সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শাহরুখ খানের ‘পাঠান’ ছবিতে দীপিকার পাড়ুকোনের গেরুয়া বিকিনি পরা নিয়ে উত্তাল গোটা দেশ। একটি পোশাক রাতারাতি জাতীয় ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। আক্রমণ-পালটা আক্রমণে উত্তপ্ত রাজ্য-রাজনীতি। গেরুয়া বিকিনি নিয়ে বিজেপির তীব্র বিরোধিতার মাঝে এবার স্মৃতি ইরানির এক পুরনো ভিডিও পোস্ট করে এই বিতর্ক আরও উসকে দিলেন তৃণমূল নেতা ঋজু দত্ত। যার পালটা দিতে ছাড়ছে না গেরুয়া শিবিরও।
‘বেশরম’ গানে গেরুয়া রঙের পোশাকে কিং খানের সঙ্গে রোম্যান্টিক দৃশ্যে ধরা দিয়েছেন দীপিকা। যা নিয়ে প্রবল আপত্তি তোলেন মধ্যপ্রদেশের বিজেপি নেতা ও মন্ত্রী নরোত্তম মিশ্র। শুধু তাই নয়, সে রাজ্যে ‘পাঠান‘ ছবির মুক্তিও আটকে যেতে পারে বলে হুমকি দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রীর দাবি, দীপিকার গেরুয়া রঙের খোলামেলা পোশাকে আঘাত লেগেছে ভারতীয় সংস্কৃতিতে। তবে শুধু বিজেপি নয়, শাহরুখ-দীপিকার ‘পাঠান’-এর (Pathaan) বিরোধিতায় আসরে নামেন সিপিএম (CPIM) নেতাও। টাকা খরচ করে ছবিটি দেখার চাইতে কোনও ক্ষুধার্তকে খাওয়ানো বেশি ভাল। সম্প্রতি এমনই মন্তব্য করেন অন্ধ্রপ্রদেশের সিপিএম নেতা চিগুরুপতি বাবুরা। এবার এই বিতর্কের আগুনে ঘি ঢালল তৃণমূল নেতা ঋজু দত্তর পোস্ট করা একটি ভিডিও।
[আরও পড়ুন: বিশ্বকাপ ফাইনালের আগে বড় ধাক্কা ফরাসি শিবিরে, ‘ক্যামেল ভাইরাসে’ আক্রান্ত কোচ-ফুটবলাররা!]
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির (Smriti Irani) পুরনো একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন ঋজু দত্ত। যেখানে স্মৃতিকে গেরুয়া রঙের সুইমস্য়ুটে দেখা যাচ্ছে। ১৯৯৮ সালে মিস ইন্ডিয়া প্রতিযোগিতায় এভাবেই ক্যামেরার সামনে এসেছিলেন স্মৃতি। কেন এই ভিডিওটি পোস্ট করেছেন তিনি? আসলে বৃহস্পতিবার কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনে গায়ক অরিজিৎ সিংকে গানের অনুরোধ জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অরিজিৎ গান ধরেন, ‘রং দে তু মোহে গেরুয়া’। এ নিয়ে বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য তৃণমূলকে কটাক্ষ করে টুইট করেন, অমিতাভ থেকে অরিজিৎ সিং- সকলেই মমতাকে বুঝিয়ে দিচ্ছেন, ভবিষ্যতে বাংলার রং গেরুয়া। এরপরই স্মৃতি ইরানির ওই পুরনো ভিডিওটি পোস্ট করেন ঋজু। আর তাতেই শুরু হয় বিজেপি-তৃণমূল তরজা।
তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। তিনি লেখেন, “এরকম একজনকে তৃণমূলের মুখপাত্র করার জন্য় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লজ্জা হওয়া উচিত। মহিলাদের প্রতি কোনও শ্রদ্ধা নেই। এ ধরনের মানুষদের জন্যই সমাজে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের মাত্রা বাড়ছে।” যার পালটা দিয়ে ঋজু দত্ত আবার মনে করিয়ে দেন, বিলকিস বানোর ধর্ষণকারীদের কথা। কীভাবে ‘সংস্কারি ব্রাহ্মণ’ বলে মুক্তি তাদের দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে এও স্পষ্ট করে দেন, গেরুয়া রং কারও পৈত্রিক সম্পত্তি নয়। দীপিকা গেরুয়া বিকিনি পরলে হইচই করে পদ্মশিবির, অথচ প্রায় একই রকম পোশাক স্মৃতি পরলে তা চোখে পড়ে না। সব মিলিয়ে ক্রমেই গাঢ় হচ্ছে ‘গেরুয়া’ বিতর্ক।