সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইতিহাস গড়ে দ্বিতীয়বার মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আনুষ্ঠানিকভাবে কুরসিতে বসার আগে তিনি ভরসা রেখেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের উপর। একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক পদের জন্য তাঁদের মনোনীত করছেন। এবার ট্রাম্প প্রশাসনে জায়গায় করে নিলেন আর এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত। হোয়াইট হাউসের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই বিষয়ক নীতি নির্ধারণের জন্য সিনিয়র অ্যাডভাইজার হিসাবে শ্রীরাম কৃষ্ণনই প্রথম পছন্দ ট্রাম্পের। সোশাল মিডিয়ায় নিজেই এই বিষয়ে জানিয়েছেন আমেরিকার হবু প্রেসিডেন্ট।
মার্কিন নির্বাচনের ফল ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই ট্রাম্প ২.০ প্রশাসনে কারা জায়গা করে নেবে তা নিয়ে নানা জল্পনা ছিল। যত সময় গড়িয়েছে মার্কিন প্রশাসনে ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের জয়জয়কার দেখা গিয়েছে। এবার এই তালিকায় নাম জুড়ল শ্রীরাম কৃষ্ণনের। আজ ‘ট্রুথ সোশ্যাল’নামে এক এক্স হ্যান্ডেলে বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তিতে পরামর্শদাতা মণ্ডলীর সদস্যদের নাম ঘোষণা করেন ট্রাম্প। সেখানেই দেখা যায় ডেভিড স্যাকসকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি নীতির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদ দিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবেন শ্রীরাম। এআই নিয়ে আমেরিকাকে নেতৃত্ব দেবেন তিনি।
কে এই প্রযুক্তিবিদ? জানা গিয়েছে, শ্রীরাম কৃষ্ণনের জন্ম চেন্নাইয়ে। তামিলনাড়ুর কাঞ্চিপুরমের কাত্তানকুলাথুর এসআরএম ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে তথ্যপ্রযুক্তিতে বিটেক করার পর ২০০৫ সালে ২১ বছর বয়সে আমেরিকায় পা রাখেন তিনি। সেই থেকেই তাঁর প্রযুক্তির জগতে কাজ করা শুরু। এরপর একে একে মাইক্রোসফ্ট,এক্স, ইয়াহু, ফেসবুকের মতো বড় বড় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। ২০২২ সালে এলন মাস্ক টুইটার কিনে নেওয়ার পর নতুন করে সাজান। নাম দেন এক্স। এক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে ছিলেন এই প্রযুক্তিবিদ। এবার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে ট্রাম্পকে উপদেশ দেবেন তিনি।
উল্লেখ্য, বিভিন্ন প্রশাসনিক পদের জন্য ট্রাম্প যে ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের মনোনীত করেছেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম কাশ প্যাটেল। মার্কিন তদন্তকারী সংস্থা FBI-এর শীর্ষে বসেছেন তিনি। এক সময়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড়ে শামিল ছিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিবেক রামস্বামী। কিন্তু মাঝপথে সরে দাঁড়ান। কিন্তু মসনদে ফিরেই তাঁকে ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সির অন্যতম শীর্ষপদে বসিয়েছেন ট্রাম্প। স্বাস্থ্যক্ষেত্রে আমেরিকার সর্বেসর্বা সংস্থা NIH। গোটা দেশ কোন স্বাস্থ্যনীতি গ্রহণ করবে, সেই সিদ্ধান্ত পুরোপুরি থাকে এই NIH-এর হাতে। সেই সংস্থার ডিরেক্টর পদে বসানো হয়েছে বঙ্গসন্তান জয় ভট্টাচার্যকে। দলের একাংশের আপত্তি উড়িয়ে শিখ সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি হরমিত কে ধিলোঁকে বসানো হয়েছে মানবাধিকার সংস্থার শীর্ষপদে। আমেরিকার বিচার দপ্তরের অন্তর্গত সিভিল রাইটস বিভাগের প্রধান তথা অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাটর্নি জেনারেল ফর সিভিল রাইটস হয়েছেন তিনি। বিশ্লেষকদের মতে, মার্কিন প্রশাসনে ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের প্রাধান্য দিয়ে আগামী দিনে দিল্লির সঙ্গে বন্ধুত্ব আরও মজবুত করার বার্তাই দিচ্ছেন তিনি।