুন: পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী দাবি বিরোধীদের, রাজ্য পুলিশের উপর আস্থা রাখার বার্তা কমিশনারের]
বস্তুত, দ্রুততার সঙ্গে নির্বাচন কমিশন পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণা করে দেওয়ায় খানিকটা হলেও অপ্রস্তুতে রাজ্যের বিরোধী শিবির। কমিশনকে কার্যত এক সুরে নিশানা করে চলেছে বাম-কংগ্রেস বিজেপি। বৃহস্পতিবারই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, “পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্রের মৃত্যু হল। সর্বদল বৈঠক নেই, নিরাপত্তা নিয়ে কোনও আলোচনা নেই, অথচ দিন ঘোষণা হয়ে গেল। রাজ্য নির্বাচন কমিশনার তৃণমূলের আঞ্চলিক শাখার মতো আচরণ করছে।” বিজেপির সহ পর্যবেক্ষক অমিত মালব্যও টুইট করে বলেছেন, “মাত্র ৬ দিন ৪ ঘণ্টা করে মনোনয়ন দেওয়ার সময়সীমা। অথচ, মনোনয়ন দিতে হবে প্রায় ৭৪ হাজার আসনে। এর চেয়ে বিনা ভোটে ফলাফল ঘোষণা করে দিতে পারতেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।” যদিও তৃণমূল বলছে, ভোট হচ্ছে যথাসময়ই। আসলেই বিরোধীদের প্রার্থী নেই। সেকারণেই যত আপত্তি।