সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গণতন্ত্রের দাবিতে বিক্ষোভে উত্তাল মায়ানমার (Myanmar)। সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ দেখাচ্ছেন হাজার হাজার গণতন্ত্রকামী মানুষ। পালটা, বিক্ষোভ দমনে আরও হিংস্র হয়ে উঠেছে সেনাবাহিনী। গণতন্ত্রের আওয়াজ দমাতে বদ্ধপরিকর জুন্টা। সংবাদমাধ্যমের উপর নেমে আসছে খাঁড়া। এহেন পরিস্থিতিতে এবার এক মার্কিন সাংবাদিককে আটক করার ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে।
[আরও পড়ুন: বিমান ‘হাইজ্যাক’ কাণ্ডে বিপাকে বেলারুশ, নিষেধাজ্ঞার পক্ষে সওয়াল বাইডেনের]
সংবাদ সংস্থা এএফপি সূত্রে খবর, সোমবার ইয়াঙ্গন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয় মার্কিন সাংবাদিক ড্যানি ফেনস্টারকে। পাহাড়ি দেশটির ‘ফ্রন্টিয়ার মায়ানমার’ নামের একটি ইংরেজি দৈনিকের ম্যানেজিং এডিটর পদে কর্মরত ছিলেন তিনি। সংবাদপত্রটির তরফে এই বিষয়ে এক বিবৃতি জারি করে বলা হয়েছে যে, “আমরা জানি না ড্যানিকে কেন আটক করা হয়েছে। আমরা কিছুতেই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না। তাঁর নিরাপত্তা নিয়ে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। ড্যানির দ্রুত মুক্তির আরজি জানাচ্ছি। আপাতত আমাদের প্রধান কাজ হচ্ছে তাঁর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এবং ড্যানিকে সমস্ত ধরনের সাহায্য দেওয়া।” এএফপি-কে ‘ফ্রন্টিয়ার মায়ানমার’-এর সম্পাদক জানিয়েছেন, বিগত এক বছর ধরে সংবাদপত্রটির সঙ্গে জড়িত ছিল ড্যানি। সোমবার ইয়াঙ্গন বিমানবন্দর থেকে আমেরিকায় নিজের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেওয়ার কথা ছিল তাঁর। সেখান থেকে তাঁকে আটক করে কুখ্যাত ইনসেইন জেলে রাখা হয়েছে। বলে রাখা ভাল, সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকেই সংবাদমাধ্যমের উপর রাশ টেনেছে টাটমাদাও বা বার্মিজ সেনা। বর্তমানে দেশটিতে অন্তত ৩৪ জন সংবাদকর্মী কয়েদ রয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারি মাসের ১ তারিখ আচমকা মায়ানমারের শাসনভার নিজের হাতে তুলে নেয় সেনাবাহিনী। গণতান্ত্রিক সরকারকে সরিয়ে বন্দি করা হয় দেশটির কাউন্সিলর আং সাং সু কি ও অন্যান্য জনপ্রতিনিধিদের। তারপর থেকেই গণতন্ত্র ফেরানোর ডাক দিয়ে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে দেশটি। এ পর্যন্ত দেশটিতে সেনার গুলিতে মৃত্যু হয়েছে ৮০০ জনেরও বেশি মানুষের। এর মধ্যে রয়েছে শিশু ও মহিলারাও। এদিকে, মায়ানমারের প্রত্যন্ত এলাকার গেরিলা বাহিনীগুলি সেনার বিরুদ্ধে গোপন প্রতিরোধ শুরু করেছে। ২০ বা তার বেশি সশস্ত্র গেরিলা বাহিনী গর্জে উঠেছে জুন্টার আচরণের বিরুদ্ধে। মায়ানমারের সংসদের নির্বাসিত সদস্যদের নিয়ে তৈরি সেনা-বিরোধী গোষ্ঠীও এই গেরিলা বাহিনীগুলির সাহায্য নিতে প্রস্তুত। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে গেরিলাদের গ্রামে আকাশপথে হামলা চালাতে দেখা গিয়েছে জুন্টাকে।