গৌতম ব্রহ্ম ও ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: কেন্দ্রের ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্পের (Agnipath Protest) বিরোধিতায় দেশজুড়ে বিক্ষোভের আগুন। বাংলাও তার বাইরে নয়। এখানেও রেল, রাস্তা অবরোধ করে কেন্দ্রীয় নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে গর্জে উঠেছেন মানুষজন। বিশেষত যাঁরা দেশসেবার জন্য সেনাবাহিনীতে চাকরি করতে আগ্রহী, তাঁরা বেশি সুর চড়িয়েছেন। সোমবার তার আঁচ এসে পড়ল পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায়। তাতে উত্তাল হয়ে উঠল অধিবেশন।
সোমবার বিধানসভায় দাঁড়িয়ে অগ্নিপথের বিরোধিতায় কার্যত গর্জে উঠলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। তাঁর মন্তব্য, ”চার বছর পর চাকরি চলে গেলে সবারই চাকরি যাবে। তখন বেকারদের বিজেপি (BJP) বিধায়কদের বাড়িতে দিয়ে আসব, আপনারা চাকরি দেবেন।” এই মন্তব্য শুনেই প্রবল হইহট্টগোল শুরু করেন বিজেপি বিধায়করা। মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণ চলাকালীনই তাঁরা সকলে ওয়াকআউট করে বেরিয়ে যান। বাইরের লবিতে পোস্টার হাতে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন।
[আরও পড়ুন: অগ্নিপথের বিরোধিতায় কংগ্রেসের প্রতিবাদে শামিল রাহুল, ধরনামঞ্চ থেকেই গেলেন ইডি অফিসে]
সোমবার রাজ্য বিধানসভার অধিবেশনে যোগ দিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)-সহ ৭ বিধায়ক। সদ্যই তাঁদের উপর সাসপেনশন প্রত্যাহার করা হয়েছে। আর তারপর এদিনই প্রথম অধিবেশনে আসেন শুভেন্দু অধিকারী, মিহির গোস্বামীরা। অধিবেশনের শুরুতে বক্তব্য রাখতে ওঠেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি কেন্দ্রের অগ্নিবীর প্রকল্পের নিন্দায় সরব হন। বলেন, ”এই প্রকল্প তো আর্মি ডিপার্টমেন্ট থেকে ঘোষণা হয়নি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক করেছে। অগ্নিবীর তৈরির নামে আসলে বিজেপির ক্যাডার তৈরি করা হবে। চার বছর পর চাকরি চলে গেলে তোমাদের বাড়ির লোকেরও চাকরি চলে যাবে। কিসের অগ্নিপথ? আমি কারও চাকরি খেতে দেব না।”
মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) আরও বলেন, ”মুখরক্ষার জন্য সেনাকে সামনে আনা হয়েছে। দেশে কিছু বিজেপির গুন্ডা তৈরি করার জন্যে চার বছরের জন্যে বিজেপি ললিপপ দেখাচ্ছে। এটা ডাকাতি ছাড়া আর কিছু না। আমরা ক্ষমতায় আসার পর কারও চাকরি খাইনি। ১ লাখ চাকরি দিয়েছি। এর মধ্যে ১০০ টা ভুল হতে পারে। কিন্তু সংশোধনের সুযোগ দিতে হবে। না পারলে জেলে পোড়া হোক।” এরপর ইঙ্গিতে শুভেন্দুকে বিঁধে বলেন, “আমরা জানি মেদিনীপুরে চাকরি নিয়ে কী হয়েছে। ছেলেগুলোর চাকরি চলে গেল, আপনি যাদের চাকরি দিয়েছেন তাঁদের কী হবে? এটা ত্রিপুরা নয়। মেদিনীপুর, মুর্শিদাবাদ, উত্তর দিনাজপুর, পুরুলিয়ার যাদের চাকরি দিয়েছেন তাদের কী হবে? পুরুলিয়ার চাকরি মেদিনীপুরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আমরা সব জানি। ‘দাদামণি’ জবাব দেবেন? সরকারে থেকেও করে খাবেন! বিজেপিতেও করে খাবেন?”।
[আরও পড়ুন: জল থইথই রাস্তায় স্কুটার নিয়ে সটান নর্দমায় পড়ে গেলেন সস্ত্রীক পুলিশকর্মী! তারপর…]
তাঁর এই মন্তব্য়ের পর নিন্দায় সরব হন বিজেপি বিধায়করা। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ”মুখ্যমন্ত্রী সেনাবাহিনীর নিন্দা করছেন, তা মেনে নেওয়া যায় না।” তাঁর নেতৃত্বে এরপর বিজেপি বিধায়করা ওয়াকআউট করেন, বিক্ষোভ দেখান।