সুব্রত বিশ্বাস: পর পর দু’দিন রাতভর লাইন দিয়েও উত্তরবঙ্গগামী কোনও ট্রেনে টিকিট পেলেন না গৌরীবাড়ির তন্ময় সাহা। চার মাস আগে এত চাহিদা হবে জেনেই তিনি মঙ্গলবার রাতভর কয়লাঘাটে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। কাউন্টার খোলার পরই ৩ অক্টোবরের এনজেপির সংরক্ষিত টিকিট হাওয়া। ওয়েটিংয়ে লম্বা লাইন দেখে তিনি চলে যান। বুধবার আগে এসেও দীর্ঘ লাইন দেখে তিনি হতাশ হন। কাউন্টার খোলা মাত্র একই পরিস্থিতি। সংরক্ষিত টিকিট উধাও এদিনও। কারণ, ৪ অক্টোবর মহাষষ্ঠী। পঞ্চমীর টিকিট বুকিং শুরু হয়েছে বুধবার থেকে। পুজোর বুকিং শুরু হতেই উত্তরবঙ্গগামী সব ট্রেনের টিকিটেই ওয়েটিং-এর দীর্ঘ লাইনই প্রমাণ দিল এবার বাঙালির পুজোর দৌড় দার্জিলিং।
[আরও পড়ুন: আইস ক্যাফেতে সময় কাটাতে চান? ঘুরে আসুন ভারতের এই জায়গায়]
শুধু পাহাড়ই নয়, বাঙালির পছন্দ সমুদ্রও। তবে এবার সেই আশা থেকে পুরোপুরি মুখ ঘুরিয়েছে বাঙালি পর্যটকরা। সম্প্রতি ‘ফণী’-র দাপটে বিধ্বস্ত চেহারা নিয়েছে পুরী। রথের আগে পরিকাঠামো কিছুটা বদলানোর চেষ্টা করা হলেও প্রায় ৬০ শতাংশ ধ্বংসের রূপরেখা থাকবে বলে মনে করেছেন পুরীবাসী রবীন্দ্রনাথ মহাপাত্র। তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত স্টেশন মেরামত হয়ে গিয়েছে। পুরী এক্সপ্রেস এলএইচবি কোচের হয়েছে। তবুও পর্যটকরা সেদিকে মাড়াচ্ছেন না। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের কমার্শিয়াল বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, পুজোর বুকিং শুরু হলেও পুরীর সব ট্রেনই ফাঁকা। প্রতিবছর যেখানে তিল ধারণের জায়গা থাকে না ট্রেনে, সেখানে এই দশায় স্পষ্ট বাঙালি পুরীর দিক থেকে মুখ ঘুরিয়েছে। মহাপাত্রবাবুর কথায়, একমাত্র দেবদর্শন বা ধ্বংসের পরবর্তী দুর্দশা যাঁরা দেখতে আগ্রহী তেমন মানুষ ছাড়া আর কেউ সেদিকে পা দিতে আগ্রহী হবেন না। কারণ, এখনও বহু জায়গায় বিদ্যুৎ নেই, পানীয় জলের অভাব। রাস্তা-ঘাটে গাছ পড়ে রয়েছে।
পুরী হাতছাড়া। পাহাড় তো হাতছানি দেবেই। দার্জিলিং তো অনেক হল, এবার মুখ বদলাতে অনেকেই পুজোয় শিমলায় যাচ্ছেন অনেকেই। কলকাতা থেকে একমাত্র সরাসরি ট্রেন কালকা মেলে পঞ্চমীতেই স্লিপারের ওয়েটিং ৩৯, থ্রি-এসি আরও দীর্ঘ ওয়েটিং ৬০। ষষ্ঠীর দিন স্লিপারের তালিকা আরও দীর্ঘায়িত। ওয়েটিং ১১৬, থ্রি-এসিতে ওয়েটিং ১২১-এ গিয়ে ঠেকেছে। হরিদ্বারও কম যাচ্ছে না। পঞ্চমীতে কুম্ভ এক্সপ্রেসের দীর্ঘ ওয়েটিং লিস্ট। স্লিপারে ২৩ ওয়েটিং, থ্রি-এসি ৭৫ ওয়েটিং। ষষ্ঠীর দিনে আরও বেশি স্লিপারে ২০৩ ওয়েটিং, থ্রি-এসিতে ১৪৭ ওয়েটিং। দক্ষিণ ভারতের দিকের ট্রেনগুলির মিশ্র পরিস্থিতি। পঞ্চমীর দিনে করমণ্ডল এক্সপ্রেসে জায়গা থাকলেও ষষ্ঠীতে ওয়েটিং লিস্ট বেশ দীর্ঘ। পূর্ব রেলের ট্রান্সপোর্টেশন বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে অতিরিক্ত চাহিদা থাকলে সেই দিকে পুজো স্পেশাল চালানো হবে। তবে বহু সাধারণ মানুষই এই ট্রেনগুলির প্রতি খুব আগ্রহ দেখান না।
[আরও পড়ুন: রেলের বিশেষ প্যাকেজ, কম খরচেই ঘুরে আসুন নৈনিতাল]
The post ফণী বিধ্বস্ত পুরীতে অনীহা, পুজোয় আম বাঙালির গন্তব্য শিমলা-হরিদ্বার-উত্তরবঙ্গ appeared first on Sangbad Pratidin.