সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেখতে দেখতে পেরিয়ে গেল ১০০ দিন। প্রায় দু’দশকের খোলা হাওয়ার পর আফগানিস্তানে (Afghanistan) ক্ষমতায় ফিরেছে তালিবান (Taliban)। গত আগস্টে জেহাদিদের হাতে দেশের দখল চলে যাওয়ার পর থেকেই বিধ্বস্ত দেশটির অর্থনীতি। চরম রাজনৈতিক ডামাডোলে বিপর্যয় নেমে এসেছে সাধারণ মানুষের জীবনে। দেখা দিয়েছে প্রবল খাদ্য সংকট।
তালিবান কাবুল দখলের পরে জানিয়েছিল এটা তালিবান ২.০। এবার নতুন এক যুগের সূচনা হতে চলেছে আফগানভূমে। যদিও প্রথম থেকেই তাদের দেখানো স্বপ্নে কোনও ভাবেই প্রভাবিত হয়নি বহির্বিশ্ব। খুব একটা আশা ছিল না আফগানদেরও। এবং তাদের প্রত্যাশামতোই যত সময় গিয়েছে, ততই কোণঠাসা হয়েছে সাধারণ মানুষ। অসহায় নাগরিকরা নিজেদের বিপন্নতা মানতে পারলেও সন্তানদের নিরন্ন অবস্থা মানতে পারছেন না তাঁরা। পরিস্থিতি এমনই দাঁড়িয়েছে, প্যাকেটের ময়দা শুধু শুধুই গলাধঃকরণ করতে হচ্ছে!
[আরও পড়ুন: গুলি করে পাক বিমান নামানো ভুয়ো গল্প, অভিনন্দনের ‘বীর চক্র’ সম্মান নিয়ে কটাক্ষ পাকিস্তানের]
ব্রিটেনের সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিপেন্ডেন্ট’কে নিজেদের বিপন্নতা সম্পর্কে বলতে গিয়ে ৩৫ বছরের জারঘুনা জানাচ্ছেন, ”আমি আর আমার স্বামী খিদে নিয়েই থাকতে পারি। কিন্তু সন্তানরা যখন খিদেয় কাঁদে সেটা মেনে নেওয়া কঠিন। আমরা সন্ধেবেলায় রাতের খাবার খেয়ে নিই। কখনও কখনও এমনও হয় কিছুই না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়তে হয়। তারপর সকালে উঠে কেবল চা খাই।” কোনওমতে রুটি, ভাতের সামান্য জোগাড় হলেও মাংস, ফলের প্রাচুর্য এখন কল্পনার বস্তু। পরিস্থিতি এমন, ময়দা থাকলেও তেল কেনার পয়সা না থাকায় শুধু ময়দা খেয়েও পেট ভরাতে হচ্ছে কোনও কোনও দিন। এমনই সঙ্গীন অবস্থা সাধারণ আফগান নাগরিকদের।
উল্লেখ্য, তালিবানের (Taliban) দখলে চলে যাওয়া আফগানিস্তানে দ্রুত ফুরিয়ে যেতে বসেছে খাদ্য ও অন্যান্য জীবনদায়ী রসদ। বিধ্বস্ত সেদেশের অর্থনীতি। এহেন পরিস্থিতিতে যুদ্ধজর্জর দেশটিতে মানবিক বিপর্যয় এড়াতে গত অক্টোবর মাসে ১২০ কোটি ইউরো আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। চিন ও তুরস্কের মতো কয়েকটি দেশ ইতিমধ্যেই সেখানে ত্রাণ পাঠানো শুরু করেছে। সাহায্য় করছে ভারতও। কিন্তু তালিবান শাসনে দেশের আকাশে যে ঘন কালো মেঘ ঘনিয়েছে তা যে সহজে যাওয়ার নয়, তা বুঝতে পারছেন আফগান নাগরিকরা।