নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর (Amit Shah) ‘হিন্দি আগ্রাসনের’ বিরুদ্ধে এবার সরব দলেরই দক্ষিণি নেতারা। তামিলনাডুর (Tamil Nadu) বিজেপি প্রধান কে আন্নামালাই প্রকাশ্যেই শাহর বিরুদ্ধে হিন্দি ‘চাপিয়ে দেওয়ার’ চেষ্টার অভিযোগ তুলে বিরোধিতা করেছেন। স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তামিলনাডুতে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হলে তিনি মেনে নেবেন। বুধবার আন্নামালাই বলেন, “তামিলনাডু বিজেপি রাজ্যে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার অনুমতি দেবে না। বরং তামিল যদি দেশে একটি সংযোগস্থাপনকারী ভাষা হিসেবে ব্যবহার করা হয়, তা হলেই দল গর্বিত হবে।” তিনি আরও বলেন, “আমরা ভারতীয় এটা প্রমাণ করার জন্যে হিন্দি শেখার কোনও প্রয়োজন নেই। কর্মসংস্থান বা জীবিকার সমস্যায় কেউ হিন্দি বা যে কোনও ভাষা শিখতে পারেন। এমনকি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও আশাপ্রকাশ করেন যে প্রত্যেকে তাদের আঞ্চলিক ভাষা শিখবে।”
দলের অন্দরে থেকে শাহর হিন্দি (Hindi) চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টার বিরোধিতা নিঃসন্দেহে বড় ঘটনা বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। উল্লেখ্য, দিনকয়েক আগেই শাহ দেশে ইংরেজির বিকল্প হিসেবে হিন্দিকে গ্রহণ করার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছিলেন। শাহর হিন্দি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দেশের সমস্ত মহল থেকেই সমালোচনার ঝড় উঠেছিল। দক্ষিণের রাজ্যগুলি শাহর এহেন হিন্দি আগ্রাসনের প্রতিবাদে সরবও হয়েছিল। তামিলনাডুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন, কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন থেকে শুরু করে কর্ণাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধারামাইয়ার মতো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ত্ব থেকে শুরু করে সুরকার এ আর রহমানের (A R Rahman) মতো প্রখ্যাত ব্যক্তিরাও শাহর হিন্দি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে সমালোচনায় মুখর হয়েছিলেন।
[আরও পড়ুন: রাস্তায় দাঁড়িয়েই শিশুকে পড়াতে ব্যস্ত কলকাতার ট্রাফিক সার্জেন্ট! ভাইরাল ‘শিক্ষক পুলিশ’]
শাহ দেশের উত্তর-দক্ষিণ বিভাজনের চেষ্টা করছেন বলেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন এ আর রহমান। এবারই প্রথম নয়, অতীতেও শাহ হিন্দিকে চাপিয়ে চেষ্টা করেছিলেন। সেইসময়েই সারা দেশে তো বটেই, দক্ষিণের রাজ্যগুলি থেকেই প্রতিবাদের ঝড় উঠেছিল। সেইসময় চাপে পড়ে বেশ কিছুদিন চুপ থাকলেও শাহর ফের ‘হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার’ চেষ্টা থেকেই কেন্দ্র সরকার তথা বিজেপির (BJP) এ নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা রয়েছে, এমনটাই আভাস মিলেছে। এবারও দক্ষিণের রাজ্য, বিশেষ করে নিজেদের দলের অন্দর থেকেই বিরোধিতার সুর ওঠার পরে সাময়িকভাবে শাহ বা কেন্দ্র চুপ করে থাকলেও পরবর্তীকালে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা ফের হতে পারে, এমন সম্ভাবনার কথা খারিজ করে দেওয়া যায় না।