বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: সিপিএমের পরবর্তী সাধারণ সম্পাদক কে? কে সামলাবেন সীতারাম ইয়েচুরির ছেড়ে যাওয়া দায়িত্ব। ইয়েচুরি প্রয়াত হতেই জোর চর্চা শুরু হয়েছে সিপিএমের অন্দরে ও বাইরে।
দিল্লির কেন্দ্রীয় কার্যালয় একেজি ভবনের দেওয়ালে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে একজনের নাম। প্রকাশ করাট পত্নী বৃন্দা কারাট। তবে আরও একজনের নামও পরবর্তী সাধারণ সম্পাদক হওয়ার দৌড়ে রয়েছে। তিনি হলেন কেরলের প্রাক্তন মন্ত্রী ও রাজ্যসভার প্রাক্তন সদস্য এম এ বেবি। তবে বেবির ক্ষেত্রে বাধা তার পরিচিতি। সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে তার পরিচিতি না থাকায় এগিয়ে রাখা হচ্ছে বৃন্দা কারাটকেই। চলতি মাসের ২৭ থেকে ২৯ রয়েছে পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক। সেখানেই ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বেছে নেওয়া হবে বলে সূত্রের খবর।
ইয়েচুরি মারা যাওয়ার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই পরবর্তী সাধারণ সম্পাদক কে হবেন তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। আগামী বছর এপ্রিল-মে মাসে সিপিএমের পার্টি কংগ্রেস। সেখানেই পরবর্তী সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার কথা। পার্টির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী একজন তিনবারের বেশি অর্থাৎ সর্বাধিক নয় বছর সাধারণ সম্পাদক থাকতে পারেন। আগামী বছর ইয়েচুরির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু একবছর আগেই ইয়েচুরির মৃত্যু হওয়ায় আপাতত ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বেছে নেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। তবে বিষয়টি নিয়ে এখনও দলের অন্দরে কোন আলোচনা শুরু হয়নি বলে জানিয়েছেন পলিটব্যুরোর সদস্য নীলোৎপল বসু। তিনি জানান, পার্টিতে যে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় দলগতভাবে। সীতারামের অনুপস্থিতিতে যতদিন না নতুন সাধারণ সম্পাদক কেউ হচ্ছেন, ততদিন দলগতভাবেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
পরবর্তী সাধারণ সম্পাদক কে হবেন? এক্ষেত্রে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছেন বৃন্দা কারাট। কারণ অনেক ক্ষেত্রেই সীতারামের সঙ্গে বৃন্দার কাজের ধরনের মিল রয়েছে। ইয়েচুরির রাজনৈতিক গুরু ছিলেন হরকিষেণ সিং সুরজিৎ। জোট রাজনীতিতে কিভাবে সকলকে নিয়ে চলতে হয় তার কাছ থেকেই পাঠ নিয়েছিলেন ইয়েচুরি। পার্টি ও জোট শরিকদের মধ্যে সমন্বয় রাখার কাজটা করতেন তিনি। এই মুহূর্তে তার শূন্যতা পূরণ করার মত পার্টিতে একজনই আছেন। তিনি বৃন্দা কারাট। প্রকাশপত্নীর সঙ্গে জোটের শরিক নেতৃত্বের সম্পর্ক ভালো। এছাড়া সর্বভারতীয় রাজনীতিতে তিনি পরিচিত মুখ। অন্যদিকে, কেরলের নেতা এম এ বেবির নাম সামনে এলেও সর্বভারতীয় রাজনীতিতে তিনি বিশেষ পরিচিত নন। সেই সঙ্গে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন বেবিকে কতখানি মেনে নেবেন তা নিয়ে পার্টির অন্দরে সংশয় রয়েছে। কারণ একটা সময় তিনি বিজয়নের বিরোধী শিবিরের লোক বলে পরিচিত ছিলেন।