রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (CAA) নিয়ে রাজ্যের মানুষের মনে বিভ্রান্তি কাটাতে। তাঁদের আস্থা অর্জন করতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর উপরই ভরসা রাখছে বঙ্গ বিজেপি। আগামী পয়লা মার্চ কলকাতায় সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে সভা করবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। রাজ্য বিজেপি চাইছে, বিরোধীদের প্রচারে এই আইন নিয়ে যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে শাহ তাঁর ভাষণের মধ্যে দিয়েই সেই বিভ্রান্তি দূর করে দিন।
মঙ্গলবার এপ্রসঙ্গে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘আমরা চাইছি CAA নিয়ে যে বিরোধিতা হয়েছে। এখানকার মানুষের মনে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন যে বিভ্রান্তি তৈরি করা হয়েছে। সেটা দূর হোক। তিনিই (শাহ) যেহেতু এই আইন পাশ করিয়েছেন। তাই উনি সবার সামনে বলে যান যাতে মানুষের বিশ্বাস জন্মায়।’
[আরও পড়ুন: উদ্বোধনের ১০ দিনের মাথায় দ্বিতীয়বার বিপত্তি ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয়, খুললই না স্ক্রিন ডোর!]
এই আইন নিয়ে বিরোধীদের প্রচারের জেরে মানুষের মনে বিভ্রান্তি দূর করতে অমিত শাহর ভাষণকে রাজ্য বিজেপি অস্ত্র করতে চাইছে। দিলীপ ঘোষের এই বক্তব্য নিয়েই এখনও প্রশ্ন উঠেছে রাজনৈতিক মহলে। এর সমর্থনে রাজ্যজুড়ে টানা এক মাসেরও বেশি সময় ধরে অভিনন্দন যাত্রা, সভা ও বাড়ি বাড়ি প্রচার চালাচ্ছে গেরুয়া শিবির। রাজ্য নেতৃত্বের দাবি, তৃণমূলের প্রচারের জেরে তৈরি হওয়া বিভ্রান্তি দূর করে এই আইনের স্বপক্ষে জনমত গঠনের জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব লাগাতার প্রচার কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
তাহলে প্রশ্ন উঠছে, গত একমাস ধরে প্রচার চালানোর পরও কি মানুষের মনে তৈরি হওয়া বিভ্রান্তি কাটাতে ব্যর্থ বঙ্গ বিজেপি? তাহলে কেন CAA নিয়ে বিভ্রান্তি কাটাতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর উপর ভরসা করতে হচ্ছে। পয়লা মার্চ শহিদ মিনারের জনসভায় এসে এই আইনের সমর্থনে বক্তব্য রাখবেন অমিত শাহ। এই আইন পাশ করার জন্য রাজ্য পার্টি এবং রাজ্যের উদ্বাস্তুদের তরফ থেকে তাঁকে অভিনন্দন জানানো হবে সমাবেশ মঞ্চে। শাহর লক্ষ্য, বাংলায় CAA চালু করা। সেই দাবিকে জোরালো করতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর এই সভা রাজনৈতিকভাবে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। তাই শহিদ মিনার ময়দানে অমিত শাহর সভায় একলক্ষ জমায়েতের টার্গেট নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। পাশাপাশি জানা গিয়েছে, এই সভা দুপুর একটায় শুরু হয়ে তিনটের সময় শেষ হবে।
[আরও পড়ুন: নাম ভাঁড়িয়ে প্রতারণা, ‘সারোগেট মা’ কাশ্মীরা বিবির কীর্তিতে হতবাক তদন্তকারীরা]
দলীয় সূত্রে খবর, এই সমাবেশে অমিত শাহ ছাড়াও উপস্থিত থাকার কথা বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা ও সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক(সংগঠন) বি এল সন্তোষের। কলকাতায় কোনও সমাবেশে দলের এই তিন শীর্ষ নেতা একমঞ্চে সম্ভবত এই প্রথম। কাজেই রেকর্ড জমায়েত ও সুশৃঙ্খলভাবে যাতে সমাবেশ হয় সেদিকেই নজর রাজ্য বিজেপি নেতাদের। কলকাতা ও তার লাগোয়া দলের মোট ১৯টি সাংগঠনিক জেলা থেকেই মূলত কর্মী-সমর্থকরা আসবেন। দক্ষিণবঙ্গ থেকেই মূলত জমায়েত হবে। তবে মেদিনীপুর, কাঁথি, তমলুক, ঘাটাল, মুর্শিদাবাদ এই পাঁচটি সাংগঠনিক জেলাকে বাদ রাখা হয়েছে। হাওড়া স্টেশন, শিয়ালদহ স্টেশন ও রাজ্য পার্টি অফিস, এই তিনটি জায়গা থেকে বড় মিছিল আসবে শহিদ মিনার ময়দানের দিকে। ইতিমধ্যেই সভার প্রস্তুতি নিয়ে মঙ্গলবার রাজ্য বিজেপি দপ্তরে দফায় দফায় স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে বৈঠক করেছেন প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়, তুষারকান্তি ঘোষ ও সৌরভ শিকদার প্রমুখ বিজেপি নেতারা।
The post CAA নিয়ে বিভ্রান্তি কাটাতে অমিত শাহর উপরেই ভরসা বঙ্গ বিজেপির appeared first on Sangbad Pratidin.