সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইংরেজ আমলে তৈরি দেশের প্রাচীনতম ভবন বা সেতুগুলিতে উঠে নিশ্চিন্ত বোধ করেন, অথচ ‘আত্মনির্ভর ভারতে’র ব্রিজ উঠে আতঙ্কে পা কাঁপে, অনেকেরই এমনটা বক্তব্য। গুজরাটের (Gujarat) মোরবি জেলার মচ্ছু নদীতে কেবল ব্রিজ (Cable Bridge) ভেঙে পড়ার ঘটনায় ফের এই প্রসঙ্গই উঠছে। সরকারি অব্যবস্থা ও দুর্নীতিই কি দায়ী মচ্ছু নদীতে সেতু ভেঙে পড়ার ঘটনায়? ৩২টি তাজা প্রাণ চলে গেলো কার দোষে?
ইতিমধ্যে ব্রিজ ভেঙে পড়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। তাঁর বাড়তি উদ্বেগের কারণ রয়েছে। এক তো নিজের রাজ্যের দুর্ঘটনা, তাও আবার তাঁর সফর চলাকালীন। সেতু বিপর্যয় মোদির ‘মসিহা’ ইমেজে প্রভাব ফেলবে, আশঙ্কা রাজনৈতিক শিবিরের। যা আগামী নির্বাচনে গেরুয়া দলের অস্বস্তি বাড়াতে পারে। কারণ ভয়ংকর দুর্ঘটনার ছবি ও ভিডিও সংবাদমাধ্যম মারফত ছড়িয়ে পড়েছে গুজরাট রাজ্যে ও গোটা দেশে। ভেঙে পড়া ঝুলন্ত ব্রিজে মানুষের বাঁচার আকুতি দেখে ব্রিজ সংস্কারে দুর্নীতির প্রসঙ্গ উঠছে। কারা করল দুর্নীতি?
[আরও পড়ুন: গুজরাটে ভয়ংকর দুর্ঘটনা, মচ্ছু নদীতে ভেঙে পড়ল কেবল ব্রিজ, মৃত কমপক্ষে ৩২]
এখন এই নিয়ে চাপানউতর শুরু হবে। তবে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। কারণ কয়েক কোটি টাকা খরচ করে প্রাচীন কেবল ব্রিজটিকে সংস্কার করা হয়েছিল সদ্য। তারপর দিন চারেক আগে নতুন করে জনতার জন্য খুলে দেওয়া হয়। ক্ষমতায় থাকা রাজনৈতিক দল ব্রিজ সংস্কারের কৃতিত্ব দাবি করেছে নিশ্চয়ই। তারপরেই দুঃস্বপ্নের বিপর্যয়! ইঞ্জিনিয়ার না হয়েও বলে দেওয়া যায় সংস্কারে গলদ ছিল। নচেত এভাবে ভেঙে পড়ার কথা না। বিপুল জনতা সেতুটিতে উঠেছিল ঠিকই, সেক্ষেত্রেও প্রশ্ন, তাঁদের আটকালো না কেন পুলিশ প্রশাসন? সব মিলিয়ে গাফিলতির অভিযোগ এড়ানো কঠিন, সরকার পক্ষকে উত্তর দিতে হবে।
[আরও পড়ুন: উৎসব শেষে সুপ্রিম কোর্টে CAA সংক্রান্ত মামলা, দুশোর বেশি আবেদনের শুনানি সোমবার]
পুরনো নিয়ম হল এদেশে চোর পালানোর পর বুদ্ধি বাড়ে। বড় দুর্ঘটনার পর বিরাট উদ্ধারকাজে নামে প্রশাসন। এবারও তাই হয়েছে। পুলিশ ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী তাঁদের কর্তব্য পালন করছেন। মৃতদের পরিবার ও আহতদের জন্য আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করেছে রাজ্য ও কেন্দ্রের সরকার। লক্ষ লক্ষ টাকা সাহায্য দেওয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী মোদি দ্রুত উদ্ধারকাজের নির্দেশ দিয়েছেন। সব কাজ ফেলে ঘটনাস্থলে আসছেন মোদির রাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী। দুর্ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্রভাই প্যাটেল মোদির সফরসঙ্গী থাকছেন না। যদিও এসবেও ‘মাছ’ ঢাকা কঠিন হতে পারে। প্রশ্ন উঠবেই, সেতু সংস্কারের কোটি টাকা সেতু সংস্কারেই খরচ হয়েছে তো?