বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত ও সুমিত বিশ্বাস: ঝালদা পুরসভা নিয়ে রাজনৈতিক টানাপোড়েন তুঙ্গে। রাজ্য় সরকারের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক অধিকার ধ্বংসের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে রাজ্য়পালের হস্তক্ষেপ চাইল কংগ্রেস (Congress)। রবিবার এই মর্মে রাজ্যপালকে চিঠি দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী। উল্লেখ্য়, ঝালদা পুরসভার পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যপালকে লেখা এটা তাঁর দ্বিতীয় চিঠি।
পুরভোটের পর থেকে পুরুলিয়াল ঝালদা পুরসভার রাজনৈতিক সমীকরণ বেশ জটিল। ফলাফল ত্রিশঙ্কু হয়। বোর্ড গঠনের আগেই খুন হন কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু। খুনের পিছনে রাজনৈতিক কারণ ছিল কি না, তা এখনও তদন্তসাপেক্ষ। এরপর রাজনীতির নদী দিয়ে বিস্তর জল বয়ে গিয়েছে। রাজনীতির মারপ্যাঁচে আপাতত পুরসভার দুজন চেয়ারম্যান। পুরনিয়ম মেনে একজনকে বসিয়েছে রাজ্য়ের পুর ও নগরোন্নয়ন বিভাগ। আরেকজনকে নির্বাচিত করেছেন বিরোধীদলের কাউন্সিলররা। সংবিধান মেনে ক্ষমতা পাবেন কে, কার হাতে থাকবে ক্ষমতা, তা নিয়ে ধন্দ তুঙ্গে।
[আরও পড়ুন: ইতিহাসকে বদলে দেওয়া হচ্ছে, লাগছে গেরুয়া ছোঁয়া! ‘সঠিক তথ্য’ তুলে ধরতে নয়া উদ্যোগ বামেদের]
এই রাজনৈতিক টানাপোড়েনের মাঝেই রাজ্যপালকে চিঠি দিলেন অধীর চৌধুরী। তাঁর অভিযোগ, সমস্ত পুরবিধি-আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নির্বাচিত পুরপ্রধানের বদলে ঝালদা পুরসভায় প্রশাসক নিয়োগ করা হয়েছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির আরও দাবি, সরকারি প্রতিষ্ঠানই গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রতিনিধির ক্ষমতা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। এমন পরিস্থিতিতে রাজ্য়পালের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাঁর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন তিনি। তবে এই ইস্য়ুতে এটাই অধীরের প্রথম চিঠি নয়। সংশ্লিষ্ট পুরসভায় প্রশাসক বসানো হতে পারে এই আশঙ্কায় ২৩ নভেম্বর রাজ্যপালকে প্রথম চিঠি দিয়েছিলেন অধীর।
উল্লেখ্য, বিরোধী কাউন্সিলররা পুরপ্রধান নির্বাচন করলেও তাঁকে মানতে রাজি নয় সরকার। সূত্রের খবর, পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম শনিবারও বলেছেন যাকে চেয়ার পারসন হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে তিনিই পুরপ্রধান নির্বাচনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন। অর্থাৎ কংগ্রেসের সভাকে সরকার বৈধতা দিচ্ছে না রাজ্য সরকার। এ প্রসঙ্গে পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা পুরুলিয়া জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, “ঝালদা পুরসভায় জটিলতা তৈরি হয়েছিল উপ-পুরপ্রধান ইস্তফা দেওয়ায়। তাই পুরপ্রধান নির্বাচন সম্পন্ন করার জন্য রাজ্য চেয়ারম্যান নিয়োগ করেছে। যা করা হয়েছে তা একেবারে পুরবিধি মেনে।” এই পরিস্থিতিতে এবার রাজ্য়পালকে চিঠি দিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি।