সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে কিছুতেই থামছে না যুদ্ধ। লাগাতার গোলাবর্ষণে বিধ্বস্ত বিতর্কিত নাগর্নো-কারাবাখ অঞ্চল থেকে নিরাপদ আশ্রয়ের উদ্দেশে নেমেছে আর্মেনীয় শরণার্থীদের ঢল। এহেন সংকট কালেও যুদ্ধের মাঝেই জীবনের জয়গান গেয়ে চলেছে একটি ভারতীয় রেস্তরাঁ।
[আরও পড়ুন: করোনার জেরে চরম দারিদ্রের সম্মুখীন কোটি কোটি মানুষ! ভারতকে নিয়ে উদ্বেগ বিশ্ব ব্যাংকের]
বছর পাঁচেক আগে পাঞ্জাবের পাটিয়ালা থেকে আর্মেনিয়ায় পাড়ি দিয়েছিলেন পারভেজ আলি খান। নতুন জীবনের স্বপ্নে রাজধানী ইয়েরেভানে একটি রেঁস্তরা খোলেন তিনি, নাম দেন ‘Indian Mehak Restaurant and Bar’। স্ত্রী ও দুই মেয়ের সঙ্গে দিব্যি চলছিল তাঁর সংসার। আর্মেনিয়াকে ভালবেসে ফেলেন তিনি। সবকিছু ঠিকই চলছিল। এহেন সময়ে নেমে আসে বিপর্যয়। সেপ্টেম্বর ২৭ তারিখ থেকে বিতর্কিত নাগর্নো-কারাবাখ অঞ্চলের দখল নিয়ে তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়ে যায় আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে। লাগাতার গোলাবর্ষণের মধ্যে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য এপর্যন্ত পতে ৩০ হাজার আর্মেনীয় ওই অঞ্চল ছেড়ে আর্মেনিয়ার রাজধানী ইয়েরেভানে পাড়ি দিয়েছেন। দেশটির এহেন সংকটের সময়ে প্রত্যেক আর্মেনীয় নিজেদের মতো করে এই লড়াইয়ে শামিল হয়েছেন। বাদ যাননি পারভেজ আলি খানও। নিজের রেস্তরাঁ থেকে রান্না করা খবরের প্যাকেট বিলি করে ক্ষুধার্ত শরণার্থীদের জীবনরক্ষায় নিজের অবদান রাখছেন তিনি।
এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে পারভেজ বলেন, “আমি পাঞ্জাবি। ক্ষুধার্তদের সেবা করা আমার রক্তে। রাজধানীতে প্রায় ৩০ হাজার শরণার্থী দেখেছি আমি। প্রাগে আরও একটি হোটেল খোলার জন্য কিছু টাকা আমি জমিয়েছিলাম। তবে করোনা মহামারীর জন্য তা আপাতত সম্ভব নয়। তাই সেই টাকায় আমি শরণার্থীদের সাহায্য করার চেষ্টা করছি।”
উল্লেখ্য, বিগত দিন দশেক ধরে তুমুল লড়াই চলছে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার (Armenia) মধ্যে। বিতর্কিত নাগর্নো-কারাবাখ অঞ্চলের দখল নিয়ে চলা এই লড়াইয়ে ইন্ধন জোগাচ্ছে তুরস্ক। এমনটাই দাবি করেছেন সিরিয়ার (Syria) প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। লড়াইয়ে এখনও পর্যন্ত ২৪৪ বিদ্রোহী আর্মেনীয় সেনার মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন নাগর্নো-কারাবাখের ‘আর্টসাক ডিফেন্স আর্মি’র এক আধিকারিক। গত কয়েকদিনের লড়াইয়ে দু’পক্ষের বেশ কিছু ট্যাঙ্ক, হেলিকপ্টার ও ড্রোন ধ্বংস হয়েছে। দু’পক্ষের কয়েকশো সেনার পাশাপাশি বহু সাধারণ নাগরিক হতাহত হয়েছেন। আর্মেনিয়া হুমকি দিয়েছে, প্রয়োজনে পরমাণু অস্ত্রবাহী দূরপাল্লার রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হবে।