সুপর্ণা মজুমদার: মেটাসিনেমা (Metacinema)। বিশদে জানতে গুগলের সাহায্য নিতেই পারেন যদি না খুব আলস্যি লাগে। নইলে নেটফ্লিক্সে (Netflix) অনিল কাপুর, অনুরাগ কশ্যপ অভিনীত ‘একে ভার্সাস একে’ (AK Vs AK) ছবিটি দেখে নিতে পারেন। যেখানে বাস্তব ও পরাবাস্তব মিলে মিশে একাকার হয়ে যায়। বাস্তবই হয়ে ওঠে কল্পনা আবার কল্পনা হয়ে যায় বাস্তব। কিছু সিনেমা এমন থাকে যার গুণাগুণ বিচার করতে না যাওয়া বৃথা। কেবল গল্পের তোড়ে ভেসে যেতে হয়। সেই চেষ্টাই করেছেন একে ওরফে অনিল কাপুর (Anil Kapoor) এবং একে ওরফে অনুরাগ কশ্যপ (Anurag Kashyap)। এক রাতের এই কাহিনি সাজিয়েছেন পরিচালক বিক্রমাদিত্য মোটওয়ানে (Vikramaditya Motwane)।
কিলার কম্বিনেশন। সিনেমার সংজ্ঞা পালটানোর ভরপুর চেষ্টা। অনেকাংশে সফল। কারণ গতের বাইরে বেরিয়ে এভাবে বাস্তব-পরাবাস্তব মেশানোর চেষ্টা ভারতবর্ষে সচরাচর দেখা যায় না। ছবি দেখতে দেখতে চার্লি কফম্যানের (Charlie Kaufman) লেখা ‘অ্যাডাপ্টেশন’ ছবির কথা মনে পড়ে গেল। ২০০২ সালে মুক্তি পাওয়া সিনেমাটি পরিচালনা করেছিলেন স্পাইক জোনস। চার্লি ও তাঁর যমজ ভাইয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন হলিউড তারকা নিকোলাস কেজ। ছিলেন অস্কারজয়ী অভিনেত্রী মেরিল স্ট্রিপ। তবে ছবিতে অভিনয়ের জন্য সেরা সহ-অভিনেতার অস্কার পেয়েছিলেন ক্রিস কুপার। সেই ছবিতেও নিজের বাস্তব জীবনের কাহিনি বাস্তবিক অঙ্গিকে তুলে ধরেছিলেন ক্রিস। স্পাইক পরিচালক হলেও নিজেই নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন পুরো কাহিনি।
[আরও পড়ুন: সৃজিতের মগজাস্ত্রের অব্যর্থ নিশানায় ‘ফেলুদা ফেরত’, তুরুপের তাস টোটা-অনির্বাণ]
সেই ধারাই অনিল-অনুরাগ জুটির এই ছবিতে তুলে ধরা হয়েছে। নিজ নিজ চরিত্রে অভিনয় করেছেন দুই তারকা। তর্ক, বিতর্ক, ট্রোলিং, পক্ষপাতিত্ব, পরিচালক ও সহ-পরিচালকের শারীরিক সম্পর্ক, কুৎসা, তারকা-পুত্রের কাজ পাওয়ার চেষ্টা (হর্ষবর্ধন কাপুর), তারকার অন্দর মহল সমস্ত কিছু প্রায় পৌনে দু’ঘণ্টায় সিনেমায় দেখানো হয়েছে। তবে কোথাও কোথাও তা বলিউডের অতিমাত্রিকতা থেকে রেহাই পায়নি (নিজ নিজ কাজের ঢোল পেটানোও)। একেক জায়গায় আবার বড্ড বেশি বিদ্রুপচিত্র (তথ্যচিত্র থেকে সৃষ্ট) হয়ে গিয়েছে। গোটা মুম্বই দর্শন হয়ে গিয়েছে এক রাতে। মেয়ে সোনম কাপুরের (Sonam Kapoor) সঙ্গে আগেই অভিনয় করেছেন অনিল কাপুর। এই সিনেমায় ছেলে হর্ষবর্ধন কাপুরের (Harshvardhan Kapoor) সঙ্গেও স্ক্রিন শেয়ার করলেন। তবে খুব বেশি ভাল-মন্দের বিচার না করেই এ সিনেমা দেখা ভাল। কারণ এই ধরনের সিনেমার স্রোতে ভেসে যেতে হয়। তা থেকে উপলব্ধির চেষ্টা বেশি না করাই উচিত। কেবল অনুভব করার চেষ্টা করবেন।