গোবিন্দ রায়, বসিরহাট: পিডব্লুডির রাস্তায় পণ্যবাহী গাড়ি আটকে পুরসভার নাম করে দেদার নেওয়া হচ্ছে ট্যাক্স (Tax)। পোশাকি নাম, ‘ডেভেলপমেন্ট ফি’। রীতিমতো রসিদ ছাপিয়ে পুরসভার অফিশিয়াল স্ট্যাম্প ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে চলছে এই কারবার। কী এই ডেভেলপমেন্ট ফি? কেনই বা নেওয়া হচ্ছে? এই প্রশ্ন উঠলেই অবশ্য মুখে কুলুপ বসিরহাট পুরসভার (Basirhat Municipality) চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে স্থানীয় বিধায়ক – সকলের। ফলে, প্রশ্নের উত্তর অধরাই স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে।
অথচ রাস্তার উন্নয়নের নামে কর নেওয়া হলেও সেই রাস্তার জীর্ণ দশা কহতব্য নয়। বর্ষার মরশুমে তার অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। এমনটাই অভিযোগ বসিরহাটবাসীর। কীভাবে পিডব্লুডির (PWD) রাস্তা আটকে পুরসভা টোল আদায় করতে পারে, সেই প্রশ্নের পাশাপাশি শহর বসিরহাটজুড়ে বেহাল রাস্তা নিয়েও সরব হয়েছেন মানুষজন। অভিযোগ, টাকি রোড (Taki Road) থেকে যে রাস্তা ইটিন্ডা রোডে মিশেছে, এই দুই রাস্তার সংযোগকারী রাস্তায় বসানো হয়েছে টোল। একইভাবে সমান্তরাল ইটিন্ডা রোড ও টাকি রোডের সংযোগকারী আরও একটি রাস্তা থেকে টোল আদায় করছে পুরসভার নিযুক্ত কর্মীরা। ২০ টাকা থেকে ৫০ টাকা বা তার বেশি, পণ্যবাহী গাড়ি থেকে বেছে বেছে চলছে এই টোল আদায়। একই সঙ্গে অভিযোগ, বসিরহাট পুরসভা জুড়ে রাস্তার বেহাল অবস্থা। কোথাও বড় বড় গর্ত, তো কোথাও রাস্তায় ধস। বৃষ্টি হলে রাস্তা না জলাশয়, তা বোঝা দায়। প্রশ্ন উঠছে, টোল আদায়ের পরও কেন রাস্তার এই বেহাল অবস্থা?
[আরও পডুন: ‘কাজ কম, মাইনে বেশি, তাই টাকা দিয়ে শিক্ষকের চাকরি কেনা’, সৌগত রায়ের মন্তব্যে বিতর্ক]
পাশাপাশি, এই পিডব্লুডি’র রাস্তা থেকে পুরসভা টোল আদায় করতে পারে কি না, সেই প্রশ্নও তুলে দিয়েছেন বসিরহাট পুরসভার বাসিন্দাদের একাংশ। এনিয়ে অবশ্য বসিরহাট পুরসভার চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর প্রতিক্রিয়া মেলেনি। টোল আদায়ের বিষয়টি সরাসরি না হলেও কার্যত ঠারেঠোরে স্বীকার করে নিয়েছেন বসিরহাট দক্ষিণের বিধায়ক (MLA) সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়।
[আরও পডুন: গাড়ি চালানো শেখার সময় শিশুকে পিষে দিল যুবক, রণক্ষেত্র ময়নাগুড়ি]
রাস্তার জীর্ণ দশা নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই মার্টিন বার্ন রোডের টেন্ডার হয়ে গিয়েছে। ১৮ কোটি টাকার টেন্ডার হয়েছে। খুব শীঘ্রই কাজ শুরু হবে। টাকি রোডের কাজ টেন্ডার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে।’’ একই সুর শোনা গেল বসিরহাট পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সুবীর সরকারের গলাতেও। সেই সঙ্গে বেহাল রাস্তার কাজ পুজোর আগেই শুরু হবে বলে আশ্বাস তাঁর। রাস্তা সারাইয়ের সিদ্ধান্ত হলেও ‘উন্নয়ন ফি’ বাবদ টাকা কোথায় গিয়ে পৌঁছচ্ছে, তার সদুত্তর দিতে পারছেন না কেউ।