মলয় কুণ্ডু: কেন্দ্রীয় বাজেটে গরিব মানুষের উন্নয়নের কোনও সংস্থান না থাকায় ফের কড়া আক্রমণের পথে হাঁটলেন রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র (Amit Mitra)। গরিব ও মধ্যবিত্তের আর্থিক ও সামাজিক উন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত প্রকল্পগুলির বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়ায় রবিবার টুইট করে আরও একবার মোদি সরকারের বাজটকে তুলোধনা করেন বর্তমানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আর্থিক উপদেষ্টা। তাঁর বক্তব্য, “দেশে গরিব মানুষের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। এক বছরে হয়েছে ১৩৪ মিলিয়ন। এই বাজেট গরিব মানুষ বিরোধী নির্মম বাজেট। আর মধ্যবিত্তের কিছুই পায়নি। এ যেন আকাশে ‘পাই’ বিক্রি করার মতো। এই বাজেট ঘূর্ণায়মান মরীচিকা ছাড়া আর কিছু নয়।”
এদিন টুইটে অমিত লিখেছেন, বাজেটে খাদ্যে ভরতুকি ২৮ শতাংশ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। ১০০ দিনের কাজে ২৫ শতাংশ ভরতুকি কম করা হয়েছে। সামাজিক, কৃষি, স্বাস্থ্য, সব ক্ষেত্রেই জিডিপি’র একটি শতাংশ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় বাজেটে। অমিত বুঝিয়ে দিয়েছেন, প্রতিটি ক্ষেত্রে এভাবে ভরতুকি অর্থ কমিয়ে দেওয়ার সব থেকে বড় প্রভাব পড়বে গরিব ও মধ্যবিত্তের জীবনযাত্রার উপরে।
[আরও পড়ুন: জীবনের প্রথম আয় মোটে ২৫ টাকা, কত টাকার সম্পত্তি রেখে গেলেন লতা মঙ্গেশকর?]
বাজেট পেশ করার পরই পরিসংখ্যান দিয়ে অমিত মিত্র জানিয়েছিলেন, বেকারত্ব ও মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে কিছুই পদক্ষেপ করেনি কেন্দ্রীয় সরকার। তাঁর অভিযোগ ছিল, দেশে বেকারত্ব ৮ শতাংশ। প্রায় ৩ কোটি বেকার। গত কয়েক বছরে বেতনভুক কর্মী কাজ হারিয়েছেন প্রায় ১.২ কোটি। সঙ্গে মূল্যবৃদ্ধিও আকাশছোঁয়া। হোল প্রাইস ইনডেক্স ১৪ শতাংশ, কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স ৬ শতাংশ। এই ‘স্ট্যাগফ্লেশন’ অর্থাৎ বেকারত্ব ও মূল্যবৃদ্ধির জোড়া আক্রমণ একসঙ্গে কোনও দেশে হয়নি। তার উপর দেশের জিডিপি’র বৃদ্ধি নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য দেওয়া হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সহায়তা প্রাপ্ত প্রকল্প, সামাজিক, বয়স্ক, কোভিডে মৃত, চাষের জন্য, মধ্যবিত্তের জন্য কোনও প্রকল্প নেই। কর ছাড়ও দেওয়া হয়নি। অর্থাৎ, সব দিক থেকেই বাজেট দেশের দরিদ্র ও মধ্যবিত্তের জন্য কোনও সুরাহা নিয়ে আসেনি। এই বাজেট তাই, “ধাপ্পাবাজির বাজেট। সাধারণ মানুষের প্রতি কোনও নজর দেওয়া হয়নি। বেকারত্ব ও মূল্যবৃদ্ধি থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর কোনও ইঙ্গিতই এবারের বাজেটে নেই।”
এদিন ফের টুইট করে সেই কথাই আরও একবার বলেছেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, মানুষের হাতে টাকা দিয়ে বাজারে চাহিদা সৃষ্টির পথে হাঁটেনি কেন্দ্রীয় সরকার। যেখানে রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিভিন্ন মানবিক প্রকল্পে মানুষের হাতে অর্থের জোগান নিশ্চিত করেছে। ফলে রাজ্যের অর্থনৈতিক বৃদ্ধি যথেষ্ট সুদৃঢ় হয়েছে। একইসঙ্গে সামাজিক সুরক্ষার ক্ষেত্রেও রাজ্যের মানুষ সাহায্য পেয়েছেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার এসব কোনও কিছুই না করার ফলে দেশের গরিব ও মধ্যবিত্ত শ্রেণি আরও সমস্যার মুখে পড়ছেন।